দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে। আমন্ত্রিতদের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাবেন তিনি। ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশি কূটনীতিকসহ জাতিসংঘের এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্র থেকে জানা গেছে, শনিবার ২৮ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত মহাসমাবেশকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে সরকারি তথ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা হবে। ব্রিফিংয়ে মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির তাণ্ডব এবং তা প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পদক্ষেপ তুলে ধরা হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যদের গ্রেফরতারের বিষয়ে বিদেশিদের নানা প্রশ্নের জবাব দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলো অনড় অবস্থানে। এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত করে রেখেছে নির্বাচন কমিশন।
আর অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা অব্যাহতভাবে বলে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলো। জানা গেছে, সংবিধানের অধীন থেকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতায় সরকারের অঙ্গীকার ব্রিফিংয়ে পুনর্ব্যক্ত করা হবে।
সংবিধানবহির্ভূত নিরপেক্ষ বা নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার যে দাবি নিয়ে বিরোধীরা মাঠে নেমেছে, তা কোনো অবস্থাতেই সরকারের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। তা ছাড়া তাদের দাবিগুলোর পেছনে নাগরিক সমাজ বা বিদেশি কেউ কেউ যেসব ‘যুক্তি’ তুলে ধরছেন, তা-ও খণ্ডনের চেষ্টা করা হবে ব্রিফিংয়ে।
এদিকে ঢাকার রাজপথে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূতাবাস গভীরভাবে মর্মাহত। রোববার (২৯ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে এ কথা জানানো হয়েছে। ইইউ দূতাবাস তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে দেয়া পোস্টে লিখেছে, ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও এর সদস্যদেশগুলো রাজধানী ঢাকার রাজপথে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথ খুঁজে নেয়া গুরুত্বপূর্ণ বলেও পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
শনিবারই (২৮ অক্টোবর) ঢাকায় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ও রাজপথে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি-জামায়াতের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটেছে প্রাণহানিরও ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ৮টায় মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে এ আহ্বান জানায়।
এদিকে শনিবার ব্যাপক সংঘর্ষের পর রোববার (২৯ অক্টোবর) সারাদেশে হরতাল পালন করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। হরতাল শেষে আবারও সারাদেশে মঙ্গলবাল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সব পথ অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।