বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা মাতামুহুরী নদীর দুই তীরসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন শাক সবজি, আলু, তামাক, মাতামুহুরী নদীর চরে বাদাম ও বোরো ধানের বীজতলা করে কৃষকরা। কিন্তু সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিপাতে এসব ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একটানা বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে যাওয়ার ফলে রোপণকৃত এসব ফসলের মধ্যে প্রাথমিকভাবে অন্তত ১০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। ইতোমধ্যে পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় বাদাম ১৮২ হেক্টর, শীত কালীন সবজি ৫০৪ হেক্টর, আলু ১৩০ হেক্টর, তামাক ৭২০ হেক্টর ও ১০ হেক্টর জমিতে চীনা বাদাম চাষ হয়েছে। এরমধ্যে জাওয়াদের বিরুপ প্রভাবে উপজেলায় ৫২ জন চাষীর বুরো ধানের বীজ তলার ক্ষতি ০.৫০ হেক্টর, ৬জন কৃষকের চীনা বাদাম ২ হেক্টর, ১২জন কৃষকের শীতকালীন সবজি ও গোল আলু ১ হেক্টর, বেশ কিছু কৃষকের ৩ হেক্টর তামাক ও কর্তন করে জমিতে রাখা আমন ধানও পানিতে ডুবে নষ্ট হয়। তবে বেসরকারি হিসাব মতে ক্ষতির পরিমাণ ১০ হেক্টর হবে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। পৌরসভা এলাকার নয়াপড়ার ধানচাষি কৃষক আবদুর রাজ্জাক ও আলী আকবর বলেন, আমার ২ একর জমিতে আমন ধান চাষ করছিলাম। এর মধ্যে চারভাগের তিন ভাগ ধান কাঁটতে পেরেছি। জওয়াদের কারণে কর্তনকৃত পাঁকা ধান পানিতে ডুবে গেছে। এদিকে লামা সদর ইউনিয়নের সবজি চাষী মো. কামাল হোসেন বলেন, আমি বিভিন্ন প্রকার শাক সবজি চাষ করি, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে অতি বৃষ্টি হওয়া শাক সবজি অনেক ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে আবার চারা লাগাতে হবে। মাতামুহুরী নদীর চর ও পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণে নদীর চরে সৃজিত বাদাম, তামাক, বোরো ধানের বীজতলার প্রাথমিক ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে কৃষি অধিদপ্তরে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে বলে জানান উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মংক্যনু মার্মা।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন চন্দ্র বর্মন বলেন, শীতকালে হঠাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপজেলার চাষিদের বেশ ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের ফলে নিচু জমিতে পানি জমে উপজেলা আমন ধান, বোরোধানের বীজতলা, তামাক ও শীতকালীন শাক সবজিসহ প্রায় ৭ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ধানের বীজ প্রণোদনা দেওয়ার কারণে কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন কৃষকরা।