স্বাধীনতা পূর্ববর্তী পাকিস্তানি শাসন আমলে জাতীয় আইন পরিষদের সদস্য এবং স্বাধীনতা পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশের ফটিকছড়ি আসনে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে অনেকেই ছিলেন।
জানা যায়, ১৯৪৬-৫৪ সালে খান বাহাদুর ফরিদ আহমদ চৌধুরী, ১৯৬২-৬৪ সাল পর্যন্ত বিশিষ্ট বাঙালি মুসলিম শিল্পপতি একে খান, ১৯৫৪-৫৮ সালে বিশিষ্ট আলেম মওলানা ওবায়দুল আকবর, ১৯৫৪-৫৮ সালে প্রবীণ রাজনীতিবিদ শ্রী পূর্ণেন্দু দস্তিদার, ১৯৬২-৬৫ ও ১৯৬৫-৭০ সাল পর্যন্ত বিশিষ্ট বাঙালি শিল্পপতি মির্জা আবু আহমদ, ১৯৭০-৭৩ সাল পর্যন্ত প্রবীণ রাজনীতিবিদ ফজলুল হক বিএসসি ও ১৯৭০-৭৩ সাল পর্যন্ত মির্জা আবু মনসুর সাংসদ বা জাতীয় আইন পরিষদের সদস্য ছিলেন।
১৯৭৩-৭৫ ও ১৯৮৬-৮৭ সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন নুরুল আলম চৌধুরী। তিনি ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ফটিকছড়ি আসনে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯-৮২ সাল পর্যন্ত ছিলেন বিএনপি প্রার্থী জামাল উদ্দীন আহমদ। তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন।
১৯৮৮-৯০ সাল পর্যন্ত জাসদের (রব) মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী।১৯৯১-৯৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে এবং ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী সংসদ নির্বাচিত হন।
১৯৯৬-২০০০ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগ প্রার্থী আলহাজ্ব রফিকুল আনোয়ার সাংসদ ছিলেন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও তিনি পুনরায় ফটিকছড়ি থোকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়।
২০০৮ সালে বিএনপি প্রার্থী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পুনরায় সাংসদ নির্বাচিত হন আলহাজ্ব নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। তিনি বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন। আওয়ামীলীগের শরীক দল হিসেবে গত দুইবারের সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
মহিলা সাংসদ
১৯৯৬ সালে জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে ফটিকছড়িসহ চট্টগ্রাম উত্তর মহিলা আসনে মহিলা এমপি নির্বাচিত হন আলহাজ্ব নুরী আরা ছাফা।
পরবর্তী সংরক্ষিত আসনে মহিলা এমপি ছিলেন আওয়ামীলীগ নেত্রী সাহেদা তারেক দীপ্তি ও আওয়ামীলীগ নেত্রী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনে লড়ছেন ৮ প্রার্থী। এতে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি নৌকা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসাইন মো. আবু তৈয়ব তরমুজ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি)শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ একতারা, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মীর মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম চেয়ার ,বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের
মুহাম্মদ হামিদ উল্লাহ্ মোমবাতি, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিউল আজম চৌধুরী লাঙ্গল, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান ঈগল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন ফুলকপি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের (বিটিএফ)চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ফুলের মালা প্রতীকে প্রচারণা চালালেও পরবর্তী তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
ফটিকছড়ির আসনে এবারে ভোটার সংখ্যা ৪,৫৬,৪৯০ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২,৩৯,৯০৪ জন। মহিলা ভোটার ২,১৬,৫৮৩ জন। হিজড়া ভোটার ৩ জন।
১৪২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২২ কেন্দ্রকে অধিক ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর, মনোনয়ন যাচাই বাছাই করা হয় ১-৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানির তারিখ ছিল ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া ১৮ ডিসেম্বর।
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ফটিকছড়ি আসন থেকে জাতীয় সংসদে কে যাচ্ছেন। এ ভাগ্যবানের জন্য ওইদিন ভোট গননা পর্যন্ত অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে।