সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২, ১২ জিলহজ, ১৪৪৬

জালালাবাদের যুদ্ধে চট্টল বিপ্লবীদের কাছে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ বাহিনীর পরাজয়

৩০-এর ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার (দামপাড়া, বর্তমানে পুলিশ পাহাড়) দখলের পর ইস্টার্ন রিপাবলিকান আর্মির সদস্যরা অস্ত্রাগারের সম্মুখে সমবেত হয়ে ভারতের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করেন এবং মাস্টারদা সূর্যসেনকে সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করে অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার গঠন করেন। যুববিদ্রোহের জিওসি গণেশ ঘোষ ও প্রধান সেনাপতি অনন্ত সিং তখনো শহর থেকে ফিরে আসেননি। অস্ত্রাগারে অগ্নিসংযোগ করতে গিয়ে মারাত্মকভাবে অগ্নিদগ্ধ হিমাংশুকে চিকিৎসা জন্য তাঁরা গাড়ি নিয়ে শহরে গিয়েছিলেন। মাস্টারদার কাছে তাঁদের প্রয়োজন ছিলো। পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে চিন্তাভাবনা করছিলেন মাস্টারদা, অম্বিকা চক্রবর্তী, লোকনাথ বল প্রমুখ।
বিপ্লবীদের বিদ্রোহের মূল লক্ষ্য ছিল অপ্রত্যাশিত অকস্মাৎ আক্রমণে সাম্রাজ্যবাদী প্রশাসনযন্ত্র বিকল করে দেওয়া এবং স্বল্পদিনের জন্য হলেও রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে একটি বিকল্প স্বাধীন বিপ্লবী সাময়িক সরকারের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা ও ঐ সরকারের রক্ষার জন্য প্রতিটি দেশপ্রেমিক বিদ্রোহীর প্রাণপণ করে সংগ্রাম করে যাওয়া ও শেষ পর্যন্ত প্রাণ বিসর্জন দেওয়া। ঐ বিকল্প সাময়িক বিপ্লবী সরকার শেষ পর্যন্ত কিছুতেই রক্ষা করা যাবে না-এ কথা বিদ্রোহীরা সঠিকভাবে জানতেন এবং বুঝতেন। তাই সেই সরকার রক্ষার জন্য সংগ্রাম করে যাওয়ার অর্থ সুনিশ্চিত ও অবধারিত মৃত্যু-এ কথাও তাঁরা খুব ভাল করেই জানতেন এবং সেই ভাবে নিজেদের প্রস্তুত করেছিলেন। মৃত্যুই ছিল সুনিশ্চিত লক্ষ্য; সেই জন্য চট্টগ্রামের বিপ্লবী দল সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জাতীয় মুক্তি অর্জনের যে কর্মসূচী গ্রহণ করেছিলেন এক কথায় তাকে তাঁরা বলতেন ‘মৃত্যুর কর্মসূচী’ (চৎড়মৎধসসব ড়ভ ফবধঃয)।
চট্টগ্রামের বিপ্লবীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ এবং মৃত্যুর কর্মসূচী নিয়েছিলেন দেশের জনগণের কাছে শুধুমাত্র একটি সম্ভাব্য এবং অর্জনীয় আদর্শ স্থাপন করবার জন্য। একটি স্থান সামরিকভাবে সাম্রাজ্যবাদের কবলমুক্ত হলেই সমগ্র ভারতবর্ষ মুক্ত হয়ে যায় না সত্য; কিন্তু একটি স্থানের বীরত্বপূর্ণ একটি ঘটনা দেশের সমগ্র যুবশক্তিকে না হলেও যুবশক্তির একটি বড় অংশকে ঐ দৃষ্টান্ত অনুসরণে অনুপ্রাণিত করবে; বিদ্রোহের ঐ পথ গ্রহণে অবশ্যই উদ্বুদ্ধ করবে। এই ছিল বিপ্লবীদের আশা।
মাস্টারদা অনন্ত সিং ও গণেশ ঘোষের সন্ধান এবং অন্যান্য খবর আনতে সমরেন্দ্র নন্দী ও দীপ্তিমেধা চৌধুরীকে দায়িত্ব দিলেন।
