আগামী বৃহস্পতিবারের (৫ অক্টোবর) এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
সুজন বলেন, আগামী ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার একটি রাজনৈতিক দলের চট্টগ্রাম অভিমুখে রোড মার্চ এবং নগরীতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ঐ দিন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ইংরেজি (আবশ্যিক) ২য় পত্র পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ এবং পরীক্ষার সময়সূচি একইদিন হওয়াতে এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। কেননা এ ধরনের সভা-সমাবেশ মানেই নৈরাজ্য, ভাংচুর এবং অনাকাংখিত মৃত্যু। তাই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা ভাবনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, সভা-সমাবেশ একটি রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু শিক্ষার্থীদের নাগরিক অধিকার সর্বাগ্রে। আমাদেরকে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সবার আগে দেখতে হবে। তাই আগামী ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবারের রোড মার্চ এবং সমাবেশ পেছানো যায় কিনা তা ভেবে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান তিনি।
যদি রোড মার্চ এবং সমাবেশ পেছানো না যায় সেক্ষেত্রে ঐ দিনের ইংরেজি (আবশ্যিক) ২য় পত্র পরীক্ষাটি পরিবর্তিত রুটিনে নেওয়া যায় কিনা তাও ভেবে দেখার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
যেহেতু ইতিপূর্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্টগ্রাম বোর্ডের প্রথম চারটি পরীক্ষা স্থগিত করে পরিবর্তিত সময়সূচি প্রকাশ করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড। সেহেতু পুনরায় পরিবর্তিত সময়সূচি প্রকাশ করা হবে কিনা তাও বিবেচনার বিষয়। পরিবর্তিত সময়সূচি যদি প্রকাশ করা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবারের ইংরেজি(আবশ্যিক) ২য় পত্র পরীক্ষাটি নির্ধারিত সময়ের একঘণ্টা আগে অর্থাৎ ৯টা থেকে শুরু করে বেলা ১২টায় সমাপ্ত করা যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করার জন্য চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি।
নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজন আরো বলেন, রোড মার্চ এবং আহুত সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলা থেকে শতশত গাড়ি ঐদিন নগরীতে প্রবেশ করবে। দুপুরের আগেই নগরী যানজটে পরিপূর্ণ হওয়ার আশংকা রয়েছে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় যানজটের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ করে নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌছাতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
এরকম একটি পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে রাজনৈতিক কর্মসূচিটি পিছিয়ে দেওয়া অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত। ইতিপূর্বে বিভিন্ন জনগুরুত্বসম্পন্ন কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক কর্মসূচি পিছিয়ে দেওয়ার ভালো নজিরও স্থাপন করেছে রাজনৈতিক দলগুলো।
আর যদি রাজনৈতিক কর্মসূচি পেছানো সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে সন্তানদের শিক্ষা জীবন বিবেচনায় পরীক্ষাটি পরিবর্তিত তারিখে অনুষ্ঠিত করা কিংবা পরীক্ষার সময়সূচি ১ ঘণ্টা এগিয়ে নিয়ে এসে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষা আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই বাঞ্চনীয় হবে বলে মনে করেন তিনি।
চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার আগের দিন রাত্রে পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে আত্মীয়স্বজনদের বাসায় রাত কাটানোরও অনুরোধ জানান।
এছাড়া বিআরটিসিকে স্পেশাল বাস সার্ভিস চালুর মধ্য দিয়ে ঐদিনের পরীক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি পৌছে দিতে সহায়তা করারও অনুরোধ জানান তিনি।
শংকামুক্তভাবে পরীক্ষা শেষ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, কর্মসূচি আহবানকারী রাজনৈতিক দল, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড এবং প্রশাসনের একান্ত সহযোগিতা কামনা করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।