চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে কথিত পরিবারমুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। পাশাপাশি এ চেম্বারকে একটি বিশ্বমানের চেম্বার হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পরিষদের প্যানেল লিডার এস এম নুরুল হক।
চেম্বার নির্বাচন সামনে রেখে গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) হোটেল রেডিসন ব্লু বে-ভিউ চট্টগ্রামের মোহনা হলে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে নুরুল হক এ প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি নির্বাচনে অ্যাসোসিয়েট গ্রুপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চট্টগ্রাম ব্যবসায়ী পরিষদের আহ্বায়ক শাজাহান মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্যানেলের অ্যাসোসিয়েট গ্রুপের ছয়জন এবং অর্ডিনারি গ্রুপের ১২ জনসহ ১৮ প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন। অ্যাসোসিয়েট গ্রুপের অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন মো. কামরুল হুদা, মোহাম্মদ আইয়ুব, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও এস এম কামাল উদ্দিন।
অর্ডিনারি গ্রুপের প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন এ টি এম রেজাউল করিম, আহমেদ রশিদ আমু, আহমেদ-উল আলম চৌধুরী রাসেল, ইমাদ এরশাদ, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, কাজী ইমরান এফ রহমান, মো. আবচার হোসেন, মো. আরিফ হোসেন, মো. হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, মো. আজিজুল হক, মোহাম্মদ রাশেদ আলী ও মোহাম্মদ মুছা।
নুরুল হক বলেন, চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চট্টগ্রাম চেম্বারের অফিসে অনেক জায়গা খালি আছে। আমরা সেখানে একটি ডাটা অ্যানালাইসিস সেন্টার গড়ে তুলব, যাতে আমদানি-রপ্তানি, সাপ্লাই চেইন ও বাজার চাহিদার তথ্য পাওয়া যায়। পাশাপাশি একটি ফ্লোর এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) গবেষণার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ সাধারণ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে। চট্টগ্রামের অন্যান্য চেম্বার হিসেবে মেট্রোপলিটন চেম্বার ও উইম্যান চেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ীদের উন্নয়নে কাজ করা হবে। পাশাপাশি আগামীতে চেম্বারে নতুন সদস্য হওয়া, নবায়ন করার কাজগুলো সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজ করা হবে। যাতে ব্যবসায়ী সদস্যরা ঘরে বসেই এসব কাজ করতে পারেন।
এ ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, চট্টগ্রাম থেকেই দেশের সিংহভাগ রাজস্ব আয় হয়ে থাকে। এতে চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের আয়ের ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করে চট্টগ্রাম বন্দর ও নগরীর অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহারের দাবি আদায়ে কাজ করে যাবো। তাছাড়া সম্প্রতি বন্দরের বর্ধিত অযৌক্তিক ট্যারিফ সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার বিষয়ে কাজ করে যাবো। পাশাপাশি চট্টগ্রাম চেম্বারকে বিশ্বমানের চেম্বারে পরিণত করার বিষয়ে নানাবিধ পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম ব্যবসায়ী পরিষদের আহ্বায়ক শাজাহান মহিউদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম দেশের বাণিজ্যের হৃদপিণ্ড। শিল্প, বন্দর, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ খাতের উন্নয়ন দ্রুত হলে জাতীয় অর্থনীতির চেহারা বদলে যাবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম চেম্বার গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী এক পরিবারের কাছে কুক্ষিগত ছিল। এখন ৫ আগস্ট পরবর্তী শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করে আরেকটি পরিবার চেম্বারকে কুক্ষিগত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তারা ট্রেড গ্রুপ ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন নাম দিয়ে নিজেদের ছয়জন পরিচালককে বিনাভোটে নির্বাচিত করে পুরো চেম্বারকে করায়ত্ব করে। এতে সাধারণ ভোটারদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হতো। এরই মধ্যে আদালত সেই ট্রেড গ্রুপ ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপকে নির্বাচনে অবৈধ ঘোষণা করেছে।
শাজাহান মহিউদ্দিন সাধারণ ভোটারদের পরিবারতন্ত্র থেকে বেরিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য অর্ডিনারি এবং অ্যাসোসিয়েট দুই গ্রুপে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার আহ্বান জানান।
আগামী ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে দুটি প্যানেলের ব্যবসায়ীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।







