চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন স্থান ও পাশ্ববর্তী জেলা ফেনীতে অভিযান চালিয়ে ছয় কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধানসহ ২৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে র্যাবের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগের দিন বুধবার তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাং কালচার সারাদেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। নানা অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভুক্তভোগীর সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ ফেব্রুয়ারি ফেনী জেলার ফেনী পৌরসভার মধ্যম রামপুর এলাকা থেকে এসডিকে গ্রুপের প্রধান মো. রাব্বি (২০), মোঃ তৌহিদুল প্রকাশ সাগর (১৭), মো. ফখরুল (২০) সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে একই সময়ে চট্টগ্রাম মহানগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ এলাকা থেকে আরেক কিশোর গ্যাং নুরু গ্রুপের সদস্য মো. রাকিব উদ্দিন তামিম (১৯), মো. আহাদ আলীফ (১৯), গোপাল ত্রিপুরা (২২), আবরার হান্নান (১৯), মোহাম্মদ জুবাইরুল ইসলাম (২০), সুব্রত বড়ুয়া (২১) সহ মোট ৬ জন, আমিন কলোনি এলাকা থেকে রশিদ গ্রুপের প্রধান মো. হারুনুর রশিদ (২১), একই থানাধীন আকবর টিলা পূর্বাঞ্চল হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে রুবেল গ্রুপের প্রধান মো. রবিউল আওয়াল রুবেল (২৩), মো. মুন্না (২২), মেহেদী হাসান মুন্না (২০), মো. মনির (২০), ফারহাদ (২৪), আসিফ (২২), রাশেদ প্রকাশ রাসেল (২০) সহ ৭ জন, বাকলিয়া থানাধীন এক্সেস রোড এলাকা থেকে ইউসুফ গ্রুপের প্রধান মো. ইউসুফ (২১), এমরান সেকান্দার আলী এবং মো. মনির উদ্দিন (২৫) সহ ৫ জন এবং পাহাড়তলী থানাধীন সাগরিকা মোড় এলাকা থেকে সাদ্দাম গ্রুপের প্রধান মো. রকিবুল হোসেন (২৬), মো. সাব্বির হোসেন (২০), মো. আলা উদ্দিন (২০), মো. মাসুদুর রহমান অপু (২৬), মোঃ রায়হান (২২), মো. জাকির হোসেন (৩০)কে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার বলেন, গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাং গ্রুপ সাধারণত চট্টগ্রাম মহানগরী এবং ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়ভাবে রাস্তায় সংঘবদ্ধ হয়ে মারামারি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ইভটিজিং, প্রভাব বিস্তার করাসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত।
এছাড়াও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে স্থানীয় এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, নিজেদের মধ্যে মারামারি, অন্য সাধারণ কিশোরদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন এবং মাদক সেবন করে বলে তারা জানায়। অধিকাংশ কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার পেছনে স্থানীয় এলাকার একটি চক্রের মদদ রয়েছে।
তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া, আকবারশাহ, চান্দগাঁও এবং পাহাড়তলী থানায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এবং নাশকতা সংক্রান্ত ৮টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত কিশোরদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা রয়েছে বলে জানান তিনি।