রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২ মাঘ, ১৪৩১, ২৫ রজব, ১৪৪৬

মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ

মুক্তি৭১ ডেস্ক

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বীর সেনানী ভাষাশহীদদের। একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলির নেতৃত্ব দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর ভাষাশহীদদের প্রতি একে একে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান বিচারপতি, সরকারের মন্ত্রীবর্গ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও বিরোধীদলীয় নেতারা।

এরপর পর্যায়ক্রমে তিন বাহিনীর প্রধান, ভাষাসৈনিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অনুষদের ডিন ও হলের প্রাধ্যক্ষরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ।

ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন
২১ ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষার জন্য আত্মবলিদানের দিন। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য নজির স্থাপন করে বাঙালি জাতি। তবে এই ত্যাগের মহিমা ও স্বীকৃতি কেবল বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নেই; ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণার মধ্যদিয়ে বাংলা ভাষা বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়।

পাকিস্তান জন্মের মাত্র সাত মাস পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ ঢাকা সফর করেন। তিনি হয়তো তখনও ভাবেননি, প্রথম ও শেষ সফরে তিনি এমন কাণ্ড করে বসবেন যার মাধ্যমে পাকিস্তান ভেঙে নতুন একটি দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।

তাই ২১ ফেব্রয়ারি শুধু ‘শহীদ দিবস’ বা ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবেই বাঙালি জাতির কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই জাতি তার স্বাধীনতা তথা মুক্তিযুদ্ধের বীজ রোপণ করেছিল; এটিই ভাষা আন্দোলনকে জাতির কাছে আরও মহিমান্বিত করে তুলেছে।

কেন দানা বাঁধে ভাষা আন্দোলন
মধ্যযুগ থেকেই পূর্ব বাংলার মানুষের ইতিহাস মূলত শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির মাধ্যমে ব্রিটিশ ও জমিদারদের সীমাহীন শোষণে অতিষ্ঠ মানুষ নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। কিন্তু জিন্নাহর ঘোষণা যেন সেই স্বপ্নকে মুহুর্তে গুঁড়িয়ে দেয়। ক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলার মানুষ।

যদিও জিন্নাহর সফরের আগেই কিছু ঘটনা বাংলার মানুষকে ভীষণ ক্ষুব্ধ করে তোলে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেখা যায়, নতুন দেশের ডাকটিকিট, মুদ্রা, মানিঅর্ডার বা টাকা পাঠানোর ফর্ম, ট্রেনের টিকিট, পোস্টকার্ড, নিয়োগ পরীক্ষা ইত্যাদিতে শুধু উর্দু ও ইংরেজি ব্যবহৃত হচ্ছে। এর প্রতিবাদে ঢাকায় ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীরা বিক্ষোভ সমাবেশও করেন। এর কিছুদিন পরই জিন্নাহর সফর অনুষ্ঠিত হয়।

সফরকালে জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ভাষণ দেন। সেখানেও রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার কথা বলেন তিনি। ছাত্ররা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন এবং সেদিন বিকেলেই ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি দল জিন্নাহর সঙ্গে দেখা করে বাংলাকে ‘অন্যতম রাষ্ট্রভাষা’ করতে স্বারকলিপি দেন। তবে কিছুতেই নমনীয় হয়নি সরকার। ফলে দাবি আদায়ে ছাত্র-জনতা মিলে গঠন করে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’।

এরপর ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে ১৯৪৯ থেকে ‘৫১ সাল পর্যন্ত জোরালো হয় রাষ্ট্রভাষার দাবি। শাসকগোষ্ঠী পশ্চিম পাকিস্তানিদের দমন-পীড়নে ১৯৫২ সালে আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়। সে বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন ও সাধারণ ধর্মঘট’ ডাকে ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে পাকিস্তান সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়।

