মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫, ১৭ আষাঢ়, ১৪৩২, ৫ মহর্‌রম, ১৪৪৭

স্বাধীনতা ও সমাজতন্ত্রের সংগ্রামের অগ্রসৈনিক মিরসরাইর অহিদুল হক

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

অহিদুল হক মুক্তিযুদ্ধে যে অসাধারণ বীরত্ব, অসীম সাহস ও শৌর্যবীর্যের পরিচয় দেন, তা মিরসরাই থানার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের পর সর্বহারার মুক্তির সংগ্রামে তাঁর জীবন নিবেদিত করেন। অহিদুল হক মিরসরাই থানা জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অহিদুল হকের জন্ম মিরসরাই থানার পশ্চিম মলিয়াইশ গ্রামে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১ জুন। পিতা হাজী ছেরাজুল হক মিস্ত্রী এবং মাতা কমরের নেছা। পিতামহ হাজী আবদুল মুনাফ মিস্ত্রী এবং প্রপিতামহ শমসের আলী মিয়া। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে অহিদুল হক চতুর্থ।
তিনি বাল্যকালে মলিয়াইশ প্রাইমারি স্কুলে লেখাপড়া করেন। মিঠানালা হাইস্কুল থেকে ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পাস করেন। নিজামপুর কলেজে আইএ ক্লাসে ভর্তি হবার কিছুদিন পর ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। নয় মাস পর চাকরি ছেড়ে আবার নিজামপুর কলেজে ভর্তি হয়ে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে আইএ পাস করেন। এরই মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে একই কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষা দেন।
নিজামপুর কলেজে ভর্তির পরপরই অহিদুল হক ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে নিজামপুর কলেজে প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেলে জিএস পদে প্রার্থী হন। ছাত্রলীগের ভিপি প্রার্থী ছিলেন মোফাখখর হোসেন। ছাত্র ইউনিয়নের প্যানেল নির্বাচনে বিজয়ী হয়।
উল্লেখ্য যে, মিরসরাইতে সে সময় সৈয়দ ফজলুল হক বিএসসির পরামর্শ ও নির্দেশনায় জিতেন্দ্রপ্রসাদ নাথ মন্টু আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।
১৯৬৯ সালের প্রথম দিকে মিরসরাই থানা ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলনে অহিদুল হক সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালের ১১ দফা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মিরসরাই ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ছাত্রলীগ-ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন-এর নেতাদের নিয়ে গঠিত হয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। অহিদুল হক সংগ্রাম পরিষদের আহŸায়ক নিযুক্ত হন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মিরসরাই ও ফটিকছড়ি আসন থেকে সৈয়দ ফজলুল হক বিএসসি এমএনএ এবং মোশাররফ হোসেন এমপিএ নির্বাচন হন। নির্বাচনে অহিদুল হক থানা ছাত্রলীগ ও এর আওতাভুক্ত কলেজ ও ইউনিয়ন শাখার নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ, মিটিং, মিছিলেসহ যাবতীয় নির্বাচনী কর্মকাÐে অংশগ্রহণ করেন।
