পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন আনোয়ার-উল-হক কাকার। সোমবার (১৪ আগস্ট) ইসলামাবাদের আইওয়ান-ই-সদরে দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে শপথ গ্রহণ করেন তিনি।
তিনি দেশটির বেলুচিস্তান প্রদেশের সাবেক সিনেটর ছিলেন এবং ৮ম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। খবর পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও টিভির।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শপথ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সদ্যবিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা, সিনেট চেয়ারম্যান সাদিক সানজরানিসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শপথগ্রহণের পর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ ও করমর্দন করেন দেশটির নতুন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার-উল-হক কাকার। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এখন তার প্রথম কাজ হবে নির্বাচনের সময় দেশ পরিচালনার জন্য মন্ত্রিসভা গঠন।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বিরোধীদলীয় নেতা রাজা রিয়াজের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক এবং এই পদের জন্য সম্ভাব্য পছন্দের প্রার্থীদের বিষয়ে কয়েক দিনের জল্পনা-কল্পনার পর শনিবার কাকারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এর আগে, মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে (৯ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের পরামর্শে পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ (এনএ) ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ার-উল-হক কাকারের নাম ঘোষণা করা হয়। তার নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশটির আগামী সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবে।
কাকারের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে দেশটির বিদায়ী সরকার শেষের দিকে নতুন আদমশুমারির অনুমোদন দেওয়ায় এখন নির্বাচন কমিশনকে নতুন করে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।
কে এই কাকার?
২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তানের সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন কাকার। দেশটির অত্যন্ত সক্রিয় একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে তার পরিচিতি আছে। সংসদের উচ্চকক্ষে নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হামিদ মীর জিও নিউজকে বলেছেন, রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও কাকারকে দেশের একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
মীর বলেন, বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) এই আইনপ্রণেতা পশতুন জাতিগোষ্ঠীর কাকার উপজাতির সদস্য। যে কারণে তিনি পশতুন ও বালুচ— উভয় গোষ্ঠীরই প্রতিনিধিত্ব করেন।
২০০৮ সালে রাজনৈতিক দল কিউ-লীগের টিকিটে কোয়েটা থেকে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কাকার। রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী কাকার বেলুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।