নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সৈদালী গ্রামে গণহত্যার শিকার ২৩ জনকে একস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব গণকবর চিহ্নিত করে তাদের একস্থানে সমাহিত করা হয়। সরকারের তরফ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাদের নামফলকযুক্ত স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের।
সৈদালী গ্রামের গণহত্যায় শহীদরা হলেন— মোখলেছুর রহমান, আবুল কালাম (হোরা মিয়া), আমির হোসেন, খোরশেদ আলম, মকছুদ আহম্মদ, নজীর আহমদ, সুলতান আহমদ, কবির উদ্দিন, শেখ আহমদ, আবদুল মালেক, তমিজ উদ্দিন, হাকিম বক্স, বেদন আলী, সামছুল আলম ভূঁইয়া, নুরুল আলম ভূঁইয়া, ফকির আহমদ, রহিম বক্স, আব্দুর রশিদ, মফিজুর রহমান, হোসনের জামান, জোবেদা খাতুন, জায়েদ আলী, ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ বজলুর রহমান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মিনহাজুর রহমান জানান, সংবাদপত্র এবং সৈদালী নাগরিক ফোরাম নামে গ্রামের একটি সংগঠনের মাধ্যমে সৈদালীতে অরক্ষিত গণকবর থাকার বিষয়টি জেনে তা একসঙ্গে সমাহিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথমে তাদের দেহাবশেষ উত্তোলন এবং নতুন করে কবর দেওয়ার বিষয়টি শরীয়াসম্মত করতে কিছু কাজ করতে হয়েছে। সরকারি জমির ওপর কবরস্থান ঠিক করা হয়। পরবর্তীতে কবরস্থানে যাওয়ার পথ তৈরি করতে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে দুই শতক জমি কেনা হয়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কবর সমাহিত করার কাজটি করা হলো। পরবর্তীতে আমরা আমাদের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পরামর্শে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাব মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো।
২০১৭ সাল থেকে সৈদালী নাগরিক ফোরাম নামে একটি সংগঠন প্রতি বছর ২০ এপ্রিল দিনটিকে সৈদালী গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। মূলত সংগঠনটির নেতাদের দাবির প্রেক্ষিতেই সবগুলো কবর এক সঙ্গে সমাহিত করার উদ্যোগ নেয় সরকার।
সংগঠনটির সভাপতি নাট্য নির্দেশক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল সৈদালী গ্রামে পাকিস্তানি জান্তারা অসংখ্য ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেন এবং লুটপাট চালান। এছাড়া গ্রামের একজন বীর মুক্তিযুদ্ধাসহ ২২ জনকে হত্যা এবং কয়েকজন নারীকে সেদিন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।