ষোলো বছর আগে দায়ের করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত।
কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের এজলাসে বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান রোববার খালেদাজিয়াসহ নয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ জানান, অভিযোগ গঠন করে বিচারক আগামী ২৩ মে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করে দেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে হাজিরা দেন আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার।
মামলার আসামি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন এদিন আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
আরেক আসামি ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়ার জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক।
আলোচিত এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছানোর আবেদন করেছিলেন আসামিদের আইনজীবীরা। বারবার সময় আবেদনে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করে বিচারক তা নাকচ করেন।
কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে ‘অস্বচ্ছ’ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন।
পরের বছর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সেখানে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এছাড়া সাবেক আইনমন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন এই মামলায় আসমি থাকলেও তারা মারা যাওয়ায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ৩৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার ১০ বছরের এবং জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরেরর সাজা হয়েছে।
ওই দুই মামলায় সাজা খাটার মধ্যেই পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালের মার্চে সাজা স্থগিত করে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। বাসায় থেকে চিকিৎসা করার এবং বিদেশে না যাওয়ার শর্তে তিনি গুলশানের বাসায় থাকছেন।-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম