চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ৫ জন প্রবাসীকে সম্মাননা ও সিআইপি (কমার্শিয়াল ইম্পরট্যান্ড পারসন) কার্ড প্রদান করা হয়েছে। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিশ্ব প্রবাসী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ফটিকছড়ির ৫ জনসহ দেশের মোট ৮০ জনকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
এদের মধ্যে তিনজন-হাজী সিরাজুল হক, মোসলেহ উদ্দিন ও কবির আহমেদ ওমান এবং সৈয়দ মামুনুর রশিদ আরব আমিরাত ও মো. ইমরান হোসেন পোল্যান্ড প্রবাসী।
গত ২০ ডিসেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সিআইপি মনোনীত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করে।
২০২৩ সালের জন্য তিন ক্যাটাগারিতে বিভিন্ন দেশে থাকা ৭০ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে সিআইপি নির্বাচিত করে তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়। বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর তালিকায় ২০ জনই চট্টগ্রামের বাসিন্দা।
এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রামের আরও দুজন সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন। চট্টগ্রামের মধ্যে সর্বাধিক সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন ফটিকছড়ি থেকে।
সিআইপি নির্বাচিত ফটিকছড়ির হাজী সিরাজুল হক ওমানের মাস্কাটে আবু আলী ট্রেডিংয়ের কর্ণধার।
তিনি নাজিরহাট পৌরসভার পূর্ব ফরহাদাবাদের ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মরহুম আহমদ ছাপা ও মরহুমা লায়লা বেগমের সন্তান।
হাজী সিরাজুল হক একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও দানবীর। তিনি বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাব এর সম্মানিত ক্রীড়া সম্পাদক ও মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় পর্ষদের সদস্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন।
মোসলেহ উদ্দীন ওমানের আলী এন্ড ইউসুফ ট্রেডিং কোম্পানির কর্ণধার । তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুরের বাসিন্দা শাহাব উদ্দীন ও সেলিনা আক্তারের সন্তান।
কবির আহামদ ওমানের রুই আল হামরিয়ার আল বুস্তান ওয়ান্ডারফুল ট্রেডিং কোম্পানির কর্ণধার । তিনি লেলাং ইউনিয়নের দক্ষিণ গোপালঘাটার বাসিন্দা মফজল আহামদ ও মোমেনা খাতুনের সন্তান।
সৈয়দ মামুনুর রশিদ দুবাইয়ের দেইরা ইমন অপটিক্যাল এলএলসির কর্ণধার । তিনি নানুপুরের বাসিন্দা সৈয়দ ওসমান গণি ও জাহানার বেগমের সন্তান।
ইমরান হোসেন পোল্যান্ডের ম্যালোপোলস্কির ব্যবসায়ী । তিনি রোসাংগিরির ইউনিয়নের বাসিন্দা হাঁছি মিয়া ও সালমা বেগমের সন্তান।
যেসব সুবিধা পান এনআরবি-সিআইপিরা
নির্বাচিত সিআইপিদের (এনআরবি) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সরকার অনুমোদিত পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। সিআইপি কার্ডের মেয়াদ থাকাকালীন তাঁরা বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশপত্র পান এবং সরকার নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট বিষয়ক নীতিনির্ধারণী কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। সিআইপিরা দেশ-বিদেশে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অগ্রাধিকার পান।
এছাড়া জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে বিদেশে থাকা বাংলাদেশ মিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পান তাঁরা। সড়ক, বিমান, নদীপথে ভ্রমণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকিট পাবেন। হোটেল-রেস্তোরাঁয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা পাবেন। বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ চামেলী ব্যবহার এবং স্পেশাল হ্যান্ডলিং ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
সিআইপিরা স্ত্রী-স্বামী, নির্ভরশীল পুত্র-কন্যা ও নিজেদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কেবিন সুবিধা পাবেন। তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মতো সুযোগ-সুবিধা পাবেন এবং তাদের বিনিয়োগ ‘ফরেন প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট (প্রমোশন অ্যান্ড প্রটেকশন) আইন, ১৯৮০’ এর বিধান অনুযায়ী সংরক্ষণ করা হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশে থাকলে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে এবং সিটি করপোরেশন আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন সিআইপিরা।