নির্দিষ্ট সময়ে রাত আটটায় শত চেষ্টা করেও অমরেন্দ্র নন্দী ও দীপ্তিমেধা চৌধুরী নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছাতে পারেননি। শত্রæসেনা পরিবেষ্টিত চট্টগ্রাম শহরে অসংখ্য বাধা। অনন্ত সিং-দের খবর সংগ্রহ করাও সম্ভব হয়নি। শত্রæসেনার গতিবিধির খবরই তাঁরা জেনেছেন। ওদিকে অনন্ত সিংহরা যখন গভীর রাতে দামপাড়ায় নির্দিষ্ট স্থানে তাঁরা পৌঁছালেন বিপ্লবীদল আর সেখানে ছিল না। তাঁরা মূল দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন।
সেখানে থাকা আর সমীচীন মনে না করে মাস্টারদা সবাইকে নিয়ে উত্তর দিকের পাহাড় অভিমুখে রওনা হন। চলার পথে সম্মুখে যে পাহাড় পেলেন, সেটিতেই তারা উঠে গেলেন। সেটি জালালবাদ পাহাড়।
জানা গেল শহরে মিলিটারী সৈন্য এসে গেছে। বিপ্লবী-বাহিনীকে এখন অনেক বেশি শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে। যুদ্ধ সুনিশ্চিত। তরুণ বিপ্লবীদের ‘সকলের মনে একই কথা-এক মুহূর্ত বিলম্ব নয়। আক্রমণই এই অবস্থায় প্রকৃষ্ট পন্থা।
এই তরুণ বিপ্লবীরা জানতেন, প্রবল শক্তিশালী শত্রæর বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিণতি সুনিশ্চিত মৃত্যু। বিকল্পে আত্ম-সমর্পণ। ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ভারতের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দেবেন এই তো তাঁদের স্বপ্ন। মাষ্টারদা সকলকে ডেকে সবার কাছে দুটি প্রস্তাব রাখলেন। প্রথম, শত্রæর প্রবল সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধে প্রাণ দিয়ে স্বাধীনতার রক্তসৌধ নির্মাণ করা। দ্বিতীয়, যুদ্ধ পরিহার করে আত্মগোপন করা এবং সময় ও সুযোগ নিয়ে শত্রæকে অতর্কিতে আক্রমণ করে ব্যতিব্যস্ত করা।
যারা দ্বিতীয় প্রস্তাব মেনে নিতে চায় তারা যেন সংকোচ না করে। সকলকে ডেকে আবার বললেন-যারা পুলিশের নজরে নেই তারা নিজ নিজ বাড়িতে চলে যেতে পারে। তাদের কাজ হবে বিপ্লবী সংগঠনের কাজ শক্তিশালী করা। বলাবাহুল্য শুধু শহরে যাঁদের পাঠানো হয়েছিল তাঁরা ছাড়া আর সকলেই রয়ে গেলেন।
অস্ত্রাগার দখল করে বিদ্রোহীরা পেয়েছিলেন প্রচুর পরিমাণে মাস্কেট রাইফেল এবং তার গুলি। মাস্কেট রাইফেল অপেক্ষা বহুগুণে শ্রেষ্ঠ ফৌজী রাইফেলের (৩০৩ রাইফেল) গুলি বিদ্রোহীরা পাননি; তাই বহু পরিমাণে ফৌজী রাইফেল পেলেও সেগুলি বিদ্রোহীদের কোন কাজে লাগেনি।
আসন্ন আক্রমণকারী সাম্রাজ্যবাদী সৈন্যদের কাছে থাকবে ফৌজী রাইফেল এবং মেশিনগান। বিদ্রোহীবাহিনীর হাতে আছে কেবলমাত্র মাস্কেট রাইফেল। এই নিকৃষ্ট ধরণের অস্ত্র নিয়েও সাম্রাজ্যবাদী ফৌজের বিরুদ্ধে কিছু পরিমাণে দৃঢ় প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে যদি আসন্ন সংঘর্ষের সময় কোন একটি উঁচু পাহাড়ের উপর বিদ্রোহীরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। এই কথা বিবেচনা করেই জালালবাদ পাহাড়ে জড়ো হয়েছিলেন।
জালালাবাদ একটি ছোট অনুচ্চ পাহাড়, বোধহয় ২০০ ফুটের বেশি উঁচু হবে না। পাহাড়ি চট্টগ্রাম শহর থেকে ৫/৬ মাইল দূরে। জালালাবাদ পাহাড়ে বড় গাছপালা নেই, আছে ঝোপ-ঝাড়, লতাগুন্ম । পাহাড়ের উপরে কোথাও ছায়া নেই। তাই দিন বেড়ে যাওয়ার সাথেসাথে যেমন গরম অসহনীয় হয়ে উঠল ঠিক তেমনি তৃষ্ণার কষ্টও প্রায় সহ্যের বাইরে চলে গেল। পাহাড়ের সম্পূর্ণ উপর অংশটায় বিপ্লবী বাহিনীর সকলে ছড়িয়ে আছে। