চট্টগ্রামের নগরের ফুটপাত কোনভাবে হকারদের কবল থেকে উদ্ধার করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করলেও কিছু সময় পরে আবার দখল হচ্ছে অধিকাংশ ফুটপাত। স্টেশন রোড, নিউমার্কেট, কোতোয়ালী মোড় থেকে আমতলা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের ফুটপাতে অবৈধ দোকান ও স্থাপনা দিনে উচ্ছেদ করলেও সন্ধ্যার পর ফের দোকান খুলতে এসব ফুটপাতে।
জানা যায়, ফুটপাত অবৈধ দখল ও হকার মুক্ত করার জন্য রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে নগরের নিউ মার্কেট থেকে বিআরটিসি মোড় পর্যন্ত অভিযান চালানো হয় সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্ববিদ্যার নেতৃত্বে। এ সময় অবৈধভাবে ফুটপাতে দোকান বসানোর দায়ে পাঁচজনকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু দুপুরের পর থেকে আবারও বসাতে থাকে এসব অবৈধ দোকান।
অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্ববিদ্যা গণমাধ্যমকে বলেন, সিটি করপোরেশনের লক্ষ্য হচ্ছে, ফুটপাত-সড়ক আমরা দখল হতে দেব না। পুরো শহরের সব ফুটপাত-সড়ক আমাদের কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসব। আমরা বারবার বলছি যে, ফুটপাত-সড়ক দখল করা যাবে না। রোববার অভিযান শুরুর আগে মাইকিং করে তাদের সরে যেতে বলেছি। কিন্তু এরপরও যারা সরে যায়নি, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর হতে হয়েছে। ফুটপাতে কোনো ধরনের স্থাপনা তৈরির কোনো সুযোগ নেই।
চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম বলেন, হকারদের জন্য নির্ধারিত স্থানে নির্দিষ্ট দিনে হলিডে মার্কেট করা হবে।তাদের জন্য বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে যা যা প্রয়োজন সব সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে করা হবে। তবুও ফুটপাত দখল করে জনদুর্ভোগ মেনে নেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরের ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি অভিযান শুরু করে সিটি করপোরেশন। তবে অভিযানের চারদিনের মাথায় ১২ ফেব্রুয়ারি পুনরায় দখল ঠেকাতে অভিযানে গেলে পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় হকাররা। এসময় পুলিশ ও করপোরেশনের কর্মীসহ ১৫ জন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় প্রতিষ্ঠানটির বেশকিছু যানবাহন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উৎপাত ও সড়ক থেকে উচ্ছেদ হওয়া হকারদের মধ্যে কেউ কেউ কাঠের স্থাপনা বসিয়ে, কাগজের কার্টুনের ভিতরে মালামাল নিয়ে, কাপড়ের পর্দা টাঙ্গিয়ে অথবা ভ্রাম্যমান ঠেলাগাড়ির উপর পসরা সাজিয়ে ফের রাস্তা দখলের চেষ্টা করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দোকানদার বলেন, এখানে কিছু কিছু দোকানের মালিক ফুটপাতে তাদের পণ্য বিক্রি করে থাকে। আবার অনেকেই তাদের দোকানের সামনের ফুটপাত হকারের কাছে ভাড়া দেওয়ায় এসব সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে নগরীতে যানজট ছিনতাই সহ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।