দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ২৮৯ চট্টগ্রাম পটিয়া-১২ সংসদীয় আসন থেকে প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পটিয়ার একটি রেস্টুরেন্টে বিএনএম প্রার্থী এম এয়াকুব আলী স্হানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজের প্রার্থিতার বিষয়টি স্পষ্ট করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এম এয়াকুব আলী বলেন, সারাদেশে বিএনএম প্রার্থীদের তালিকা দেখলেই বুঝতে পারবেন যে আমরা কোয়ান্টিটিতে নয়, বরং কোয়ালিটিতে বিশ্বাস করি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে অবশ্যই বিপুল ভোটে আমি জয়ী হয়ে সংসদে অর্থপূর্ণ ও বলিষ্ঠ বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে পারব। আমার মতো আরো চৌকস সংসদ সদস্যকে নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে পারলে শিগগিরই দেশের রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটবে। জনগণ তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং সুশাসন ফিরে পাবে।
তিনি বলেন, বিএনএম কোনো জোটের সঙ্গে নয় বরং নিজস্বভাবেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, আমাকে আমার সততা, ন্যায়নীতি, আদর্শ, মূল্যবোধ, দেশপ্রেমকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিএনএম চেয়ারম্যান পটিয়া থেকে মনোনয়ন দিয়েছেন। সারাদেশে আমার মতো আরো অনেক চৌকস রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলন হয়েছে বিএনএম পার্টিতে। এছাড়াও অনেক সাবেক এমপি, রাজনীতিবিদ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খ্যাতিসম্পন্ন ব্যাক্তিবর্গসহ বহু বরেণ্য ও খ্যাতিমান লোকদের আবির্ভাব হয়েছে এ দলে।
তিনি আরো বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করি সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে। আমি গত ১৮ বছর ধরে পটিয়ার আপামর জনসাধারণের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি। এ পটিয়াকে নিয়ে আমার স্বপ্ন দীর্ঘ দিনের। বিগত দিনে পটিয়ায় যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন তাদের অদূরদর্শিতা ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির কারণে পটিয়ার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে পটিয়ায় ইয়াবা, মাদক, কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু, স্বজনপ্রীতি, পরিবারতন্ত্র প্রভাব বিস্তার করে আসছে। এসমস্ত অন্যায় অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বেরিয়ে আসতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে নোঙ্গর প্রতীকে ভোট দিয়ে পটিয়ায় একটি সুস্থ ধারার অহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত পটিয়া গড়ার লক্ষ্যে জয়যুক্ত করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
এম এয়াকুব আলী বলেন, আমি একজন আপাদমস্তক ব্যাবসায়ী। চট্টগ্রামের অধিকাংশ ব্যবসায়ী এ পটিয়ার। এ পটিয়াকে নিয়ে আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আমি মহান জাতীয় সংসদের একজন সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে পটিয়ার মানুষের ভাগ্য পরির্বতনে কাজ করতে পারি। এ ব্যাপারে আমি আপনাদের মাধ্যমে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। যেহেতু বর্তমান সরকার, নির্বাচন কমিশন সহ সুষ্ঠু ভোটের আশ্বাস দিয়েছেন সেহেতু, আমিও আশাবাদী প্রশাসন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকবে। যাতে সাধারণ ভোটারেরা সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছর ধরে পটিয়ায় যিনি সংসদ সদস্য হিসেবে ছিলেন তিনি তার পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে হালুয়ারুটি ভাগাভাগি করেছেন। পটিয়ার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য তিনি কিছুই করেননি। সামশুল হক চৌধুরী এমপি এখন বলে বেড়াচ্ছেন তিনি নাকি পটিয়ায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করেছেন। তিনি তার পরিবারের উন্নয়ন ছাড়া আর কারো উন্নয়ন করেননি। পটিয়ায় যেসব দৃশ্যমান মেগাপ্রকল্পগুলোর উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে সেগুলো তো সড়ক জনপদসহ বৈদেশিক অর্থায়নে হয়েছে। তিনি পটিয়ার মানুষের সাথে এখনো মিথ্যাচার করছেন।
তিনি বলেন, পটিয়াকে একটি বদ্বীপ আখ্যাদিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ১২শ কোটি টাকার প্রকল্প হাতিয়ে এনে লুটপাট করেছে সামশুল হক চৌধুরী। পটিয়া কোন সমুদ্রবেষ্টিত উপজেলা নয়। পটিয়াকে কেন বদ্বীপ দেখিয়ে পটিয়ার জনগণকে ছোট করে দেখা হয়েছে এ প্রশ্ন করেন তিনি। এ প্রকল্পের আওতায় যেভাবে খাল খনন করার কথা ছিল এবং খনন পূর্ববর্তী খালের উভয় পাড়ের মানুষের জায়গা জমি অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা ছিল সেটা তিনি করেননি। তিনি স্হানীয় মাস্তানদের দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অসহায় মানুষের জায়গা জমির ক্ষতিপূরণ দেননি।
এভাবে গত ১৫ বছরে সামশুল হক চৌধুরী পটিয়ার সন্মানহানী করেছেন সারাদেশের মানুষের কাছে। এখন সময় এসেছে এ পরিবারতন্ত্রের হাত থেকে পটিয়ার মানুষকে রক্ষা করার। আমি বিশ্বাস করি আগামী ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে পটিয়ার মানুষ যোগ্য প্রার্থীকে জিতিয়ে পটিয়ার হারানো গৌরব ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রকৌশলী আবদুর রশিদ, মো. মনসুর আলম, মো. আইয়ুব, আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী, মনসুর আলম সওদাগর, আবদুর রশিদ, নাদেরুজ্জামান, ইকবাল মেম্বার সহ আরো অনেকেই।