সাধারণত শীতকালে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ফাঁটল দেখা দেয়। বিশেষ করে ঠোঁটেই বেশি দেখা দেয় সমস্যাটি। কারণ, তখন বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। কিন্তু এখন তো গরমকাল; এখন কেন ঠোঁট ফাটবে? তবে গত কয়েক বছর ধরেই গরমেও ঠোঁট ফাটতে দেখা যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনকে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ায় এর সাইড ইফেক্ট হিসেবে বর্তমানে দ্রুত আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন হচ্ছে। যার মধ্যে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে এই গরমেও শুষ্ক আবহাওয়া। সাধারণত শীতকালে বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ কম থাকে, যার কারণে আমাদের ত্বকের বহিঃস্তর তার জমা করা পানি বা ময়শ্চার হারায়।
ফলস্বরূপ, খসখসে চামড়া, ঠোঁট ফাটার মতো লক্ষণ দেখা যায়। আর শরীরের চামড়ার তুলনায় ঠোঁট বেশি ফাটে, কারণ এটি মূলত চামড়ার উপরিভাগের খুব পাতলা স্তর। তাই শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কম হলে শরীর থেকে জলীয় অংশ কমে যায় এবং তখন চামড়ার এই স্তরটি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত অর্থাৎ শুকিয়ে ফেটে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত গরমে বাতাসে জলীয়বাষ্পের মাত্রা তুলনামূলক বেশি থাকে, অর্থাৎ প্রকৃতিতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি আছে এবং এর ঘাটতি পূরণ করার জন্য আমাদের বহিঃত্বক থেকে কোনো পানি বা ময়শ্চার নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এই গরমে জলীয়বাষ্পের মাত্রা বা আপেক্ষিক আদ্রতা ব্যাপক ভাবে কমে গেছে। যার কারণে বাতাস তুলনামূলক শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। ফলাফল আমার আপনার শরীরের পানি দ্রুত বাষ্প হচ্ছে, ঠোঁট শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে, ঘাম হচ্ছে না।
বাতাসে জলীয় বাষ্প এর পরিমাণ যদি আগের মতো স্বাভাবিক থাকতো তাহলে আগের মতো আমাদের ত্বকের পানি আর টানতে পারতো না। এখনকার মতো শুষ্কতা সাধারণত মরুভূমিতে দেখা যায়।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে কীভাবে দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন আমাদের জীবন যাত্রায় প্রভাব ফেলছে।
তবে, চিন্তার কোনো কারণ নেই, সমস্যাটি থেকে পরিত্রাণ পেতে চিকিৎসকরা সাময়িক কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো হলো-
প্রচুর পানি পান করা
নিয়মিত ঠোঁটের যত্ন নেয়া
তীব্র সূর্যালোক ও ধুলোবালি এড়িয়ে চলা
নিয়মিত সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
প্রয়োজনে ভ্যাসলিন ব্যবহার করা (তবে রাসায়নিক মিশ্রিত কোনো কিছু ব্যবহার থেকে সাবধান থাকার কথা বলেন চিকিৎসকরা)।