সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বপ্রথম টানেল নির্মাণ করেছেন এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও গৌরবের। সত্যি বলতে গেলে এতদিন আমরা অন্ধকারেই ছিলাম।
কর্ণফুলীর নদীর এক পাড়ে আলোয় ঝলমল করা রঙিন শহর আর অন্য পাড়ে মানুষ উল্টো অন্ধকারে নিমজ্জিত। একপাড়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড চট্টগ্রাম বন্দর। অন্যপাড়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত কর্ণফুলী-আনোয়ারার গ্রাম। এ নিয়ে আমরা হতাশার মধ্যেই ছিলাম কিন্তু এশিয়ার লোহমানবী খ্যাত বাংলাদেশের উন্নয়নের কাণ্ডারি, দরদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ করে চট্টগ্রামবাসী বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের সেই আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছেন-এই অনুভূতি অত্যন্ত আনন্দের, অত্যন্ত ভালো লাগার। কারণ এই টানেল নির্মাণ হওয়ায় এর বেশিরভাগ সুফল ভোগ করবে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী।
২০০৮ সালে চট্টগ্রামের এক জনসভায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব আমি আমার নিজের কাঁধে নিলাম’ এরপর থেকে তিনি তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দিয়ে ওয়াদা রক্ষা করেছেন যার সর্বশেষ সংযোজন বঙ্গবন্ধু টানেল। তার এই বিশাল কর্মযজ্ঞের আরেকটি মাইলফলক কাজ এলিভেটেড এক্সপ্রেস রোড, যেটি প্রায় শেষের পথে। একজন চট্টগ্রামবাসী হিসেবে এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামবাসীর প্রতি খুবই আন্তরিক। বিশেষ কোনো কারণে তিনি চট্টগ্রামবাসীকে আলাদা চোখে দেখেন বলে আমি মনে করি। তার ফলস্বরূপ তিনি বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামে একের পর এক উন্নয়নের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রামে বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এক সময় দক্ষিণ চট্টগ্রামে যাওয়ার একমাত্র পথ ছিল শুধুমাত্র কালুরঘাট সেতু। পরে এরশাদ সরকারের আমলে একটা কাঠের সেতু তৈরি করা হলে কালুরঘাট সেতুর উপর কিছুটা চাপ কমে। কিন্তু এটি নড়বড়ে বিধায় সেখানে আরেকটি সেতু স্থাপনের দাবি উঠে। পরে সেটি বাস্তবায়নও হয় কিন্তু তারপরেও কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ের মানুষ যোগাযোগের ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল। সেটা অনুধাবন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর টানেল নির্মাণ করেছেন। যদিও এই টানেল কক্সবাজার মহেশখালী মাতারবাড়িতে নির্মিত গভীর সমুদ্র বন্দরের সাথে সংযুক্ত হবে। তবে সেটাও এই এলাকা দিয়ে হওয়ায় এখানকার মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব বিপ্লব ঘটবে।
বঙ্গবন্ধু টানেল কর্ণফুলী, আনোয়ারা, বাঁশখালী ও চন্দনাইশে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাবে। এসব এলাকায় নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। এলাকার ছেলেমেয়ে, নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হবে।
কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল নির্মাণ চট্টগ্রামবাসীর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপহার। এটা নির্মাণ করে তিনি চট্টগ্রামবাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মত নেত্রী প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে দ্বিতীয়টি আর আসবে কিনা সন্দেহ। তিনি সারা বিশ্বের বিস্ময় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি এদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেছেন।
এখন প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করা। দেশের একজন নাগরিক, চট্টগ্রামবাসী, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমরা ধন্য। আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা করি, ফরিয়াদ করি, তিনি যেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সুস্থতা দান করেন। আমি তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
আলহাজ এম এ মারুফ: সাবেক ছাত্রনেতা,
সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগ, কর্ণফুলী