উনসত্তরে জমি নিলামের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। সিও (রাজস্ব) অফিস অবরোধ করার অপরাধে সামরিক আদালতে সাজা হয় রাখাল চন্দ্র বণিক, জিতেন্দ্র প্রসাদ নাথ মন্টু, জাহাঙ্গীর চৌধুরী, আবুল খায়ের, এবাদুর রহমানের। সৈয়দ ফজলুল হক বিএসসি ও অহিদুল হকের নামে হুলিয়া জারি হয়।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার টালবাহানা ও ১ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করার পরিপ্রেক্ষিতে সমগ্র পূর্ব বাংলা গর্জে ওঠে। শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। ২ মার্চ থেকে মিরসরাইতে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। মার্চের প্রথম থেকে মিরসরাইর সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসে। স্কুল-কলেজ, হাট বাজার সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে অহিদুল হক জায়গির ছিলেন বড়তাকিয়া বাজারের পশ্চিম পাশে আহসান উল্ল্যাহ মিয়াজীর বাড়িতে। ২৫ মার্চ রাতে বড়তাকিয়া বাজারের সৈয়দ আবু তাহের এসে তাকে জানান বড়তাকিয়া রেল স্টেশন মাস্টার তার লাইনম্যান দিয়ে খবর পাঠিয়েছে যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। তিনি রেলওয়ে টেলিফোন বার্তায় খবরটি পেয়েছেন। এ খবর পাওয়ার পর অহিদুল হক বড়তাকিয়া থেকে সুকুমার বাবুর ট্যাক্সি নিয়ে মিঠাছড়া বাজারে আজিজুল হক মিয়ার দোকানে যান। সেখান থেকে মাইক নিয়ে জাফর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী ও মহিউদ্দিন আহমদকে সঙ্গে নিয়ে মাইকে ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার কথা এবং জনগণকে গাছ কেটে ও রাস্তা কেটে ঢাকা ট্রাঙ্ক রোডে ব্যারিকেড দেওয়ার আহŸান জানান।
বেলা ১টার দিকে উত্তর দিক থেকে প্রচার করে ফিরে আসার পথে মিরসরাই থানার ওসি তাকে দেখা করার জন্য বলেন। ওখানে গিয়ে ওসি জিজ্ঞেস করেন পাঞ্জাবি সৈন্যরা কতদূর এসেছে। তিনি বলেন তারা এখনো শুভপুর ব্রিজ পার হতে পারে নি। সে সময় সেন্ট্রি এসে বলে উত্তর পাশে অছি মিয়ার পুলের ওপর পাঞ্জাবি সৈন্যদের ট্রাক দক্ষিণ দিকে আসছে। দেখে তিনি ট্যাক্সিতে করে পশ্চিম দিকে চলে যান।
মিরসরাই জনতা ব্যাংকের ওপর থেকে মানুষ বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে ফেলে। অন্যান্য দোকানপাট থেকেও পতাকা নামিয়ে ফেলে। পাকিস্তানি সৈন্যরা দক্ষিণ দিকে চলে যায়। এরপর লাতু মিয়ার নেতৃত্বে আবু তোরাব থেকে এক বিরাট মিছিল আসে। মিছিলকারিদের হাতে ছিল দা, কিরিচ, লাঠিসোটা। অহিদুল হক তাঁর ভগ্নিপতির বাড়িতে গিয়ে খেতে বসার পর পরই শুনতে পান গুলির শব্দ। তাড়াতাড়ি ঘরের পেছন দিকে বের হয়ে দেখেন রাস্তায় লোকজন ছুটোছুটি করছে। পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলিতে কাশেম নামে একজন নিহত ও দু’জন আহত হয়। তখন শহর থেকে মানুষ গ্রামের দিকে পালিয়ে আসছিল। সেখান থেকে অনেক আর্মি ও ইপিআরকে তারা সহযোগিতা করে সীতাকুÐ ক্যাম্পে পৌঁছে দেন। পাক সেনারা উত্তর দিক থেকে আসার সময় শুভপুর ব্রিজের উভয় পাশে কিছু সৈন্য রেখে আসে। ওরা ট্রেঞ্চের ভিতর থাকত। ওদেরকে ঠেকানোর জন্য অহিদুল হক অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা ও বাঙালি সৈনিকদেরকে নিয়ে অভিযান চালান। ওদেরকে উৎখাত করা হয়; তিনজন পাক সেনা নিহত হয়। আরেকজন পালানোর সময় তাকেও হত্যা করা হয়।
