চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সময়ে এসে বিরামহীন প্রচারণা করছেন প্রার্থীরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গণসংযোগ ও পথসভার মাধ্যমে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। এসময় প্রার্থীরা দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে শেষ মুহূর্তে চলছে জমজমাট প্রচারণা। এ আসনে সর্বমোট ৯ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করছেন।
কোথাও হেঁটে হেঁটে, আবার কোথাও গাড়িতে ভোটারদের বাড়ি যাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রার্থী ছাড়াও ভোটের মাঠ সরগরম রেখেছেন, নেতাকর্মী, তাঁদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনরা। তারাও নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বলতে গেলে জমে উঠেছে ভোটের মাঠে প্রচারযুদ্ধ। গণসংযোগ থেকে শুরু করে পোস্টার-ব্যানার সাঁটানো, মাইকিং এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন প্রার্থীরা।
আওয়ামীলীগের খাদিজাতুল আনোয়ার সানি নৌকা প্রতীক নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁর প্রচারণার অন্যতম আকর্ষণ নৌকা আকৃতির গাড়ি করে নির্বাচনী প্রচারণার মাইকিং।
প্রচারণার শেষ সময়ে তিনি ফটিকছড়ি পৌরসভা, নাজিরহাট পৌরসভা, নানুপুর, আজাদীবাজার সুন্দরপর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন। এ সময় তিনি নিরাপদ ফটিকছড়ি গড়ে তুলতে নৌকা প্রতীকে ভোট কামনা করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা এইচ এম আবু তৈয়বও তরমুজ মার্কা প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন। তিনি প্রচারণার শেষে সময়ে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও পথসভা করেন। তিনি নির্বাচিত হলে অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ফটিকছড়ির উন্নয়নে কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারীও একতারা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। শেষ সময়ে তিনি বাগানবাজার, নারায়নহাট, সমিতিরহাট, সুয়াবিল, খিরাম, আজাদীবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও পথসভা করেন। এসময় তিনি ফটিকছড়ির উন্নয়নের রূপরেখা প্রকাশ করে স্মার্ট ফটিকছড়ি গড়ে তোলার জন্য একতারা মার্কায় ভোট কামনা করেন।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা মো. শাহজাহান ঈগল, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এর প্রার্থী মুহাম্মদ হামিদ উল্লাহ মোমবাতি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী মীর মুহাম্মদ ফেরদৌস চেয়ার, জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী লাঙ্গল, স্বতন্ত্র প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী ফুলকপি মার্কা প্রতীক নিয়ে শেষ সময়ে এসে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। তারাও নির্বাচিত হলে ফটিকছড়ি উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
তবে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যন ফুলের মালা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর পক্ষে প্রচারণা চালালেও বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এদিকে প্রচারণার অংশ হিসেবে প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়ে ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ও অলি-গলি। চলছে গান শ্লোগান মাইকিং। প্রার্থীদের পক্ষে তাদের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভোটাররাও নানা হিসাব কষছেন কোন প্রার্থী জিততে পারেন, কে জিতলে ভাল হবে। মূলত এসব বিষয় নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা জল্পনা কল্পনা।সবমিলিয়ে উপজেলা জুড়ে নির্বাচনী আমেজ।
ফটিকছড়ির আসনে এবারে ভোটার সংখ্যা ৪,৫৬,৪৯০ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২,৩৯,৯০৪ জন। মহিলা ভোটার ২,১৬,৫৮৩ জন। হিজড়া ভোটার ৩ জন। ১৪২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২২ কেন্দ্রকে অধিক ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর, মনোনয়ন যাচাই বাছাই করা হয় ১-৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানির তারিখ ছিল ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া ১৮ ডিসেম্বর।
আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।