কী ঘটেছিল ২১ ফ্রেব্রুয়ারি
২১ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট পালনের ঘোষণার পরিপেক্ষিতে এর আগের দিন ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ১৪৪ ধারা জারি করে পাকিস্তান সরকার। তবে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে কলা ভবনের সামনে সমবেত হন। এভাবে বাড়তে বাড়তে জমায়েতে মানুষের সংখ্যা ১০ হাজার অতিক্রম করে।

পাকিস্তান সরকারের ১৪৪ ধারার পরোয়া না করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমবেত হতে থাকেন কলা ভবনের সামনে। প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়নি। বাড়তে থাকে সমাবেশ। ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা দশ হাজার অতিক্রম করে। এরইমধ্যে খবর আসে লালবাগে স্কুল শিক্ষার্থীদের মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল মতিন এবং সভাপতি গাজীউল হকের নেতৃত্ব ১৪৪ ধারা ভঙের সিদ্ধান্ত হয়, মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামেন ছাত্ররা। ছাত্রদের হটিয়ে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। করা হয় লাঠিচার্জ। গ্রেফতার করা হয় অনেককে।

দ্বিতীয় ধাপে বেলা ২টার দিকে ছাত্ররা আবারও সমবেত হয়ে আইনসভায় গিয়ে তাদের দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। বেলা ৩টার দিকে মিছিল নিয়ে আইনসভার দিকে রওনা হলে পুলিশ সেই মিছিলে গুলি করে। এতে রফিক উদ্দিন আহমেদ ও আব্দুল জব্বার নামে দু’জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আবুল বরকতের। এ সময় কিছু লাশ রাস্তা থেকে দ্রুত ট্রাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ, যাদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

এদিকে, ঢাকায় ছাত্রহত্যার ঘটনায় পূর্ব পাকিস্তানজুড়ে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন ২২ ফ্রেব্রুয়ারি সারা দেশে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়। এদিনও ছাত্র-জনতার শোক মিছিলে গুলি করে পুলিশ। এ ঘটনায় মারা যান রিকশাচালক সালাম এবং হাইকোর্টের কর্মচারী শফিউর। এছাড়া নবাবপুর রোড ও বংশাল রোডে গুলিতে মারা যান কিশোর অহিউল্লাহ ও সিরাজুদ্দিনসহ অনেকে।

আসলে কতজন শহীদ হয়েছিলেন
২১ ফেব্রুয়ারি ঠিক কতজন শহীদ হয়েছিলেন সে বিষয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয়েছে বলে জানা যায় না। তবে লোকমুখে পাঁচজনের নামই বেশি শোনা যায়। তারা হলেন: সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউর। এরমধ্যে বরকত ও জব্বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। রফিক ছিলেন বাদামতলী এলাকার একটি প্রিন্টিং প্রেসের মালিকের ছেলে। এ ছাড়া সালাম ছিলেন রিকশাচালক এবং শফিউর হাইকোর্টের কর্মচারী।

গণমাধ্যমে দেয়া ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক অলি আহাদের একাধিক সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, ২২ ফেব্রুয়ারি নবাবপুর রোড ও বংশাল রোডে পুলিশের গুলিতে কতজন মারা গেছেন সেটি অজানা। তাদের সবার লাশই পুলিশ নিয়ে যায়। কবি আহমদ রফিক তার ‘একুশ থেকে একাত্তর’ বইয়ে নিহতদের মধ্যে আবদুল আউয়াল, কিশোর অহিউল্লাহ ও সিরাজুদ্দিনের নাম উল্লেখ করেছেন।

ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৯৫৩ সালে একটি স্বারক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। সেখানে ‘একুশের ঘটনাপুঞ্জী’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল যেখানে ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি সর্বমোট ৩৯ জন শহীদ হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।

