এবার উত্তর কোরিয়ার তৈরি সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে মস্কো ও পিয়ংইয়ং অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
প্রায় দুই বছর ধরে ইউক্রেনের ওপর লাগাতার হামলা চালাতে গিয়ে রাশিয়ার অস্ত্রভাণ্ডারে টান পড়ছে। পরমাণু শক্তিধর পরাশক্তি হওয়া হত্ত্বেও ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র থেকে সামরিক সরঞ্জাম আমদানি করতে হচ্ছে মস্কোকে। প্রথমে ইরান থেকে বোমারু ড্রোন জোগাড় করে ইউক্রেনের ওপর হামলা চালিয়ে এসেছে রাশিয়া। এবার সে দেশ উত্তর কোরিয়ায় তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রও ইউক্রেনের ওপর নিক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ উঠছে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, রাশিয়া সম্প্রতি যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ায় তৈরি কম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকা বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করবে। তার মতে রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র সরবরাহ উদ্বেগজনক ঘটনা। যারা এমন বোঝাপড়া তরান্বিত করেছে, তাদের ওপর মার্কিন প্রশাসন বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।
কিরবি আরও বলেন, ব্যালিস্টিক মিসাইল লঞ্চার ও বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক মিসাইলও উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর তিনি ইউক্রেনে এমন এক মিসাইল নিক্ষেপের উল্লেখ করেছিলেন। রাশিয়া ইরান থেকেও কম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কেনার উদ্যোগ নিচ্ছে।
মস্কো ও পিয়ংইয়ং অবশ্য অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে দুই দেশই সামরিক সহযোগিতা আরও নিবিড় করার অঙ্গীকার করেছে। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন মিসাইল লঞ্চার উৎপাদন বাড়ানোর ডাক দিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সংঘাতের প্রস্তুতি হিসেবে তিনি রণসজ্জা বাড়ানোর কথা বলেছেন।
রাশিয়া সম্প্রতি ইউক্রেনের ওপর আবার বড় আকারে আকাশপথে হামলা শুরু করেছে। সে দেশের একাধিক শহরের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ চলছে। শুধু গত শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনশর বেশি হামলা ঘটেছে বলে ইউক্রেন দাবি করেছে।
উত্তর কোরিয়া থেকে আনা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা আরও জোরদার করার প্রয়োজন স্পষ্ট হয়ে উঠছে বলে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কিরবি মনে করেন। তিনি মার্কিন কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার প্যাকেজ অনুমোদনের ডাক দিয়েছেন। সেটা না করলে ইউক্রেনের অস্ত্র ও গোলাবারুদ দ্রুত ফুরিয়ে যাবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।