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে সবাই তখন বিশ্রাম করছে জালালাবাদ পাহাড়ে। সেদিন জালালাবাদ পাহাড়ে ছিল সুরেশ দে, বিনোদ চৌধুরী, জিতেন দাশগুপ্ত, দ্বিজেন দস্তিদার, নিরঞ্জন রায়, শৈলেশ্বর চক্রবর্তী, কৃষ্ণ চৌধুরী, বিনোদ দত্ত, সরোজ গুহ, কালী দে, মধুসূদন দত্ত, ননী দেব, ক্ষীরোদ ব্যানার্জী, হেমেন্দু দস্তিদার, কালী চক্রবর্তী, অর্ধেন্দু দস্তিদার, রণধীর দাশগুপ্ত, সহায়রাম দাস, মতি কানুনগো, বিধু ভট্টাচার্য, নারায়ণ সেন, পুলিন ঘোষ, মহেন্দ্র চৌধুরী, নির্মল লালা, বীরেন্দ্র দে, বিজয় সেন, নিতাই ঘোষ, অশ্বিনী চৌধুরী, বনবিহারী দত্ত, শশাঙ্ক দত্ত, সুবোধ বল, শান্তি নাগ, ফণীন্দ্র নন্দী, হরিপদ মহাজন, ভবতোষ ভট্টাচার্য, সুধাংশু বোস, সুবোধ চৌধুরী, বিধু সেন, সুবোধ রায়, ত্রিপুরা সেন, মনোরঞ্জন সেন, দেবপ্রসাদ গুপ্ত, টেগরা, রজত সেন আর স্বদেশ রায়। সর্বোপরি ছিলেন সর্বাধিনায়ক মাষ্টারদা, অম্বিকাদা, নির্মলদা আর লোকাদা, নরেশ রায়, প্রভাস বল ও সীতারাম বিশ্বাস ।
বৈশাখ মাস, তখন দুপুর পেরিয়ে গেছে; সকলেই ভাবছে কখন সন্ধ্যা হবে, দু’জন মানুষকে এমন সময়ে হঠাৎ শুনলাম কখন শহরের ঢুকব। সন্দেহজনকভাবে আশেপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখেছে বিপ্লবী দলের প্রহরারত তরুণেরা। এই খবর শুনে মাষ্টারদা বললেন তাদের হয়তো পাঠিয়েছে আমাদের খোঁজ-খবর নিতে। মাষ্টারদা সবাইকে সতর্ক হয়ে থাকতে এবং সবদিক নজর রাখতে বললেন।
২২ এপ্রিল, ১৯৩০। বিকেল চারটার সময় বিপ্লবীদের সন্ধান পেল সরকারী সৈন্যবাহিনী জালালাবাদের পাহাড়ে।
যুদ্ধ আসন্ন জেনে মাষ্টারদা লোকনাথ বলকে দিলেন এ যুদ্ধের প্রধান পরিচালকের ভার। সৈন্য অদূরে, শুকনো একটি নালায় অপেক্ষা করছে। বিপ্লবীদের দেখা মাত্র তারা রাইফেলের সঙ্গীন উচিয়ে খাড়া পাহাড়টি চড়বার চেষ্টা করল। এই আক্রমণের প্রচেষ্টা তাদের পক্ষে ছিল অসুবিধাজনক। কারণ বিপ্লবী সৈন্য উপরে আর বৃটিশ সৈন্য পাহাড়ের নিচে।
একমাত্র পুঁথিগত বিদ্যা ছাড়া যুদ্ধের নিয়মকানুন বিপ্লবীদের বিশেষ জানা ছিল না। তা সত্বেও মাষ্টারদার আস্থার পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছিলেন লোকনাথ বল। বার বার তিনবার জালালাবাদের চ‚ড়ায় শত্রæদের আরোহণ করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিলেন বিপ্লবী সেনাদল। শত্রæপক্ষের হতাহতের সংখ্যা জানা না গেলেও নিঃসন্দেহে অনুমান করা যায় শত্রæসেনার হতাহতের সংখ্যা নগণ্য নয়।
বেলা তিনটে বেজে গেছে। দূরে দেখা গেল শহরের দিক থেকে ধোঁয়া ছেড়ে একখানা ট্রেন আসছে। ট্রেনখানি কিন্তু সোজা চলে গেল না, কিছু দূরে গিয়ে ট্রেনখানা থামল, ঐখানে আশেপাশে কোন রেলস্টেশন নেই। যে জায়গাটিতে ট্রেনখানি থামল সেই জায়গাটি খুব ঘন গাছপালা এবং জঙ্গলের আড়ালে বলে পাহাড়ের উপর থেকে কিছু দেখা গেল না। ঐ জায়গায় ট্রেনখানি থেমে যাওয়ায় সকলের মনেই দৃঢ় সন্দেহ হল ঐ ট্রেনখানি হয়ত শহর থেকে অনেক সাম্রাজ্যবাদী ফৌজ নিয়ে এসেছে। অল্প কিছুক্ষণ পরে দেখা গেল দূরে- একটি মানুষ একখানা রুমাল উঁচুতে তুলে ধরে আন্দোলিত করে অন্য কাউকে কিছু সংকেত করছে। এইসবকিছু দেখে মাষ্টারদা বুঝলেন যে একটা গুরুতর কিছু হয়ত আসন্ন হয়ে উঠছে। তিনি সকলকে ডেকে খুব সতর্ক এবং প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিলেন।