প্রতিরোধ যুদ্ধের সময় অহিদুল হক সীতাকুÐ পর্যন্ত আসা-যাওয়া করতেন। মিরসরাই ডিফেন্স যখন হয় তখন রসদ সরবরাহ করেন বাঙালি সৈন্যদের। বিশেষ করে ছাত্রলীগের কর্মীরা নানা রকম সাহায্য-সহযোগিতা করে। ওখানে অছি মিয়ার পোল এবং সিএন্ডবির ডাক বাংলোর পাশে ডিফেন্স ছিলো। মিরসরাই থানার উত্তর (অছি মিয়ার পোল) ও দক্ষিণ পাশে (সিএন্ডবি) ক্যাপ্টেন অলি ছিলেন কমান্ডার। মস্তান নগরে ক্যাপ্টেন মতিনের (ইস্ট বেঙ্গল) নেতৃত্বে আরেকটা ডিফেন্স দেয়া হয়। মস্তান নগর পতনের দিন হিঙ্গুলি ব্রিজ উড়ানোর জন্য তাদেরকে এক্সপ্লোসিভ দেয়া হয়। তবারক, কাশেম, আহমদ, ইউসুফ, ক্যাপ্টেন রফিক, অহিদুল হক, সাহাবউদ্দিন, এটিএম নিজামুদ্দিন আর ছিলেন ক্যাপ্টেন রফিক। শ্রমিক নেতা নিজামউদ্দিন আর আর টেক্সটাইলের একটি টয়োটা জিপ নিয়ে এসেছিলেন। করের হাট থেকে হিঙ্গুলি ব্রিজে বসানো এক্সপ্লোসিভের ফিউজে আগুন দেন ক্যাপ্টেন রফিক। ক্যাপ্টেন রফিক পোস্ট অফিস থেকে রামগড়ে মেজর জিয়ার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন। পোস্ট মাস্টার জানান যে, জিয়াউর রহমান রামগড়ে নেই, সাব্রæমে আছেন।
অসহযোগ থেকে প্রতিরোধ যুদ্ধে ব্যাপক ছাত্র-জনতা অংশ নেন। যাঁরা নেতৃত্ব দেন, তাঁদের সবার কথা জানা সম্ভব নয়, অহিদুল হক সহ বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাঁরা হলেন ছাত্রলীগের জাফর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহমদ (কাস্টম), মহিউদ্দিন রাশেদ, বেলায়েত হোসেন চৌধুরী, মাস্টার আবদুল মান্নান, রাখাল চন্দ্র বণিক, সাব্বির আহমদ সবুর, তবারক হোসেন, কবির আহমদ, ফেরদৌস বারী চৌধুরী মিহির, আহমদ, ইউসুফ, কাশেম, ইলিয়াস, ফখরুদ্দিন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর (ছোট কমলদহ), নিজামউদ্দিন, এ.এন.এম জাহাঙ্গীর চৌধুরী, নুরুল আলম (বড় দারোগা হাট), সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবুল কালাম চৌধুরী, গণি আহমদ, আবু তাহের। কামালউদ্দিন গেদু, আবুল কালাম আজাদ (বারৈয়ারহাট), মফিজুল ইসলাম, আহমদ হোসেন, শংকর প্রসাদ দেওয়ানজী, আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ ফজলুল হক বিএসসি, জিতেন্দ্র প্রসাদ নাথ মন্টু, এবাদুর রহমান বি.কম, কেফায়েতুল­াহ, উকিল আবুল কাসেম চৌধুরী, আবুল খায়ের উকিল, মোশাররফ হোসেন, মনির হোসেন, লাতু মিয়া, ইদ্রিস মিয়া, ইউনুস মিয়া, এরাদুল্লাহ, আবু জাফর আহমদ সাইদ, আমিনুল হক সওদাগর (মিঠাছড়া বাজার), ইউসুফ মিয়া, ডা. কামাল উদ্দিন চৌধুরী, ডা. হামিদুল্লাহ, আবদুর রব মিয়া (মিঠাছড়া), ডা. আবুল খায়ের (হাদি ফকির হাট), শশাঙ্ক চৌধুরী।
প্রতিরোধ যুদ্ধের এক পর্যায়ে অহিদুল হক রামগড়ে যান, তাঁর সাথে ছিলেন শাহ আলম চৌধুরী, ফেরদৌস বারী চৌধুরী (মিহির), আবুল খায়ের, জয়নাল আবেদিন, মোহাম্মদ মোস্তফা, রেজা শাহ, রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, নুরুদ্দিন চৌধুরী, আব্দুল্লাহ চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান মাইফল, খোরশেদ আলম, নাসির আহমদ। দশ-বার দিন থাকেন। রামগড়ের পতনের পূর্ব দিন ১ মে সাব্রæম যান। সেখান থেকে বগাফা বিএসএফ ক্যাম্পে পাঠানো হয় ট্রেনিং-এর জন্য। এক