চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নারায়নহাট ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের চাঁদপুর টিলাপাড়ার মৃত আলী নওয়াবজানের পুত্র মোহাম্মদ আলী হোসেন নামে এক রিকশাচালক।শুক্রবার ( ১৫ মার্চ) ফটিকছড়ি সদরস্থ একটি রেস্টুরেন্টে হারুন গংয়ের বিরুদ্ধে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠে আলী হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে জীবিকা নির্বাহের জন্য চট্টগ্রাম শহরে রিকশা চালাই। রিকশা চালিয়ে আমি আমার ৪ সন্তানকে স্নাতক পাস করিয়েছি। বর্তমানে আমার এক ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, আমার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা মৃত দেলা মিয়ার পুত্র হারুন দীর্ঘদিন ধরে আমাকে মানসিক এবং শারিরীকভাবে নির্যাতন করে যাচ্ছে। সর্বশেষ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আমার বসতঘরের উত্তর পাশে নিজ পুকুরে গোসল করার জন্য যায়। গোসল শেষে কাপড় পরিধান করার সময় হারুন গং পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দা, চুরি, লাঠিসোটা নিয়ে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে মারতে আসে। এসময় আমি প্রাণ রক্ষার্থে দৌঁড়ে পার্শ্ববর্তী মো. হাসেমের বাড়িতে আশ্রয় নিলে মো. হারুন সেখান থেকে আমাকে টানাহেচড়া করে বের করে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে হত্যার উদ্দেশ্যে পাহাড়ি জঙ্গলের দিকে নিয়ে গেলে আমি চিৎকার দিলে তা শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে আসেন। এরপর তারা জঙ্গলে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়ে আমাকে গাছের সাথে প্রকাশ্যে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। এসময় আমার কন্যা রুমা আকতার জরুরি সেবা ৯৯৯-এ
ফোন দিলে ভুজপুর থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে। তার আগে আসামিরা আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। উদ্ধার করার পর আমি ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করি।
মোহাম্মদ আলী হোসেন আরও বলেন, ঘটনার পরদিন (২৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হয়ে আমি মামলা দায়ের করি। এই খবর পাওয়ার পর ওই দিন সন্ধ্যায় মো. হারুন ও তার ছেলে মো. ওসমান আমার বসতভিটায় এসে আমার কাছে ৩ লাক টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় তারা আরও হিংস্র ও বেপরোয়া হয়ে উপরোক্ত ঘটনা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি ও আইন আদালতের আশ্রয় নিলে শেষ বয়সে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং এখনো তা অব্যাহত রেখেছেন। এতে আমি ও আমার পরিবার চরম ভয় ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।
এমতাবস্থায় আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে উল্লেখিত ঘটনার বিচার চাই এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সংবাদ সম্মেলনে মায়া রানি মজুমদার নামের এক বৃদ্ধাও হারুন গংয়ের বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগ করেন। এসময় তারা জানান, হারুন গং আরো অনেকজনকে নির্যাতন করলেও প্রাণনাশের ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। এলাকায় মাটি কাটা, বালি পাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত এই হারুণ গং।