লোকনাথ বল পাহাড়ের উপরিভাগের চারিদিকে গুরুত্ব ও প্রয়োজনানুসারে বিপ্লবী যুবকদের সংখ্যা এবং স্থান নির্দেশ করে দিলেন এবং আদেশ দিলেন প্রত্যেকেই যেন নিজের নিজের রাইফেল গুলি ভর্তি করে সর্বোতোভাবে প্রস্তুত হয়ে অপেক্ষা করে। লোকনাথ বলের কঠোর নির্দেশ দিলেন তাঁর দ্বিতীয় আদেশ ব্যতীত কেউ যেন গুলিবর্ষণ আরম্ভ না করে। মাষ্টারদা ও নির্মল সেন পাহাড়ের পিছন দিক অর্থাৎ যে দিক থেকে আক্রমণ আসন্ন বলে মনে হচ্ছিল তার বিপরীত দিক লক্ষ্য রাখবার দায়িত্ব নিলেন।
লোকনাথ বলের এই নির্দেশের পর সকলেই নিজ নিজ রাইফেল গুলি ভর্তি করে উপুড় হয়ে মাটিতে শুয়ে পড়ল। মাথা উঁচুতে তুলে এবং রাইফেল সম্মুখের দিকে এগিয়ে দিয়ে, সকলেরই দৃষ্টি সম্মুখের নীচের দিকে।
কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা গেল নীচে থেকে শত্রæসৈন্য প্রায় সারিবদ্ধভাবে আমাদের ডানদিক থেকে এবং বাঁদিক থেকে উঠে আসবার চেষ্টা করছে। তাদের গায়ে সবুজ খাকী পোশাক নীচের গাছ-পালা ঝোপ-ঝাড়ের সাথে মিলে গিয়ে তাদের প্রায় অদৃশ্য করে ফেলেছে।
ইতিমধ্যে দেখা গেল শত্রæসৈন্য প্রায় অর্ধেকটা পাহাড়ে উঠে এসেছে। সকলেই খুব অধীর এবং অধৈর্য হয়ে উঠেছে গুলি ছোড়ার জন্য। হঠাৎ নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করে তীব্র তীক্ষèস্বরে শোনা গেল লোকনাথ বলের আদেশ, “হল্ট”; এর পরমুহূর্তেই তাঁর দ্বিতীয় আদেশ “ফায়ার”। সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত পাহাড় প্রকম্পিত করে এক সঙ্গে গর্জন করে উঠল প্রায় ৫০টি রাইফেল।
লোকনাথ বলের আদেশ পেয়ে প্রত্যেকটি বিপ্লবী যুবক যথা সম্ভব দ্রæত গুলিবর্ষন করতে আরম্ভ করল। সঙ্গেসঙ্গে লোকাদার ইঙ্গিতে প্রত্যেকেই “বন্দেমাতরম,” “ইনক্লাব জিন্দাবাদ”, “সাম্রাজ্যবাদ ধ্বংস হোক” প্রভৃতি রণধ্বনি যথাসম্ভব উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে তুলল। বিপ্লবীদের ঐ প্রচÐ গুলিবর্ষণের বিরুদ্ধে পাহাড়ের ঢালু জায়গায় শত্রæ সৈন্যরা কোনরূপ আশ্রয় অথবা আবরণ খুঁজে পেল না। কিন্তু তারাও আত্মরক্ষার তাগিদে রাইফেল উঁচুতে তুলে ধরে উপরের দিকে গুলি ছুড়তে আরম্ভ করল। মুহূর্ত পরে দেখা গেল তাদের অনেকে প্রাণ হারিয়ে, অনেকে গুরুতরভাবে আহত হয়ে গড়িয়ে নীচে পড়ছে। আর এক মুহূর্ত পরে তাদের অবশিষ্ট সকলে প্রাণপণে ছুটে নীচে চলে গেল এবং অদূরবর্তী একটি খাদের মধ্যে গিয়ে আশ্রয় নিল। ঘন জঙ্গলের আড়ালে থাকায় এই নীচু খাদটি উপর থেকে দেখা যাচ্ছিল না।
কয়েক সেকেÐ পরেই সেই খাদের দিক থেকে বিউগিলের আওয়াজ শোনা গেল ও ফৌজী সিপাই যে যেখানে ছিল সকলেই ছুটে সেই খাদের দিকে গেল। পাহাড়ের উপর থেকে বিপ্লবীদের প্রচÐ গুলিবর্ষণ কিন্তু তখনও চলছে।
