চবির ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় থাকছে না শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানের জন্য ‘পোষ্য কোটা’। পাশাপাশি ২০ শতাংশের মতো আসন এবং সব ইউনিটে আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতার জিপিএ কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ৯ নভেম্বর সকাল ১০টায় চবি উপাচার্যের দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আবেদনের যোগ্যতা ও আসন সংখ্যা কমানো, পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন এবং পোষ্য কোটা বাতিলসহ বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে, গত ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত প্রথম সভায় ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য সূচি নির্ধারণ করা হলেও দ্বিতীয় সভায় সেই সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে আবেদন প্রক্রিয়া, চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ ছাড়া আগামী ২ জানুয়ারি বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ ও প্রকৌশল অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটের মাধ্যমে শুরু হবে ভর্তি পরীক্ষা।
৩ জানুয়ারি হবে সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা। ৯ জানুয়ারি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের, আর ১০ জানুয়ারি কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া উপ–ইউনিটগুলোর মধ্যে ‘ডি–১’ এর পরীক্ষা ৫ জানুয়ারি, ‘বি–১’ এর ৭ জানুয়ারি এবং ‘বি–২’ এর পরীক্ষা ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় সব ইউনিটেই জিপিএ কমানো হয়েছে। ‘এ’ ইউনিটে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারিত হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ ৭ দশমিক ৭৫, যেখানে এসএসসিতে ন্যূনতম ৪ এবং এইচএসসিতে ৩ দশমিক ২৫ থাকতে হবে। ‘বি’ ইউনিটে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের মোট জিপিএ লাগবে ৭, আর বিজ্ঞান ও ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ৭ দশমিক ৫০। ‘সি’ ইউনিটে ন্যূনতম জিপিএ ৭ দশমিক ৫০, এবং ‘ডি’ ইউনিটে সব গ্রুপের শিক্ষার্থীদের জন্য ৭ নির্ধারণ করা হয়েছে।
চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার ফল তুলনামূলক খারাপ হওয়ায় এ বছর আবেদনের যোগ্যতা কমানো হয়েছে, যেন বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারে। প্রতিটি বিভাগে সর্বোচ্চ ১০০ আসন থাকলেও ধীরে ধীরে তা ৮০ তে নামিয়ে আনা হবে।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ৯টি কোটা বহাল থাকছে। তবে ‘ওয়ার্ড’ তথা ‘পোষ্য কোটা’ সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হয়েছে। বহাল থাকা কোটার মধ্যে রয়েছে—মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, বিদেশি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত অ-উপজাতি বাঙালি, শারীরিক প্রতিবন্ধী, বিকেএসপির খেলোয়াড়, পেশাদার খেলোয়াড় এবং দলিত জনগোষ্ঠী কোটা।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা ‘আউটকাম বেজড’ শিক্ষাক্রমের দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। বিভিন্ন বিভাগ থেকে আসন সংখ্যা কমানোর ব্যাপারে আমরা সুপারিশ পেয়েছি। বর্তমানের তুলনায় আনুমানিক ২০ শতাংশ আসন কমে যাবে এবার। তাই এবার কতটি আসন হবে, সেটা এখনো হিসাব হয়নি।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য কোটা থাকলেও মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিদের জন্য কোনো কোটা নেই। এছাড়া পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে।








