চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দল নেতৃবৃন্দ। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত করেন ১৪ দল নেতৃবৃন্দ।
এসময় ১৪ দল নেতৃবৃন্দ বলেন, ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে মহিউদ্দিন চৌধুরী তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। রাজনীতির পাশাপাশি ধীরে ধীরে তিনি জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রামের উপকূলে ব্যাপক প্রাণহানি হয়। দুর্গন্ধে যখন সেখানে কারো যাওয়া দায় ছিল তখন তিনি নিজে সেখানে উপস্থিত হয়ে লাশ খুঁজে খুঁজে গোসল করিয়ে কবর দিতে শুরু করেন। চট্টগ্রামের মুসলিম হলে উপকূলীয় এলাকার রোগীদের জন্য বিকল্প কলেরা হাসপাতাল তৈরী করে সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহ করতে শুরু করেন তিনি। তখন থেকেই মহিউদ্দিন চৌধুরীর মানবিক আরেকটি গুণ প্রকাশিত হতে শুরু করে।
‘এরপর ১৯৯৪ সালে বিপুল ভোটে চট্টগ্রামের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর অন্য আলোয় উদ্ভাসিত হতে থাকেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। একটি পিছিয়ে পড়া শহরকে খাঁদ থেকে কিভাবে টেনে তুলে আনতে হয় তার জ্বলন্ত উদাহরণ ছিলেন তিনি। দিনের পর দিন কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসতে সক্ষম হন তিনি। সরকারের সাহায্য ছাড়াই সিটি কর্পোরেশনকে আর্থিকভাবে সাবলম্বী করতে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করতে থাকেন। রাজস্ব আদায় সিটি কর্পোরেশনের আয়ের প্রধানতম খাত হলেও জনগণের উপর হোল্ডিং ট্যাক্সের বোঝা না চাপিয়ে বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে কর্পোরেশনকে পরিচালনা করতে থাকেন মহিউদ্দিন চৌধুরী।’
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরীর সুদক্ষ দিকনির্দেশনায় পরিচালিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সুনাম দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। মহিউদ্দিন চৌধুরীর নানাবিধ গুণের মধ্যে অন্যতম একটি গুণ ছিলো চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থে কোনদিন পিছপা হন নি। চট্টগ্রামের স্বার্থবিরোধী কিছু হলে প্রথমেই গর্জে উঠতেন তিনি। ১৪ দল নেতৃবৃন্দ মহিউদ্দিন চৌধুরীর কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ এবং মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জসিমুদ্দিন বাবুল, ন্যাপের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য গাজী আলমগীর, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, ন্যাপ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিটুল দাশগুপ্ত, গণআজাদী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মাওলানা নজরুল ইসলাম আশরাফী, সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. খোরশেদ আলম, জাতীয় পার্টি (জেপি) চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলাল মৃধা, সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন হাওলাদার প্রমুখ।