সপ্তাহ ট্রেনিং শেষে তাদেরকে বগাফা থেকে নিয়ে যাওয়া হয় আগরতলার পশ্চিমে একটা অডিটোরিয়ামে। দশ দিন পর ৯৩ বিএসএফ ক্যাম্প হয়ে তারা ওম্পি নগর যান। সেখানে এক মাস ট্রেনিং নিয়ে হরিণা আর্মি ক্যাম্পে আসেন। মেজর জিয়া তখন সেক্টর কমান্ডার। তাকে কমান্ডার, শাহ্ আলম চৌধুরীকে ডেপুটি কমান্ডার করে ৯ সদস্যের একটি গ্রæপ করে মিরসরাইতে পাঠানো হয়। তার গ্রæপের সদস্যরা হলেন ফেরদৌস বারী চৌধুরী (মিহির), নুরুদ্দিন চৌধুরী, রেজা শাহ, জয়নাল আবেদিন, রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ফয়েজ আহমদ।
মাহফুজুর রহমান মাইফলকে কমান্ডার ও খোরশেদ আলমকে ডেপুটি কমান্ডার করে ৭ জনকে সীতাকুÐে পাঠানো হয়। মাইফল পরে চলে যায়। খোরশেদই কমান্ডার হয়। তারা শ্রীনগর হয়ে পায়ে হেঁটে মধুগ্রাম, মুহুরীগঞ্জ, বুরবুরিয়া ঘাট দিয়ে ফেনী নদী পার হয়ে মিরসরাইতে প্রবেশ করেন। অহিদুল হক সবাইকে নিয়ে তার বাড়িতে আশ্রয় নেন। তাদেরকে ১টি রিভলভার, ২টি এসএমসি, প্রত্যেককে ২টি করে গ্রেনেড ও ২টি এন্টি ট্যাংক মাইন দেয়া হয়।
কমান্ডার অহিদুল হক কয়েকদিন চুপচাপ তার বাড়িতে থেকে চারিদিকে খোঁজখবর নিতে থাকেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা ট্রাঙ্ক রোডের পশ্চিম দিকে কমই আসত। ২৫ মার্চের পরে মিরসরাইর বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু মুসলিম লীগের নেতাকর্মী ও দুষ্টু প্রকৃতির লোকের নানা অপকর্মের খবর পান। জনসাধারণ তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। ছাগল-গরু ধরে নেয়া, বাড়ি-ঘরে লুটতরাজ করা বিশেষত হিন্দু বাড়িতে লুটতরাজ ছিল তাদের প্রধান কাজ।
কমান্ডার অহিদুল হকের বাড়ির পার্শ্ববর্তী সুফিয়া বাজারে মুক্তিযোদ্ধারা একটি গণ-আদালত গঠন করেন। যারা অন্যায়-অত্যাচার ও লুটতরাজ চালাত তাদের ধরে এনে বিচার করা হতো। এতে কয়েকদিনের মধ্যে এলাকায় লুটতরাজ বন্ধ ও শান্তি ফিরে আসে এবং সাধারণ মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আরো আস্থাশীল হয়।
প্রথম অপারেশন : কমান্ডার অহিদুল হক গ্রæপের প্রথম অপারেশন হচ্ছে তারা ১০নং মিঠানালা ইউনিয়নে দালাল মনিরকে হত্যা করেন। সে হিন্দুদের বাড়িঘর, গরু-ছাগল লুট করা থেকে শুরু করে তাদের ওপর অনেক অত্যাচার করেছিলো; সেজন্যে তাকে মৃত্যুদÐ দেওয়া হয়।
এরপর তারা মিঠাছড়া থেকে বামন সুন্দর দারোগা হাট রোডে অপারেশন করেন। সকাল ১০টার দিকে খবর পান এক ট্রাক পাক সৈন্য পশ্চিমে দারোগা হাটে এসে নামছে। তারা তাড়াতাড়ি আলি ফকিরের হাটের পূর্ব পাশে উল্লেখিত রোড, যেখানে সলিন শেষ হয়েছে সেখানে জোড়পুকুরের পাশে একটি এন্টি ট্যাংক মাইন বসান। তার পাশে চিত্র পরিচালক মোস্তফা মাহমুদের বাড়িতে এমবুশে বসেন। এন্টি ট্রাংক মাইন বিস্ফোরণের পর পাক সৈন্যরা এসে মোস্তফা মাহমুদের পিতা দিল মোহাম্মদ মিস্ত্রি ও নজির আহমদ মিস্ত্রিসহ কয়েক জনকে হত্যা করে। পাকিস্তানি সৈন্যরা পায়ে হেঁটে আসে। পরে মুক্তিযোদ্ধারা খবর পান ওরা যে ট্রাকে গিয়েছিলো সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধারা এ পরিস্থিতির জন প্রস্তুত ছিলেন না। তারা পশ্চিম দিকে চলে আসেন। ওরা ক্রেন নিয়ে আসছিল ট্রাক নিয়ে যাওয়ার জন্য। মাইনের