পাশাপাশি ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে তৎকালীন ‘সীমান্ত’ পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ শিরোনামে একটি দীর্ঘ কবিতা লেখেন। কবিতার প্রথম কয়েকটি লাইন এ রকম: ‘ওরা চল্লিশজন কিংবা আরও বেশি/যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে রমনার রোদ্রদগ্ধ/কৃষ্ণচূড়া গাছের তলায়…/চল্লিশটি তাজা প্রাণ আর অঙ্কুরিত বীজের খোসার মধ্যে/আমি দেখতে পাচ্ছি তাদের অসংখ্য বুকের রক্ত/রামেশ্বর, আবদুস সালামের কচি বুকের রক্ত…’। মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর এই কবিতা থেকেও নিহতদের সংখ্যা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়।

এছাড়া পাকিস্তানের নির্বাসিত লেখক লাল খান তার ‘পাকিস্তানস আদার স্টোরি: দ্য ১৯৬৮-৬৯ রেভল্যুশন’ বইয়ে ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে মোট ২৬ জন নিহত এবং ৪০০ জন আহত হয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেছিলেন। বইটি ২০০৮ সালে লাহোরে প্রকাশিত হয়। তবে এই বইয়ে নিহতদের সংখ্যা সম্পর্কে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ নেই। তবে সব মিলিয়ে এটা বলা যায় যে, ভাষা আন্দোলনে আমরা যে পাঁচজন বা আটজনের নাম জানি শহীদদের সংখ্যা মোটেও তা নয়; বরং ৪০ জনের মতো।

মিলল রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি
বাঙালিদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বিশেষ করে ভাষা আন্দোলনের ঘটনাগুলো গণমাধ্যমের সূত্র ধরে বর্হিবিশ্বেও ছড়িয়ে পড়ে। এতে পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়ে। পাশাপাশি বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে চলতে থাকে ধারাবাহিক আন্দোলন। যে আন্দোলন ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

এরমধ্যে ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নিবার্চনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে পরিস্থিতির কিছুটা পরির্বতন আসে। সবশেষে ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান গণপরিষদ বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিয়ে একটি বিল পাস করে।

সেদিন (১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬) পরিষদে বিতর্কের এক পর্যায়ে ফরিদপুর থেকে নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্য আদেল উদ্দিন আহমদ একটি সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন। যেখানে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকেও রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়ার কথা বলা হয়। এ বিষয়ে বিতর্কের পর ৯ মে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে গণপরিষদের বেশিরভাগ সদস্য আদেল উদ্দিন আহমদের সংশোধনী প্রস্তাব সমর্থন করেন। ফলে বাংলা ভাষা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি লাভ করে। সেই থেকে বাঙালি জাতি ২১ ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবস তথা শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

শহীদ মিনার নির্মাণ
২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ গুলি করে এবং সেখানেই দুজন শহীদ হন। ২২ ফ্রেব্রুয়ারিতেও পুলিশের গুলি ও নিহতের ঘটনা ঘটে। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ভাষা শহীদদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শুরু হয় এবং রাত পেরিয়ে ভোর হবার আগেই শহীদ মিনার নির্মাণকাজ শেষ হয়।

ওই দিনই অর্থাৎ ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে শহীদ শফিউরের পিতা অনানুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে দশটার দিকে শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন আজাদ সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন। তবে উদ্বোধনের দিন অর্থাৎ ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলে।

তবে ১৯৫৬ সালে বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করার পর ১৯৫৭ সালের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ শুরু হয়। পরে ১৯৬৩ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হলে সে বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের অন্যতম শহীদ আবুল বরকতের মা হাসিনা বেগম নতুন শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি
১৯৫৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমল। ১৯৯২ সাল থেকে ত্রিপুরায় ২১ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলা ভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের দাবি আসে ময়মনসিংহের ‘গফরগাঁও থিয়েটার’ নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে।

এরই মধ্যে ১৯৯৮ সালের ২৯ মার্চ কানাডার ‘মাদার ল্যাংগুয়েজ লাভার্স অব দ্যা ওয়ার্ল্ড’ নামে একটি সংগঠন জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানের কাছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ নামে একটি দিবস ঘোষণার প্রস্তাব করে।

