অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসনে বেসরকারী ফলাফলে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। তিনি পেয়েছেন এক লক্ষ ৩৭০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব পেয়েছেন ভোট ৩৬,৫৮৭ ভোট।
অন্যান্য প্রার্থীর মধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ৩১০৮ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মীর মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম চেয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ৫২৫ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ হামিদ উল্লাহ্ মোমবাতি প্রতীকে পেয়েছেন ১৫২৫ ভোট, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিউল আজম চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ২৫৫ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ২২৫৭ ভোট এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন ফুলকপি প্রতীকে পেয়েছেন ৩১০৮ ভোট।
বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের (বিটিএফ)চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ফুলের মালা প্রতীকে প্রচারণা চালালেও পরবর্তী তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তিনি পেয়েছেন ২৩০ ভোট।
রোববার (৭ জানুয়ারি) ভোট গননা শেষে সহকারী সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ ঘোষণা দেন।
নির্বাচিত হয়ে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি সকলের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ফটিকছড়ির উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
ফটিকছড়ির আসনে এবারে ভোটার সংখ্যা ৪,৫৬,৪৯০ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২,৩৯,৯০৪ জন। মহিলা ভোটার ২,১৬,৫৮৩ জন। হিজড়া ভোটার ৩ জন।
এর আগে সকাল ৮ থেকে ১৪২টি কেন্দ্রের ৯৮২টি ভোট কক্ষে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।
খাদিজাতুল আনোয়ার সনি নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালীন হঠাৎ গুঞ্জন উঠে শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারীকে আওয়ামীলীগের হাইকমান্ড সমর্থন দিয়েছে। খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে সরে দাঁড়াতে হবে।
গত ২৭ ডিসেম্বর শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের একটি ছবি প্রকাশ হলে গুঞ্জনটির আরো ডালপালা মেলে। তবে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে নির্বাচনী মাঠে থাকতে বলেন। নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে নৌকাকে বিজয়ী করতে কাজ করেন। অবশেষে ফসল ঘরে তুললেন সনির সমর্থকরা।
এদিকে দীর্ঘদিন পর আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় নেতাকর্মীরা আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে। বিভিন্নস্থানে বিজয় মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬-২০০০ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগ প্রার্থী আলহাজ্ব রফিকুল আনোয়ার সাংসদ ছিলেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি পুনরায় ফটিকছড়ি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আর কোন দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করতে পারেননি। পরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হিসেবে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যন আলহাজ্ব নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন।