এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার বহুল প্রতীক্ষিত ম্যাচের সমাপ্তি হয়েছে করুণ। বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে ম্যাচটি। এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে দুই দফায় বৃষ্টির বাঁধায় পড়তে হয়েছিল ভারতকে। শেষ পর্যন্ত শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ ও নাসিম শাহদের তাণ্ডবে ২৬৬ রানে অল আউট হয় রোহিত শর্মার দল। এরপর বৃষ্টির কারণে আর একটি বলও মাঠে গড়াতে পারেনি। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে দুই দলকে।
২৭ রানে ২ উইকেট হারানো ভারত নিজেদের চতুর্থ উইকেট হারায় ৬৬ রানে। বিপর্যয়ের মুখে ভারতকে টেনে তুলেছেন ইশান কিশান ও হার্দিক পান্ডিয়া। দারুণ ব্যাটিং করলেও এদিন সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে তাদের দুজনকে। সেঞ্চুরির আগে ফিরলেও ভারতকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছেন হার্দিক ও ইশান। ম্যাচ জিততে পাকিস্তানকে করতে হতো ২৬৭ রান।
টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলে আফ্রিদির গুড লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে ভারতের দারুণ এক শুরুর আভাস দেন রোহিত শর্মা। তবে পরোক্ষণেই নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন শাহীন আফ্রিদি। পরের সময়টায় বেশ ভালো বোলিং করেছেন বাঁহাতি এই পেসার। আরেক পেসার নাসিম শাহ এদিন শুরু থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করেন।
রোহিত ও শুভমান গিলকে বেশ ভালোই ভুগিয়েছেন তরুণ এই পেসার। আবহওয়ার পুর্বাভাস অনুযায়ী ক্যান্ডিতে ম্যাচের সময় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল আগে থেকেই। ৪.২ ওভার যেতেই বৃষ্টি হানা দেয় পাল্লেকেলেতে। বৃষ্টি শেষে আবারও শুরু হয় খেলা। বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর রোহিতের বিপক্ষে খানিকটা আউট সুইং ডেলিভারি করেছেন আফ্রিদি। তবে ওভারের শেষ ডেলিভারিটি আফ্রিদি করেছিলেন ইনসুইং।
আফ্রিদির গুড লেংথে পড়ে ইনসুইং হওয়া ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন ভারতের অধিনায়ক। রোহিত সাজঘরে ফিরেছেন ২২ বলে ১১ রান করে। আগের ওভারের শেষ বলে রোহিতকে বোল্ড করা আফ্রিদি নিজের পরের ওভারে এসে ফিরিয়েছেন বিরাট কোহলিকে। বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক।
কভার ড্রাইভ করে চার মেরে রানের খাতা খোলা কোহলি আউট হয়েছেন ৪ রান করে। চারে নেমে দারুণ শুরু করেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। তবে তাকে ইনিংস বড় করতে দেননি হারিস রউফ। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে থাকা ফখর জামানের হাতে ধরা পড়েছেন ২ চারে ১৪ রান করা আইয়ার।
ডানহাতি এই ব্যাটার ফেরার পর দ্রুতই আউট হয়েছেন গিলও। এদিন শুরু থেকেই ধুঁকছিলেন তরুণ এই ওপেনার। শেষ পর্যন্ত তাকে সুবিধাই করতে দেননি হারিস রউফ। ডানহাতি এই পেসারের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ১০ রান করা গিল। এরপর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন হার্দিক ও ইশান। ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারানো ভারতকে টেনে তুলতে থাকেন তারা দুজন।
দারুণ ব্যাটিংয়ে পাঁচে নেমে ৫৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ইশান। আরেক ব্যাটার হার্দিক পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৬২ বল খেলে। তাদের দুজনের ১৩৮ রানের জুটি ভাঙেন হারিস। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে ৮২ রানে আউট হয়েছেন ইশান। ভারতের এই উইকেটকিপার ব্যাটার ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি হার্দিকও।
শাহীন আফ্রিদির গুড লেংথের স্লোয়ার ডেলিভারিতে আঘা সালমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৮৭ রান করা এই ব্যাটার। উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে রবীন্দ্র জাদেজাকেও আউট করেছেন আফ্রিদি। আটে নামা শার্দুলকে ফেরান নাসিম শাহ। শেষ পর্যন্ত ভারত থেমেছে ২৬৬ রানে। পাকিস্তানের হয়ে শাহীন আফ্রিদি চারটি, নাসিম ও হারিস নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত- ২৬৬/১০ (৪৮.৫ ওভার) (রোহিত ১১, গিল ৬*, কোহলি ৪, আইয়ার ১৪, ইশান ৮২, হার্দিক ৮৭; আফ্রিদি ৪/৩৫, নাসিম ৩/৩৬, হারিস ৩/৫৮)