তবে ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির দাবিতে সংগঠনটি ‘বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস চাই, একুশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাই’ শীর্ষক একটি স্লোগান মুদ্রিত করে। যেটি সবার নজর কাড়ে।

এরপর একই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশ ন্যাশন্যাল কমিশন ফর ইউনেস্কো’র পক্ষে এর সচিব অধ্যাপক কামালউদ্দিন আহমদের স্বাক্ষরসহ ১৭ লাইনের একটি প্রস্তাব প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দফতরে পাঠানো হয়। প্রস্তাবের শেষ লাইনটি ছিল— ‘প্রস্তাব করা যাচ্ছে যে, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যারা নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন তাদের স্মরণে এ দিনটি বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করার জন্য ঘোষণা দেয়া হোক’।

পরবর্তীতে ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের ১৫৭তম অধিবেশন ও ৩০তম সাধারণ সম্মেলনে প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। মূল অধিবেশনে প্রস্তাবক বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের নামও যুক্ত হয়। প্রস্তাবটিকে ভারত, পাকিস্তানসহ ২৭টি দেশ সমর্থন করে। সবশেষে বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর রক্তাক্ত ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আলবিদা ২০২৪

২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া লাইফ ইন এ মেট্রো ছবির আলবিদা শিরোনামের গানের লাইন এটি। (উল্লেখ্য বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী জেমসের গাওয়া)। সত্যিই তো আর মাত্র

বিস্তারিত »

‘দিনের পর দিন অনির্বাচিত সরকারের হাতে দেশ চলতে পারে না’

সংস্কারের কারণে দিনের পর দিন অনির্বাচিত সরকারের হাতে দেশ চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয়

বিস্তারিত »

সচিবালয়ে প্রবেশ: সাময়িক অসুবিধায় দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চায় সরকার

সচিবালয়ে প্রবেশ ইস্যুতে সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছে সরকার। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভয়াবহ

বিস্তারিত »

স্বামীর ছোড়া অকটেনের আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ নাজমা আর নেই

চন্দনাইশে স্বামীর ছোড়া অকটেনের আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ নাজমা মারা গেছে। শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাজমা মারা যায়

বিস্তারিত »

হাসিনা ও রেহানার ব্যাংক হিসাব তলব

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানার ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করেছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সেই সঙ্গে

বিস্তারিত »

জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগানের রায় স্থগিত

২০২০ সালের ১০ মার্চ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল হাই কোর্ট। ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত

বিস্তারিত »

সাংবাদিক মাহবুব উল আলমের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, প্রগতিশীল চিন্তাবিদ, বাম রাজনীতির নীরব সমর্থক ও সংগঠক, মাইজভাণ্ডারী দর্শন ও মওলানা ভাসানীর একনিষ্ঠ অনুসারী এবং সাহিত্যিক মোহাম্মদ মাহবুব উল আলম হাটহাজারী

বিস্তারিত »

‘কেয়ামতের ফজরেও আ.লীগ রাজনীতি করতে পারবে না’

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির ও সাবেক এমপি শাহাজাহান চৌধুরী বলেছেন, নবী মুহাম্মদ (স.) যেমন মসজিদের ঈমাম, যুদ্ধের ময়দানেও সেরকম সেনাপতি।

বিস্তারিত »

আন্দরকিল্লায় দুটি সড়কে ব্যাটারি রিকশার দৌরাত্ম্য

ব্যাটারি রিকশার দৌরাত্ম্যে নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকার দুইটি সড়কে যানবাহন তো দূরের কথা পথচারীর চলাচলও কঠিন হয়ে উঠে। ভয়াবহ রকমের বিশৃঙ্খল অবস্থায় থাকা ব্যাটারি রিকশাগুলো পথচারীদের

বিস্তারিত »