সামান্য কয়েক মুহূর্ত পরে দেখা গেল শত্রæ সৈন্য সকলেই এবার রাইফেলের মাথায় বেয়নেট লাগিয়ে বেপরোয়াভাবে জোরে ছুটে পাহাড়ে উঠবার আর একবার চেষ্টা করছে। শত্রæসৈন্যর এই বেপরোয়া প্রচেষ্টা দেখে বিপ্লবী সকলের জিদও বহু শতগুণ বেড়ে গেল। তাদের সকলের চিৎকারের আওয়াজও আগের চাইতে অনেক তীব্র হয়ে উঠল। প্রত্যেকের গুলি-নিক্ষেপের পরিমাণও স্বাভাবিকভাবেই পূর্বাপেক্ষা অনেক বৃদ্ধি পেল।
কয়েক সেকেÐ মাত্র। মনেহয় দশ সেকেÐও নয়। বেতনভুক শত্রæ সৈন্যের সাহস ও জিদ নিঃশেষে ফুরিয়ে গেল। অনেকে প্রাণ হারিয়ে এবং অনেকে গুরুতরভাবে আহত হয়ে নীচে পড়ে গেল। বাকী সকলে পেছনে ফিরে প্রাণপণ দৌড়ে আবার সেই খাদের মধ্যে গিয়ে আশ্রয় নিল।
এবার শত্রæপক্ষ একেবারে চুপ করে গেল। বেশ কিছুক্ষণ সময় তাদের কোনরূপ চলাফেরা আর দেখা গেল না বা তাদের দিক থেকে কোনরূপ আওয়াজ শোনা গেল না।
একটু পরে শত্রæপক্ষের উদ্দেশ্য বোঝা গেল। অকস্মাৎ কিছু দূরের দুইটি বেশ উঁচু পাহাড় থেকে প্রবল বেগে বিপ্লবীদের পাহাড়ের উপর দুইটি মেসিনগানের গুলিবর্ষণ আরম্ভ হল। সঙ্গেসঙ্গে লোকাদার নির্দেশে আমাদের রাইফেলও আবার প্রচÐভাবে গর্জন করে উঠল। দুই পক্ষ থেকেই প্রচÐ গুলিবর্ষণ চলল আর সেই সাথে সাথে বিপ্লবীদের গগনবিদারী শ্লোগান চিৎকার।
অল্পক্ষণের মধ্যেই সরকার রণকৌশল বদলালো। জালালাবাদ পাহাড়ের বিপরীত দিকে অদূরে আর একটি পাহাড়ে সরকারের সৈন্যবাহিনী স্থান নিল। ক্যাপ্টেন টেট, কর্নেল ডালাস স্মিথ ও ক্যাপ্টেন লুইসের পরিচালনায় তিন দিক থেকে আক্রমণ শুরু হল।
কামানের গুলি জালালাবাদের পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। শুয়ে থাকা অবস্থায় বিপ্লবীদল গুলি চালাতে লাগলেন। অশান্ত, অধৈর্য বালক টেগরা উত্তেজনার বশে লোকনাথ বলের আদেশ ভুলে গেল। শত্রæকে গুলি করার জন্য উঠে দাঁড়াল। শত্রæর গুলি নিমেষেই এসে লাগল টেগরার বুকে। প্রচুর রক্ত-পাতে তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ল টেগরা। বিপ্লবী বাহিনীর সর্বময় কর্ত্তা বড়ভাই লোকনাথকে দেখে বলেছিল, ‘সোনাভাই, একটু জল।’ ইচ্ছে থাকলেও জল দিতে পারলেন না লোকনাথ। জল কারো কাছে নেই। তাছাড়া প্রতি মুহূর্ত তাঁর কাছে মূল্যবান। তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি কয়েকটি মুহূর্ত ছোট ভাইকে দেওয়া। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে টেগরা দাদাকে বলে ‘গেল, “সোনাভাই যুদ্ধ চালিয়ে যাও।”
