পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে আন্তর্জাতিক ১২টি আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সভায় গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অন্তত ৩০টি ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার পর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান সংবাদিকদের বলেন, ‘‘সিআইডি প্রাথমিকভাবে ১১টি স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীকে শনাক্ত করেছে। এদের নাম বলেছে আজ; যেমন—বসুন্ধরা, নাসা ও এস আলম গ্রুপের নাম রয়েছে এগুলোর মধ্যে।’’
তিনি বলেন, ‘‘এনডিএ (নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট বা অতি গোপনীয়তার চুক্তি) করে আমরা পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করব। মূল উদ্দেশ্য হলো, যে টাকাটা চলে গেছে, তা ফেরত আনা।’’
চুক্তির নির্দেশনার বিষয়ে ওমর ফারুক বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক ল’ ফার্ম ও অ্যাসেট রিকভারি প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করলে তারা টাকাগুলো বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারবে। কিছু ব্যাংক লিড ব্যাংক হিসেবে কাজ করবে; একাধিক ব্যাংক মিলে কনসোর্টিয়াম গঠন করা হবে এবং বাইরের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা হবে। এরপর দেখা হবে, সেই টাকা কীভাবে দেশে আনা যায়।’’
এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, “এ উদ্যোগে কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংকের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। এটি একটি ‘টোটাল ব্যাংকিং’ কনসেপ্ট, যেখানে বহু ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত করার ভাবনা ছিল।”
বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশরুর আরেফিন বলেন, ‘‘চুক্তি হওয়ার পর আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ ফেরত আনতে প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা দেবে।’’
পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ব্যাংক মানি-লন্ডারিং সংক্রান্ত প্রেক্ষাপটে ওই ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কথা বলেছে। এনডিএ করে এসব প্রতিষ্ঠানকে অর্থ ফেরানোর কাজ করতে বলা হবে।’’
ফেরত আনার খরচ সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এ চুক্তি করলেও ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো ফি বা সার্ভিস চার্জ দিতে পারবে না। অর্থ ফেরত আনতে পারলে তারা একটা কমিশন পাবে সেখান থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাক্সফোর্স এ বিষয়ে সমন্বয় করবে।’’
চারটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নামও জানান মুখপাত্র। এগুলো হলো— দ্য স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি, ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি-কোরাপশন কোঅর্ডিনেশন সেন্টার, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাসেট রিকভারি।