জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, যিনি পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্টের হত্যাকাণ্ডের প্রথম শিকার, সেই মানুষটির জীবনের শেষ দিনগুলো কেমন ছিল তা তুলে ধরা হচ্ছে ‘ক্যাপ্টেন কামাল’ নামে এক কাহিনীচিত্রে।
‘ফ্রেম ফ্যাক্টরি’র প্রযোজনায় এ সিনেমায় অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করবেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, শহীদুজ্জামান সেলিম, মাজনুন মীজানসহ আরও কয়েকজন।
নির্মাতা শামীম আহমেদ রনি বলেন, “বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভুল সমালোচনা ও ভুল উপস্থাপনার শিকার শেখ কামাল। তাকে নিয়ে আরও আগে থেকে কাজ করা দরকার ছিল। তাহলে স্বাধীনতাবিরোধীদের ভুল উপস্থাপনার জবাব দেওয়া যেত।
“এই কাহিনীচিত্রে আমরা শেখ কামালের শেষ কয়েকটি দিন দেখাব। বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আগমন উপলক্ষে একজন সাংবাদিকের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। সেই কথোপকথনের মধ্য দিয়ে শেখ কামালের চরিত্রের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে।”
রোববার ঘরোয়া আয়োজনে চলচ্চিত্রটির পোস্টার উম্মোচন ও নির্মাতা-শিল্পীদের সঙ্গে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সংসদ সদস্য ফরিদা খনম সাকী, সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুর রহমান বেলায়েত, এফবিসিসিআই পরিচালক মো, ফারুক।
শেখ কামালকে শেষবার দেখার স্মৃতি উঠে আসে আরেফিন সিদ্দিকের কথায়। তিনি বলেন, “শেখ কামাল আর আমি একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। তাকে শেষ দেখেছিলাম ১৯৭৫ সালের ১৪ অগাস্ট।
“১৫ তারিখে বঙ্গবন্ধুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল। ১৪ তারিখে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শেখ কামালকে দেখলাম কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে হাসতে হাসতে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে দিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর পরিদর্শনে আসার আগে সব ঠিকঠাক আছে কি না দেখছিলেন কামাল।”
আরেফিন সিদ্দিকের বলেন, “ওইদিন রাতে শেখ কামাল হলেই থেকে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন আগে বিয়ে করেছেন, তাই বন্ধুরা তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেন। সেদিন হলে থেকে গেলে হয়তো বাংলার ইতিহাস অন্যরকমও হতে পারত।”
এই কাহিনীচিত্রের মাধ্যমে শেখ কামালের জীবনের ‘ইতিবাচক’ দিক তুলে ধরা সম্ভব হবে বর্ণনা করে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “তাকে (শেখ কামাল) নিয়ে অনেক অপপ্রচার হয়েছে। অথচ শেখ কামালের বহু ইতিবাচক দিক ছিল। তার দাবির ফলে চতুর্থশ্রেণির কর্মচারীদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছিল সরকার। ক্রীড়া ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন কামাল।“
নির্মাতা রনির ভাষ্য, “একজন নায়ককে ‘নায়কের’ মর্যাদা দেওয়া উচিত। শেখ কামাল দেশের সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও মানবিক নানা দিক নিয়ে ভাবতেন। তিনিও আমাদের আরেকজন নায়ক ছিলেন। তার মানবিক গুণাবলী দর্শকের সামনে তুলে ধরার প্রচেষ্টা নিয়ে কাজটি করা। আমার বিশ্বাস, সিনেমাটা শেষ হলে দর্শক দাঁড়িয়ে ক্যাপ্টেন কামালকে স্যালুট দেবে।”
নির্মাণ শেষে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভিতে ‘ক্যাপ্টেন কামাল’ প্রচার হবে বলে এর কাহিনীকার সহিদ রহমান জানান।