বান্দরবানের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কেন্দ্রীয় কমিটির ‘অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক’ চেওসিম বমকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। রোববার (৭ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-১৫ বিশেষ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
বিকেল সাড়ে ৩টায় বান্দরবান জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ।
তিনি বলেন, ‘অভিযান চলমান আছে। নাথান বমের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে চেওসিম বমের। শ্যারনপাড়ার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চেওসিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্যদের অবস্থান ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি আমরা।’
তিনি আরও বলেন, কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক ঘরে আলমারিতে লুকিয়ে ছিলেন। সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাবের বিশেষ দল। এসময় তার কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত চেওসিম বম বান্দরবানের সুয়ালক ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের শ্যারণ পাড়ার মৃত বোয়াল কুম বমের ছেলে।
এদিকে বান্দরবানের থানচি ও রুমায় কয়েক দফা সন্ত্রাসী হামলার পর রোববার সেখানে কম্বিং অপারেশন শুরু করেছে যৌথ বাহিনী। বিষয়টি নিশ্চিত করে দুপুরে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এরই মধ্যে দুটি অস্ত্র ও কয়েকজন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ঠিক কতজনকে আটক করা হয়েছে এবং আটকদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি।
তিনি আরও বলেন, সংগঠনটির সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের শান্তি আলোচনা চলছিল। আলোচনা চলাকালে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কোনো অভিযান পরিচালনা করিনি। তারা দুইবার শান্তি আলোচনায় বসেছে। তৃতীয়বার বসার কথা বলেছে। তাদের ইস্টার সানডেতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুমার গীর্জায় উপহার পাঠানো হয়েছে। আমরা তাদের বিশ্বাস করেছিলাম। তাদের ষড়যন্ত্র আমরা বুঝতে পারিনি।
সেনাপ্রধান জানিয়েছে, বান্দরবানের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিনের সন্ত্রাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশের যৌথ অভিযান চলবে।
এর আগে ২ এপ্রিল রাতে ও পরদিন ৩ এপ্রিল দুপুরে রুমা ও থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় পাহাড়ের সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীরা। এসময় তারা ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে ও যাওয়ার সময় একজন ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে। লুট করে নিয়ে যায় পুলিশ ও আনসারের ১৪টি অস্ত্র ও গুলি। পরে ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ জড়িত বলে নিশ্চিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।