এবার গুলি এসে লাগল ত্রিপুরার বুকে। ত্রিপুরার রক্তাক্ত দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেবুই (দেবপ্রসাদ গুপ্ত) দেখে-ছিল প্রথম। এরা দুজনে ছিল পরস্পরের অন্তরঙ্গ বন্ধু। যুবরিদ্রোহের কিছুদিন আগেই এই দুই বন্ধু পরস্পরের সঙ্গে ঝগড়া করেছিল। বাক্যালাপও বন্ধ করেছিল। বালক-সুলভ ঝগড়া। দেব, আশা করেছিল ত্রিপুরা আগে কথা বলবে। আর ত্রিপুরা চেয়েছিল দেবু আগে বলুক। যেমনটি হয়। বন্ধুর প্রতি প্রগাঢ় ভালবাসা যুদ্ধক্ষেত্রের বিধিনিষেধ দেবুকে ভুলিয়ে দিল। প্রচÐ গোলাবৃষ্টির মধ্যে হামাগুড়ি দিয়ে লোকনাথ বলের কাছে অনুমতি চেয়েছিল ত্রিপুরার মৃতদেহের কাছে যাবার। অনুমতি শুধু ত্রিপুরার কাছে গিয়ে একট, ক্ষমা চাওয়ার জন্য। যে ক্ষমা চাওয়ার অবকাশ পায়নি আগে। যাকে আর কোনদিনও সে কাছে পাবেনা। অনুমতি পেয়েছিল। ত্রিপুরার মৃতদেহের কাছে এগিয়ে বুকের উপর মাথা রেখে ক্ষমা চাওয়ার দৃশ্য আশেপাশের অন্যান্য সকলকে অত্যন্ত বিচলিত করেছিল। এরপর গুলি-বিদ্ধ হলো নির্মূল লালা। অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। চট্টগ্রামের যুব বিদ্রোহে যোগ দেওয়ার জন্য চলে এসেছিল বাড়ীতে মা বাবা কাউকে না জানিয়ে। নির্মূলের মৃতদেহ পুলিশ সনাক্ত করতে পারেনি। একমাত্র নেতাদের কাছে ছাড়া বিপ্লবী সাথীদের অনেকের কাছে তার পরিচয় ছিলনা। নির্মূলের পর এলো বিধু ভট্টাচার্যের পালা। বয়স ২১ বছর। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রামের মেডিক্যাল স্কুল থেকে স্বর্ণপদক নিয়ে পাশ করেছিলেন। হাসি আর কৌতুকে ভরা এই ছেলেটির ¤øান মুখ কেউ কখনও দেখেনি। সেই বিপদসঙ্কুল জালালাবাদ পাহাড়ের গোলাগুলির মাঝখানে সাথীদের জমিয়ে রেখেছিল তার কৌতুকভরা কথাবার্তা। মৃত্যুর মুখেও মৃত্যুকে উপহাস করেছিল এই বিপ্লবী। নরেশ রায়েরও দেরী হলনা বিধুকে অনুসরণ করতে। দুজনেই এক সঙ্গে মেডিক্যাল স্কুলে পড়তেন। এবার গুলিবিদ্ধ হলেন বিনোদ দত্ত। এরপর গুলি লাগলো অর্ধেন্দু দস্তিদারের। যুব উত্থানের কিছু পূর্ব্বেই বোমা তৈরি সময় বিস্ফোরণে গুরুতরভাবে আহত হলেও তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। পোড়া জায়গার ক্ষত তখনও শুকোয়নি। এবার শশাঙ্ক দত্ত ও মধুসূদন দত্তের পালা। গুলিতে দুজনের শরীর ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল, সনাক্ত করার উপায় ছিলনা। এরপর গুলি লাগল অম্বিকা চক্রবর্ত্তীর। অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এরপর একে একে গেলেন মতি কানুনগো, জিতেন দাশগুপ্ত এবং বিনোদ চৌধুরী।
এবার গুলির আঘাতে পড়ে গেলেন প্রভাস বল। মাষ্টারদা প্রভাস বলের হাত থেকে রাইফেল সরিয়ে নিয়ে বনবিহারীর হাতে দিয়ে বললেন, ‘এখন এটির সদ্ব্যবহার কর।’ পুলিন বিকাশ ঘোষ-বয়স সতেরোর বেশি নয়। লোকনাথ বলের পাশেই সে জায়গা নিয়েছিল। লোকনাথ বল শত্রæর গুলির জবাব দিয়ে পুলিনের দিকে হাত বাড়াতে গিয়ে দেখলেন পুলিন পড়ে আছে, গুলির আঘাতে মৃত।
