ইরানে হাজার হাজার কারাবন্দীকে ক্ষমা করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এরমধ্যে সাম্প্রতিক সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তাসংক্রান্ত অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া অনেকেই রয়েছেন বলে জানা গেছে। ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের বার্ষিকীর সম্মানে এই ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশি সংস্থার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি, বিদেশি এজেন্টদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ, ইচ্ছাকৃত খুন এবং আঘাত, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বংস এবং অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগের সম্মুখীন না হওয়া বন্দিদের ক্ষমা করা হবে।
গত সেপ্টেম্বরে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীর মৃত্যুর পর দেশটিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। দেশটির কঠোর হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে ওই সময় নৈতিকতা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখনও চলছে। চলমান এই বিক্ষোভ বিদেশিদের ইন্ধনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইরানের কর্তৃপক্ষ। বিক্ষোভ মোকাবিলায় ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের কারণে চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৫ শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭০ জন শিশু রয়েছে। এছাড়া বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
তবে হিজাববিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা চালানোর অভিযোগে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর দেশটিতে বিক্ষোভের গতি কিছুটা ধীর হয়েছে।
ইরানের সরকারি গণমাধ্যম বলেছে, বিচার বিভাগের প্রধানের কাছ থেকে একটি চিঠি পাওয়ার পর সর্বশেষ এই ক্ষমা ঘোষণা করেছেন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। বিচার বিভাগের ওই চিটিতে গ্রেপ্তারকৃতদের অনেকে বিদেশিদের প্রভাব এবং প্রচারের কারণে বিপথে পরিচালিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে কয়েকজন বিক্ষোভকারী দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তবে যারা অত্যধিক গুরুতর অপরাধ— যেমন বিদেশী এজেন্টদের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি, হত্যা বা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বংসের মতো অভিযোগের সাথে জড়িত তাদের ক্ষমা করা হবে না।
এছাড়া দেশটিতে গ্রেপ্তার কোনও দ্বৈত নাগরিকের ক্ষেত্রে ক্ষমা ঘোষণার এই পদক্ষেপ প্রযোজ্য নয় বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে।