ইনজুরিতে পড়ে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান খেলতে পারেননি। পরিবর্তে অধিনায়কত্বের ভার এসে পড়ে মেহেদী হাসান মিরাজের উপর। মিরাজও দেখিয়ে দিলেন কিভাবে দলকে দল উপহার দিতে হয়। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভারতের গুয়াহাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৪৯.১ ওভারে ২৬৩ রানে আটকে রাখে মিরাজের দল। জবাবে তানজিদ হাসান তামিম, লিটন দাস এবং অধিনায়ক মিরাজের সাহসী ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে আট ওভার বাকি থাকতেই তিন উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে বাংলাদেশ।
২৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দীর্ঘদিন পর উদ্বোধনী জুটিতে শতরানের পার্টনারশিপ দেখলো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। সূচনাটাই দুর্দান্ত করে দুই ওপেনার লিটন দাস এবং তানজিদ হাসান তামিম। ২০.৪ ওভার ব্যাট করে ১৩১ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন তারা দু’জন। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং অব্যাহত রেখেছেন।
অন্যদিকে লিটন দেখে শুনে নিজের ইনিংস বড় করছেন। যদিও তানজিদের আগেই ৩৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন লিটন। অপরদিকে ৫৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তানজিদ তামিম। তবে দুশান হেমন্থর বলে লিটন দাস পাথিরানার হাতে যখন ক্যাচ দেন তখন তার নামের পাশে শোভা পাচ্ছিলো ৫৬ বলে ৬১ রান।
এরপর ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নেমে তানজিদ তামিমের সঙ্গে জুটি বাধেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫২ রানের জুটি গড়ে তোলেন তারা। সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন তানজিদ তামিম। তবে শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরির দেখা পেলেন না তিনি। ৮৮ বলে ৮৪ রান করে লাহিরু কুমারার বলে আশালঙ্কার হাতে তালুবদ্ধ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান জুনিয়র তামিম। ১০ টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
তাওহিদ হৃদয় এসে কিছুই করতে পারেননি। গোল্ডেন ডাক মেরে আউট হয়ে যান। পরের পথটুকু মুশফিকুর রহিমকে নিয়েই পাড়ি দেন মিরাজ। ৬৪ বলে ৬৭ রানে মিরাজ অপরাজিত ছিলেন। ৪৩ বলে ৩৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম। লঙ্কানদের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন লাহিরু কুমারা, দুনিথ ভেল্লালাগে ও দুশান হেমন্থ।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে দুই ওপেনারে উড়ন্ত সূচনা পায় শ্রীলঙ্কা। যদিও খানিক পরেই কাঁধে অস্বস্তি বোধ করায় রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন কুশল পেরেরা। মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৩৪ রান। এরপর নিশাঙ্কাকে সঙ্গ দিতে আসেন কুশল মেন্ডিস। দুজনের ব্যাটে শতরান পেরিয়ে যায় লঙ্কানরা। তবে দলীয় ১০৪ রানে মেন্ডিসকে(২২) ফিরিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন নাসুম আহমেদ। পরের ওভারেই সাদিরা সামারাবিক্রমাকে (২) আউট করেন শেখ মাহেদী।
এরপর ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে ৫২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নিশাঙ্কা। এই লঙ্কান ব্যাটারকেও সাজঘরে ফেরান মাহেদী। ৬৪ বলে ৬৮ রানে থামেন নিশাঙ্কা। এরপর ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা চারিথ আশালঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান শেখ মাহেদী। মিরাজের দারুণ ক্যাচে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ১৮ রান করে। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা। শরিফুলের শর্ট বলে তানজিমের ক্যাচে ৩ রানেই ফিরতে হয়েছে তাকে।
রান আউটে কাটা পড়েন করুনারত্নে (১৮)। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৫ রান করে মিরাজের শিকার হন ধনঞ্জয়া। ১০ রানে দুনিথ ও ১১ রানে আউট হন হেমন্ত। ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন লাহিরু কুমারা।
বাংলাদেশের হয়ে শেখ মাহেদী ৩টি, নাসুম, শরিফুল, তানজিম ও মিরাজ একটি করে উইকেট পেয়েছেন।
সোমবার (১ অক্টোবর) বাংলাদেশ তাদের পরবর্তী প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।