তিন ঘন্টা যুদ্ধের পর নিস্তব্ধতা নেমে এল জালালাবাদের এই পাহাড়ে। অদূরের পাহাড় থেকে কিছুক্ষণ পরেই সমর-ক্ষেত্রে পশ্চাদপসরণের ‘হুইসেলের’ বিশেষ ধ্বনি শুনে বিপ্লবীরা অনুমান করে নিল শত্রæপক্ষ পশ্চাদপসরণ করেছে।
শুধু মাস্কেট্টি (এক ধরণের রাইফেল) হাতে ৫৬ জন বিপ্লবীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অস্ত্রে সুসজ্জিত অর্ধ ব্যাটেলিয়ন সৈন্য, আক্রমণ চালাবার পরেও তাদের পৃষ্ঠ প্রদর্শনের একটি মাত্র নজির ভারতের বুকে বৃটিশ শাসনের ইতিহাসে লেখা রইল। সহজেই বোঝা যায় যুদ্ধের ধরণ, অবিরাম গুলি বর্ষণ ইত্যাদিতে বিপ্লবীদের সংখ্যা নির্ণয় করতে না পেরে তারা পশ্চাদপসরণ করেছিল।
লোকনাথ বলের সতর্ক ও সজাগ দৃষ্টি এবং অদ্ভুত যুদ্ধ পরিচালন ক্ষমতা জয়ের গৌরব এনে দিয়েছিল এই বিপ্লবী সেনা বাহিনীকে।
মাষ্টারদার নির্দেশে মৃত বন্ধুদের প্রত্যেকের কাছ থেকে বন্দুক, রিভলবার ও কার্তুজ সংগ্রহ করে নেওয়া হল। অর্ধেন্দু দস্তিদার, মতি কানুনগো ও অম্বিকা চক্রবর্ত্তীর অবস্থা গুরুতর। তবু যদি বেঁচে যায় এই ভেবে তাঁদের অস্ত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল না। নতমস্তকে মৃত বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সকলে দু’ভাগে পাহাড় থেকে নেমে গেলেন। যাত্রা তাঁদের গ্রামের আশ্রয়স্থলের দিকে। আহত বিনোদ দত্ত ও বিনোদ চৌধুরীও এদের সঙ্গেই গেলেন। যাত্রা শুরু হওয়ার আগে মাস্টারদা সকলকে ডেকে আরেকবার বললেন, “যুব-বিদ্রোহের প্রথম অধ্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন হবে একটানা গেরিলা যুদ্ধের কায়দায় সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। শত্রæ তার পুরো শক্তি নিয়ে আবার আসবে। বিপ্লবীদের মনোবল অটুট থাকলেও সম্মুখযুদ্ধ চলবে না। এই অবস্থায় যারা এখনও পুলিশের নজরে পড়েনি তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়া সমীচীন। বিপ্লবী সংগঠনগুলি শক্তিশালী করা তাদের কাজ।”
২৩ এপ্রিলের সকাল বেলা। সূর্যের আলোয় চারদিক উজ্জ্বল। জালালাবাদের পাহাড়ে বৃটিশ সৈন্য ফিরে এলো। ১০টি মৃতদেহ আর ২ জন মৃতপ্রায় বিপ্লবীকে পেলো তারা। শুধু অর্ধেন্দু দস্তিদারকেই তারা নিয়ে যেতে পেরেছিল। সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে জবানবন্দী নেওয়ার জন্য। শুধু বার বার তিনি একই কথা বলছিলেন, “আমাকে শান্তিতে মরতে দাও।”
অম্বিকা চক্রবর্ত্তী কোনোক্রমে পৌঁছে গেলেন তাঁর নিজের গ্রামের আমজাদ আলির বাড়িতে। তাঁকে এই পরিবার সুস্থ করে তুলল এবং তাঁদেরই সাহায্যে মাষ্টারদাদের সঙ্গেও যোগাযোগ হল।