আঘাতে ক্রেন ধ্বংস হয়ে যায়। ওদের ৩ জন মারা যায়। মাইন বসান কমান্ডার অহিদুল হক ও ধূমের শাহ আলম। দারোগা হাটের পূর্ব পাশে রমেশ মহাজনের বাড়ির পশ্চিম পাশে পৌঁছে ট্রাকের কারবুরেটরের ভিতর বালি, কাদা ভর্তি করে দেন এবং গ্লাস ভেঙ্গে ফেলেন। ইতিমধ্যে খবর আসে যে, পাক সৈন্যরা এদিকে আসছে, তখন তারা পশ্চিম দিকে দারোগা হাটের পূর্ব ও উত্তর পাশে পজিশন নেন। পাকিস্তানিরা যখন রাজাপুর স্কুলের কাছাকাছি আসে, তখনই তারা ফায়ার আরম্ভ করেন। পাকিস্তানীরাও পজিশন নিয়ে পাল্টা ফায়ার করে। সন্ধ্যার পূর্বে তারা ফিরে চলে যান। অহিদুল হক গ্রæপের সাথে সুবেদার নজিরসহ কাশেম রাজার গ্রæপের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা এই অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন।
সুফিয়া রোডের যুদ্ধ : আগস্টের ১০ তারিখে সকালে অহিদুল হক খবর পান সুফিয়া রোড দিয়ে পাক সৈন্যরা নামছে। তারা সুফি নূর মোহাম্মদের মাজারের উত্তর পাশে শহীদ সুলতান ভুঁইয়ার বাড়ি, রফিউজ্জমার বাড়ি ও আবদুল আজিজ মিস্ত্রির বাড়ির সামনে পজিশন নেন। অহিদুল হক এলএমজি নিয়ে আজিজ মিস্ত্রির বাড়ির পাশে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল সিভিল ড্রেসে বিশ পঁচিশ জন পাকিস্তানি সৈন্য পাঁয়ে হেটে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। এলএমজি পজিশন থেকে ৩০০ গজের মধ্যে আসলে অহিদুল হক ফায়ার আরম্ভ করেন। ৭/৮ রাউন্ড গুলি বের হওয়ার পর তার এলএমজির ফায়ার বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তার অন্যান্য সহযোদ্ধারা ফায়ার করতে থাকে। গুলির সাথে সাথে পাকিস্তানিরা রাস্তার পাশে পড়ে যায়। তাদের আক্রমণের পূর্বে পাক সেনারা বদিউল আলম চৌধুরীর বাড়ির সামনে থেকে র্২র্ মর্টার দিয়ে আক্রমণ করতে থাকে। তাদের গুলির পর ওরা র্২র্ মর্টার ও এমএমজির ফায়ার করতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধারা উইথড্র করে চলে আসেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা বৃষ্টির মত এমএমজির গুলি করতে থাকে তাদের পেছনে। অহিদুল হক ছাড়াও এই অপারেশনে অংশ নিয়েছিলেন সাহাবউদ্দিন (বিএলএফ), নিজামুদ্দিন চৌধুরী, নিজামুদ্দিন ভুঁইয়া, নুরুদ্দিন চৌধুরী, মিহির চৌধুরী, জয়নাল আবেদিন, রেজ শাহ,্ নুরুল আফসার কেনু, মোহাম্মদ মোস্তফা।
পাকিস্তানি সৈন্যরা বদরুদ্দোজা নামে ছাত্রলীগের এক বিশিষ্ট নেতা, নুরুল মোস্তফা চৌধুরী, শামসুল হুদা ভুঁইয়া, আবদুল জলিল, ওয়ারতউল্লাহকে হত্যা করে। আবদুল জলিলকে সুফি নুর মোহাম্মদ মাজারের মসজিদের ভিতরে ঢুকে গুলি করে। শহীদ সুলতান আহমদ ভুঁইয়াকে ধরে মিরসরাইতে নিয়ে যায়। তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি।
নভেম্বরের প্রথম দিকে আবুর হাটের পূর্ব দিকে মুরাদপুর, তেতৈয়া ও তেমুহনী লোহার পুলে পাকিস্তানী সৈন্য ও রাজাকারদের সাথে অহিদুল হক গ্রæপের যুদ্ধ হয়। সকাল থেকে আরম্ভ হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলে। পাকিস্তানিদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাদের পক্ষে কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এক পর্যায়ে রাজাকাররা জাল মারতে মারতে তাদের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছিল। তারা গুলি করে তাদের ফেলে দেন।
