চট্টগ্রাম-৮ আসনের ফুলকপি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরী ভোটের দুই দিন আগে বিপক্ষ প্রার্থী আবদুস ছালামের বিরুদ্ধে টাকা বিলিয়ে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভোটারদের নির্বাচন বিমুখ করার অভিযোগ করেছেন।
এসময় তিনি এই আসনের (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) পোপাদিয়া, সরোয়াতলী ও আমুচিয়া ইউনিয়নের তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যেতে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও করেছেন।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে চারটায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এসময় বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরীর নির্বাচনী সমন্বয়কারী আবু তাহের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আমরা আগামী ৭ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রতীক্ষায় ছিলাম। কিন্তু গত দু’দিন ধরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী একজন প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়া ইউপির জসিম, সরোয়াতলীর বেলাল ও আমুচিয়ার কাজল চেয়ারম্যান তাদের লোকজন দিয়ে এলাকার সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যেতে নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
ভোটারদের বলা হচ্ছে, ভোটকেন্দ্রে গেলে তাদের কাছ থেকে বয়স্ক ও বিধবা ভাতাসহ ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপণ্য কেনার সরকারি সুবিধাভোগী টিসিবির কার্ড কেড়ে নেয়া হবে। আমরা গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে এসব বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগত নিয়ে মহড়া দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরে ও বোয়ালখলীর একটি কমিউনিটি সেন্টার গরু জবাই করে মেজবানি খাওয়ানোর অভিযোগ তুলেন বিজয় কুমার চৌধুরী। সেখানে শতাধিক মানুষকে মেজবানি খাওয়ানো হয়েছে। এতে আচরণবিধির চরম লঙ্গন হচ্ছে। ইউএনওকে অভিযোগ করার পরও প্রশাসনিক কোন পদক্ষেপ নেননি তিনি।
নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে লাগানো ফুলকপি প্রতীকের ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। সমর্থকদের মারধরসহ নানা হুমকি-ধামকিও দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া প্রিজাইডং অফিসার নির্বাচনের সময় আব্দুল মান্নান টিটুও উপর হামলা হয়। তিনি এখনও নগরের জিইসি মোড়ের মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতলে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা হলেও গ্রেপ্তার হয়নি আসামি।
সংবাদ সম্মেলনে বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ বলেন, এই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার কোনও প্রার্থী নেই। তাই আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে যাকে সবচেয়ে যোগ্য মনে করেছি তাকে সমর্থন দিয়েছি। আমাদের বিবেচনায় বিজয় কুমার চৌধুরী সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী। কিন্তু গত দুদিন ধরে তিনটি ইউনিয়নের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ভোটারদের নিয়ে যা ঘটছে তা কাম্য হতে পারে না।
তিনি বলেন, একজন প্রার্থী স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে মতবিনিময় সভার আড়ালে মেজবানি খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে নির্বাচনী আচরণবিধিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করার পরও কোনও ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে বড় অন্তরায়।