 

 

 

 

 

 

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সুলতান কুসুমপুরী ও তাঁর কোম্পানি কমান্ডার হাবিলদার আবু’র মুক্তিযুদ্ধ

মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের ১৩জন এমপি সম্মুখ যুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তারা সেনা কর্মকর্তাদের ন্যায় মুক্তিযুদ্ধে তাদের গ্রæপকে কমান্ড করেন। এই ১৩ জন এমপি

বিস্তারিত »
প্রদ্যোৎ কুমার পাল

৭১-এর দুরন্ত গেরিলা প্রদ্যোৎ কুমার পাল

প্রদ্যোৎ কুমার একজন অসম সাহসী বীরের নাম। মুক্তিযুদ্ধে এই দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধা দক্ষিণ চট্টগ্রামের রণাঙ্গণ মাতিয়ে রেখেছিলেন তাঁর অসীম সাহস ও পরাক্রম দিয়ে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের চারটি

বিস্তারিত »

দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের ক্যান্টনমেন্ট বরকল, শাহজাহান ইসলামাবাদী জিওসি

মুক্তিযুদ্ধের এক কিংবদন্তী শাহজাহান ইসলামাবাদী। দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের তিনিই ছিলেন প্রধান নায়ক। কিংবা এভাবেও বলা যায়, তাঁকে কেন্দ্র করেই দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধ গড়ে উঠেছিল। তাঁর

বিস্তারিত »

স্বাধীনতা ও সমাজতন্ত্রের সংগ্রামের অগ্রসৈনিক মিরসরাইর অহিদুল হক

অহিদুল হক মুক্তিযুদ্ধে যে অসাধারণ বীরত্ব, অসীম সাহস ও শৌর্যবীর্যের পরিচয় দেন, তা মিরসরাই থানার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে জাতীয় মুক্তির

বিস্তারিত »
বাংলাদেশে পিএইচপির উদ্যোগে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিখ্যাত প্রোটন ব্রান্ডের গাড়ি তৈরির কারখানা উদ্বোধনের পর মোনাজাত করছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ এবং পিএইচপির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সুফি শিল্পপতি মিজানুর রহমান ।

দার্শনিক শিল্পপতি সুফি মিজানুর রহমান পুরুষোত্তম

বাংলাদেশে পিএইচপির উদ্যোগে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিখ্যাত প্রোটন ব্রান্ডের গাড়ি তৈরির কারখানা উদ্বোধনের পর মোনাজাত করছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ এবং পিএইচপির

বিস্তারিত »

মুক্তিযুদ্ধে দোহাজারীর বীর চতুষ্টয় : খসরু-জাফর-রতন-কামাল

চট্টগ্রামের সভ্যতা মানুষ ও নদীর যুগ্ম-সৃষ্টি। ঐতিহাসিক কাল থেকে চট্টগ্রামে তিনটি বড় নদী পরিদৃষ্ট হয়। সর্ববৃহৎ কর্ণফুলী, অনতিবৃহৎ হালদা ও শঙ্খ নদী। কর্ণফুলী সদর ও

বিস্তারিত »

ষাটের_দশকের_ছাত্রনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সিরাজুল আলম

কাজী সিরাজুল আলম ষাটের দশকের শেষদিকে চট্টগ্রামের একজন বিশিষ্ট ছাত্রনেতা ছিলেন। ৬৯-৭০-এ তিনি ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেন। তাঁর বাড়ি সীতাকুÐে; তিনি সীতাকুÐে ৬৯-এর

বিস্তারিত »

মুক্তিযুদ্ধে_চিকিৎসকদের অবদান ও ডা.শৈবাল কান্তি দাশ

মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসকদের ভ‚মিকা নিরূপণের চেষ্টা করা হয়নি। তবে তাঁরা না হলে মুক্তিযোদ্ধারা, বিশেষ করে গেরিলা যোদ্ধাদের পক্ষে যুদ্ধে সফল হওয়া মুস্কিল ছিল। ইনফ্যান্ট্রি, আর্টিলারি, ক্যাভালরি

বিস্তারিত »

মুক্তিযুদ্ধে এ কে খানের ভাই এম আর খান ও তাঁর তিন পুত্রের অন্তর্ধান দিবস

সে এক ঘোর অমানিশার অন্ধকার নেমে এসেছিলো এই বাংলায়। সেই ঘন তমসা ভেদ করে স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের প্রতীক্ষার প্রহর গুণে গুণে কত দুঃখিনি মায়ের প্রাণবায়ু বেরিয়ে

বিস্তারিত »