হত্যা মামলার এক আসামি জেল এড়াতে আরেক খুন করে স্ত্রীর সহযোগিতায় সাজিয়েছিলেন আত্মহত্যার নাটক; তার সেই চেষ্টা ভেস্তে দিয়েছে ভারতের পুলিশ।
ভারতের উত্তর প্রদেশের পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, সুড়েশ কুমার নামের ৩৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি থাকেন দিল্লিতে। তিন বছর আগে নিজের ১৩ বছরের মেয়েকে হত্যার অভিযোগে তাকে জেলে যেতে হয়।
মহামারীর মধ্যে কারাগারে কোভিড ঝুঁকি এড়াতে বেশ কিছু আসামিকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হলে সেই সুযোগে সুড়েশ কুমারও বেরিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু সেই প্যারোল বাতিল হচ্ছে টের পেয়ে জটিল এক পরিকল্পনা সাজান তিনি।
নিজের আকার-আকৃতির সঙ্গে মিল আছে এমন এক লোককে খুন করে সেটা নিজের লাশ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন এই হত্যা মামলার আসামি। আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী।
কিন্তু সুড়েশ যখন লাশটি মোটরসাইকেলে করে সরিয়ে নিচ্ছিলেন, সেই দৃশ্য ধরা পড়ে গিয়েছিল সিসিটিভির ভিডিওতে। সেটা পুলিশের হাতে পড়ায় ধরা পড়ে যান তিনি।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের কাছে সব স্বীকার করেছেন সুড়েশ। যাকে তিনি খুন করেছিলেন, তার নাম দোমেন রবিদাস, পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি, বয়স ১৯ বছর।
বয়সে কম হলেও রবিদাসের উচ্চতা আর ওজন ছিল সুড়েশের মতই। বাসার কিছু মেরামতের কাজের কথা বলে গত ১৯ নভেম্বর তাকে ডেকে নিয়েছিলেন সুড়েশ।
পরদিন একটি খালি প্লটে রবিদাসের পোড়া লাশ পাওয়া যায়। সেই লাশের চেহারা এতটাই পোড়া ছিল যে দেখে চেনার উপায় ছিল না। তবে পকেটে পাওয়া যায় সুড়েশ কুমারের আধার কার্ড।
পুলিশ সেই কার্ড নিয়ে সুড়েশের স্ত্রী অনুপমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। সব দেখে অনুপমা পুলিশের কাছে দাবি করেন ওই পোড়া লাশ তার স্বামীর এবং তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে সিসিটিভির ভিডিও দেখে পুলিশ বুঝতে পারে, ঘটনা অন্যরকম। এর মধ্যেই খবর আসে, দিল্লির বাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন সুড়েশ।
এরপর ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জলজ্যান্ত সুড়েশ কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর তার ষড়যন্ত্রের সঙ্গী হওয়ায় স্ত্রী অনুপমাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ মামলার রহস্য উন্মোচনের খবর দেন স্থানীয় পুলিশ সুপার ইরাজ রাজা।
তিনি বলেন, প্রায় নিখুঁত একটি পরিকল্পনা সাজিয়েছিল ওই দম্পতি। তবে পুলিশ সব রহস্য ভেদ করতে পেরেছে।
-বিডিনিউজ