চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সন্ধ্যা নামতেই নির্বিচারে মাটি কেটে পাহাড় ধ্বংস করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে সংঘবদ্ধ মাটিখেকো চক্র। তারা অবৈধভাবে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে। ‘আধা সরকারী বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষেধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ’- বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও আইন ও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব মাটি বাড়ি-ভিটে, নিচু জমি, পুকুর ভরাটসহ ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাতাদের নিকট বিক্রয় করছে।
সংঘবদ্ধ পাহাড় ধ্বংসকারী মাটিখেকোরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি এড়াতে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাটি কাটছে। কোথাও কোথাও বন বিভাগের পরোক্ষ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের প্রত্যক্ষ যোগসাজশে উঁচু নিচু পাহাড় কেটে বসতি গড়ে তুলছে। এতে করে ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতির খুঁটি খ্যাত পাহাড়, ছোট বড় টিলা। হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র।
বাঁশখালীর পূর্ব পুঁইছড়ি, পুর্ব চাম্বল, বৈলছড়ী ইউনিয়নের ধুইল্যাঝিরি ও পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে বেশ কয়েকটি সক্রিয় চক্র এই অবৈধ মাটি ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, পূর্ব চাম্বলের বড়বিল, ছোটবিল, সত্তইজ্যাকাটা, বৈলছড়ীর ধুইল্যাঝিরি এলাকায় পাহাড়ের বিশাল অংশ কেটে মাটি বিক্রি করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সত্তইজ্যাকাটার জনৈক ব্যক্তি বলেন, সন্ধ্যা হলে স্কেভেটর দিয়ে কেটে ডাম্পারে করে মাটি নিয়ে যায়। সত্তইজ্যাকাটার কর্তনকৃত পাহাড়টি ফজল করিমের খতিয়ানভুক্ত পৈত্রিক সম্পত্তি বলেও জানায়।
অপরদিকে, বৈলছড়ীর ধুইল্যাঝিরি এলাকার পাহাড়ি সরু পথ প্রশস্ত করে ডাম্পার, ট্রাক, মিনি ট্রাক চলাচলের উপযোগী করে রাতের আঁধারে মাটি কাটছে ভুমিদস্যুরা। এলাকাভিত্তিক সংঘবদ্ধ চক্র পাহাড়ের মাটি কাটার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল খালেক পাটোয়ারী বলেন, পাহাড় কাটার খবর পেয়ে ইতিমধ্যে অভিযান পরিচালনা করে চাম্বল ও পুইছড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে জরিমানা করা হয়েছে। তবে অধিকাংশ স্থানে প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে সটকে পড়ে ভুমিখেকোরা। পরে পুনরায় রাতের আধাঁরে ওখানে মাটি কাটা হচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি।
তিনি বলেন, তবে এখন পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বন বিভাগের কর্মরতদের থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিরা সক্রিয় না হলে পাহাড় ধ্বংস ও মাটি কাটা রোধ করা কঠিন হবে। এছাড়াও বন বিভাগের কর্মকর্তাদেরও সচেতন হতে হবে।