মিয়াজান ঘাট থেকে পাকিস্তানি সৈন্যরা দক্ষিণ দিকে আসছিল। তারা সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছিল। অহিদুল হক খবর পেয়ে তার গ্রæপ নিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যদের বাধা প্রদান করেন। মাতৃকা হাসপাতালের ডা. জামশেদের বাড়ির উত্তরে যুদ্ধ হয়।
মিরসরাইর আরো কিছু উল্লেখযোগ্য অপারেশন : :মিঠানালা বোর্ড অফিস রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ-এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন কমান্ডার এএফএম নিজাম উদ্দিন।
দুর্গাপুর হাইস্কুল রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন : এ অভিযানে ফরিদ আহমদ চৌধুরী (হাজিশ্বরাই) শহীদ হন।
কাটাখালী যুদ্ধ : আবু তোরাব বাজারের দক্ষিণ পাশে যুদ্ধ।
এসকল যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা অসীম বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন। বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমণে পাক বাহিনী ও রাজাকার বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মিরসরাইর পশ্চিম অঞ্চলে শত শত মুক্তিযোদ্ধার আশ্রয়কেন্দ্র ছিল। চট্টগ্রাম শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতকারী মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রানজিট পয়েন্ট ছিল মিরসরাই। মুক্তাঞ্চল ছিল মিরসরাইর পশ্চিমাঞ্চল।
অক্টোবরের শেষদিকে বোয়ালখালীর এমপি ডা. মান্নান, বিএলএফ-এর সীতাকুÐ ও মিরসরাই অঞ্চলের কমান্ডার সাবের আহমদ আসগরী, নুরুন্নবী চৌধুরী, গোলাম রব্বান, অহিদুল হক, ইরফানুল হক, মমতাজুল আলম জাহেদী (সি-ইন-সি) ও জাফর আহমদ (সি-ইন-সি) একসঙ্গে বসে যুদ্ধের সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করেন। তখন মিরসরাই থানা কমান্ড পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব আসলে তাতে সবাই একমত হন এবং অহিদুল হক, ইরফানুল হক, জাফর আহমদ (উত্তর) ও মমতাজুল আলম জাহেদীকে (দক্ষিণ) নিয়ে একটি যৌথ কমান্ড গঠন করা হয়। এই কমান্ডের সার্বিক দায়িত্ব আর্পিত হয় অহিদুল হকের ওপর। প্রশাসনিক দায়িত্ব পান ফেরদৌস বারী চৌধুরী মিহির, অপারেশন কমান্ডার নিযুক্ত হন ইরফানুল হক, সাহাবউদ্দিন, শাহ আলম চৌধুরী, মমতাজুল আলম জাহেদী, এএফএম নিজামউদ্দিন চৌধুরী ও জাফর আহমদ।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মিরসরাইর জনগণ সম্মুখযুদ্ধ ও গেরিলা যুদ্ধের তীব্রতা ও ভয়াবহতা বোধ করি সবচেয়ে বেশি প্রত্যক্ষ করেছে। সে কারণে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এবং মুক্তিযোদ্ধা গ্রæপের সংখ্যাও এ উপজেলায় বেশি। মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা পাঁচ হাজারের বেশি বই কম হবে না। কমপক্ষে ১৩০টি গ্রæপ মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ছিলো। সকল গ্রæপ কমান্ডারের নাম অহিদুল হকের মনে নেই। যাঁদের নাম তার মনে আছে, তারা হলেন ইরফানুল হক, শাহ এমরান, মঈনুদ্দিন মোমিন, এএফএম নিজামউদ্দিন চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, আলী আজম, আবুল খায়ের, আহসানউল্লাহ প্রমুখ।
মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে মিরসরাইতে যুদ্ধরত সকল গেরিলা গ্রæপের সমন্বয়ে যুদ্ধ পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। এ লক্ষে প্রথমে একটি যৌথ কমান্ড গঠিত হয়। এফএফ কমান্ডার হিসেবে অহিদুল হক, বিএলএফ কমান্ডার হিসেবে ইরফানুল হক, মিরসরাই (উত্তর) শাহ আলম চৌধুরী, মিরসরাই (দক্ষিণ) মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন এবং ফেরদৌস বারী চৌধুরী মিহিরকে অর্থের দায়িত্ব দেয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা বিশেষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন অহিদুল হক। পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থান সম্পর্কে তাদেরকে খোঁজ-খবর দিয়ে, আশ্রয়-খাদ্য, সাহস ও বুদ্ধি দিয়ে সর্বতোভাবে সাহায্য করেছে মিরসরাইর বিভিন্ন গ্রামের অসংখ্য সাধারণ মানুষ। তাদের মধ্যে অন্যতম কবির, বাদশা মিঞা, বড় কামাল ও ছোট কামাল (ইছাখালী), জহুরুল হক সওদাগর ও কানু ডিলার (আবুতোরাব), মোস্তফা ভেন্ডার (মায়ানী), শামসুল হক মেম্বার (রহমতাবাদ)। মিরসরাইতে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন কমান্ডারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা এসেছেন, যুদ্ধ করেছেন থানা কমান্ডার হিসেবে সকলের কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা পাওয়ার কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন অহিদুল হক। নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে জন্মভূমির স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে অনেকে শহীদ হয়েছেন, অনেক আহত হয়েছেন। রণাঙ্গনের সহকর্মী বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানান তিনি।
অহিদুল হক মনে করেন ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি একটি স্বাধীন দেশ ও পতাকা পেলেও পায়নি অর্থনৈতিক মুক্তি। প্রতিষ্ঠা করা যায় নি শোষণহীন সমাজ। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে তারা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন, নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন, সে আশা মোটেও পূরণ হয় নি। ইতিমধ্যে পার হয়ে গেছে পঞ্চাশটি বছর। চারদিকে জনজীবনে প্রচÐ অস্থিরতা। রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি সর্বক্ষেত্রে আজ চরম অবক্ষয় ও নৈরাজ্য বিরাজিত। এমন পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের দলমত ভুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে। তিনি একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানান।
অহিদুল হকের স্ত্রীর নাম হাসিনা আখতার। তাঁর ২ পুত্র, ১ কন্যা। পুত্র এ এইচ এম মাহবুব রানা বিএ অনার্স, এমএ (ইংরেজি), আবু সাঈদ মাহমুদ রণি বিএসসি অনার্স (এগ্রোটেকনোলজি), এমবিএ। কন্যা সুলতানা ইয়াসমিন মিতু-বি.কম অনার্স (একাউন্টিং)।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অহিদুল হক ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের ১৮ আগস্ট পরলোকগমন করেন।
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

মুক্তিযুদ্ধ যাঁরা শুরু করেছিলেন তাঁরা চলে গেছেন, হারিছই আছেন একা

চট্টগ্রাম শহরে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ করেছিলেন, তাঁরা চলে যাচ্ছেন। সাতজন ছিলেন তাঁরা, পাঁচজন ইতিমধ্যে তাঁদের প্রভুর ডাক পেয়ে এ গ্রহ ছেড়ে চলে গেছেন প্রভুর সন্নিধানে।

বিস্তারিত »

আওয়ামী লীগ, বাঙালি জাতিসত্তার নির্মাণ ও বাংলাদেশ একসূত্রে গাথা

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২৩ বছরের অবিরাম সংগ্রাম এবং অবশেষে ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকেই

বিস্তারিত »

সুলতান কুসুমপুরী ও তাঁর কোম্পানি কমান্ডার হাবিলদার আবু’র মুক্তিযুদ্ধ

মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের ১৩জন এমপি সম্মুখ যুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তারা সেনা কর্মকর্তাদের ন্যায় মুক্তিযুদ্ধে তাদের গ্রæপকে কমান্ড করেন। এই ১৩ জন এমপি

বিস্তারিত »
প্রদ্যোৎ কুমার পাল

৭১-এর দুরন্ত গেরিলা প্রদ্যোৎ কুমার পাল

প্রদ্যোৎ কুমার একজন অসম সাহসী বীরের নাম। মুক্তিযুদ্ধে এই দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধা দক্ষিণ চট্টগ্রামের রণাঙ্গণ মাতিয়ে রেখেছিলেন তাঁর অসীম সাহস ও পরাক্রম দিয়ে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের চারটি

বিস্তারিত »

দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের ক্যান্টনমেন্ট বরকল, শাহজাহান ইসলামাবাদী জিওসি

মুক্তিযুদ্ধের এক কিংবদন্তী শাহজাহান ইসলামাবাদী। দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের তিনিই ছিলেন প্রধান নায়ক। কিংবা এভাবেও বলা যায়, তাঁকে কেন্দ্র করেই দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধ গড়ে উঠেছিল। তাঁর

বিস্তারিত »
বাংলাদেশে পিএইচপির উদ্যোগে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিখ্যাত প্রোটন ব্রান্ডের গাড়ি তৈরির কারখানা উদ্বোধনের পর মোনাজাত করছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ এবং পিএইচপির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সুফি শিল্পপতি মিজানুর রহমান ।

দার্শনিক শিল্পপতি সুফি মিজানুর রহমান পুরুষোত্তম

বাংলাদেশে পিএইচপির উদ্যোগে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিখ্যাত প্রোটন ব্রান্ডের গাড়ি তৈরির কারখানা উদ্বোধনের পর মোনাজাত করছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ এবং পিএইচপির

বিস্তারিত »

মুক্তিযুদ্ধে দোহাজারীর বীর চতুষ্টয় : খসরু-জাফর-রতন-কামাল

চট্টগ্রামের সভ্যতা মানুষ ও নদীর যুগ্ম-সৃষ্টি। ঐতিহাসিক কাল থেকে চট্টগ্রামে তিনটি বড় নদী পরিদৃষ্ট হয়। সর্ববৃহৎ কর্ণফুলী, অনতিবৃহৎ হালদা ও শঙ্খ নদী। কর্ণফুলী সদর ও

বিস্তারিত »

ষাটের_দশকের_ছাত্রনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সিরাজুল আলম

কাজী সিরাজুল আলম ষাটের দশকের শেষদিকে চট্টগ্রামের একজন বিশিষ্ট ছাত্রনেতা ছিলেন। ৬৯-৭০-এ তিনি ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেন। তাঁর বাড়ি সীতাকুÐে; তিনি সীতাকুÐে ৬৯-এর

বিস্তারিত »

মুক্তিযুদ্ধে_চিকিৎসকদের অবদান ও ডা.শৈবাল কান্তি দাশ

মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসকদের ভ‚মিকা নিরূপণের চেষ্টা করা হয়নি। তবে তাঁরা না হলে মুক্তিযোদ্ধারা, বিশেষ করে গেরিলা যোদ্ধাদের পক্ষে যুদ্ধে সফল হওয়া মুস্কিল ছিল। ইনফ্যান্ট্রি, আর্টিলারি, ক্যাভালরি

বিস্তারিত »