নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘২০২৩ এর পরে ২০২৪ এর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি আজ সেই নির্বাচনে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা ২০১৮ সালে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন, আমরা আপনাদের এই কক্সবাজারের উন্নয়ন করেছি, পর পর তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি, ধারাবাহিকভাবে সেই ২০০৯ সাল থেকে এই ২০২২ পর্যন্ত দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বলবৎ আছে বলেই আজকে উন্নয়ন হচ্ছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘২০২৩ এর পরে ২০২৪ এর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। আমি আজ সেই নির্বাচনে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’ ‘আপনারা কি নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন’, প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলে জনগণ চিৎকার করে দুই হাত তুলে তাতে সম্মতি দেয়।
তিনি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কবির সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলেন, ‘রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি দেবার কিছু নেই/ আছে শুধু ভালবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সমাবেশের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ১৯৬৩.৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
তাঁর সরকার ও দল জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার লক্ষ্য অনুসরণ করে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো আমার একমাত্র কাজ। কাজেই আমি বাবা-মা, ভাইসহ স্বজনদের হারিয়ে আপনাদের মাঝেই ফিরে পেতে চাই আমার হারানো বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ, বোনের স্নেহ। আমি আপনাদেরকেই আমার আপনজন বলে মনে করি। এই বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ করাই আমার একমাত্র কাজ।
বিশাল জনসভায় দূরদূরান্ত থেকে আগত যাদের তিনি চোখের দেখা দেখতে পাচ্ছেন না তাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যত দূরেই থাকেন আপনারা আমার হৃদয়ে, অন্তরে স্থান করে নিয়ে আছেন। প্রত্যেকটি গ্রামের মানুষ শহরের সুযোগ-সুবিধা পাবে, প্রতিটি গ্রামকে শহর হিসেবে গড়ে তুলে প্রতিটি মানুষকে উন্নত জীবন দেয়াটাই আমার লক্ষ্য। আর সেভাবেই তাঁর সরকার রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রিজ, সড়ক পথ, রেলপথ, নৌপথের উন্নয়ন করে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
গ্রামে গ্রামে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিয়ে এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়ে ইন্টারনেট সেবাকে জনগণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা, বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করার মাধ্যমে সকলের হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে দেয়া, ১০ টাকায় কৃষকদের ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ, দুই কোটি লোককে কৃষি উপকরণ কার্ড প্রদান, ২ কোটি ৫৩ লাখ ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তি-উপবৃত্তি প্রদান, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান এবং জাতির পিতার শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড থেকে উচ্চ শিক্ষায় সহায়তা প্রদানের মত তাঁর সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক ও দরিদ্রবান্ধব কর্মসূচির উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি কিন্তু এই বাংলাদেশকে আমরা ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।
তাঁর সরকারের উদ্যোগে গৃহহীণদের জন্য ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া প্রকল্পের উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতার এই বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন বা গৃহহীন থাকবেনা। তিনি সমাবেশ আগতদের নিজ নিজ এলাকায় ভূমিহীন-গৃহহীণ মানুষ রয়েছে কি না তা খুঁজে দেখার আহবান জানান এবং নাম ঠিকানা দিলে তাঁর সরকার তাদের পুনর্বাসন করবে, প্রত্যেকের জীবন মান উন্নত করবে বলেও তিনি জানান।
জামাত-বিএনপি এদেশের মানুষকে কি দিয়েছে প্রশ্ন তুলে জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, খুন, হত্যা, লুটপাট, মানি লন্ডারিং, দেশের টাকা বিদেশে নিয়ে যাওয়া, চোরাকারবারি এগুলোই তারা পারে।
খালেদা জিয়া এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ফান্ডের টাকা মেরে দিয়ে আজকে সাজাপ্রাপ্ত। তার দশ বছরের সাজা হয়েছে। আর তার ছেলে তারেক রহমান দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড হয়েছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি করে ধরা খেয়ে সেই অস্ত্র চোরাকারবারির জন্য সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
আমি জানি না এই অস্ত্র কি কাজে সে ব্যবহার করতো। মাত্র একটা লট ধরা পড়েছে। অথচ এইভাবে বাংলাদেশের উপর দিয়ে কত অস্ত্র চোরাকারবারি হয়েছে বলে সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, শুধু তাই না ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের শান্তির জন্য করা সমাবেশে দিনে দুপুরে খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া গংয়েরা গ্রেনেড হামলা চালালে সেখানে মহিলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২২জন নেতাকর্মী মারা যান। তাঁকে মানব ঢাল রচনা করে নেতা-কর্মীরা রক্ষা করায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
কোন মানুষ জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে কিনা সে প্রশ্ন তুলে সরকার প্রধান বলেন, এই বিএনপি, তারেক জিয়া, খালেদা জিয়াদের আন্দোলন হচ্ছে মানুষ পুড়িয়ে মারার আন্দোলন। রেলে আগুন, বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, লঞ্চে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা। কোথায় না আগুন দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ৩ হাজার মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে, ৫’শ মানুষ হত্যা করেছে, সাড়ে তিন হাজারের মতো গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। ধ্বংস করা ছাড়া ওরা কিছুই পারে না।
তিনি বলেন, যারা দেশের উন্নয়ন না করে সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে, লুট করেছে এবং জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে তারা কীভাবে জনগণের পাশে থাকবে। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে এদেশের মানুষকে কিছু দেয়নি বরং জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে এদেশে অগ্নিকাণ্ড, মানি লন্ডারিং, চাঁদাবাজি, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করেছে।
’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো দেশের সম্পদ লুটে খাওয়া ছাড়া দেশকে কিছুই দিতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার সরকার দেশকে কিছুই দেয়নি। বাংলাদেশের মানুষের সম্পদ লুটে খেয়েছে।
করোনা ভাইরাস মহামারীর রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সংকটময় পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় এনে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আবেদন জানাবো সবাইকে যার যেখানে যতটুকু জমি আছে আপনারা কিছু না কিছু চাষ করবেন, তরিতরকারি, ফলমূল যা পারেন। বিশ্বব্যপী যে অর্থনৈতিক মন্দা, অনেক উন্নত দেশ এখন নিজেদেরকে অর্থনৈতিক মন্দার দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। সেখানে এখানো আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী আছে।’
ব্যাংকের রিজার্ভ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এখনো আমাদের রিজার্ভ। যেখানে খালেদা জিয়ার আমলে ছিল মাত্র ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন।’
শেখ হাসিনা জনগণকে আশ্বস্থ করে বলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি আপনাদের ভালো মন্দ দেখার দায়িত্ব আমার। আপনারাই আমারই সব। সেটা মনে করেই আমি কাজ করি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে যারা আমাদের প্রতি আস্থা রেখে নৌকায় ভোট দিয়েছেন তাদের বিশ্বাস আমরা বৃথা যেতে দেয়নি। কক্সবাজারের প্রতিটি অঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিয়েছি এবং দিয়ে যাচ্ছি। কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ার ব্যবস্থা চলছে। এখানকার
বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সমুদ্রের পানি ছুঁয়ে নামতে পারবে। এছাড়া জলবায়ু উদ্বাস্তুসহ দুস্থ মানুষের আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। শুধু তা নয়, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলার জন্য কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে এখানে।
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে ঘুমধুম রেললাইনের ব্যবস্থা করার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, চমৎকার রেল স্টেশন নির্মাণ হচ্ছে । কক্সবাজারের সড়ক চার লেনে উন্নীত করণ করা হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে লবণ চাষ, চিংড়ি উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের সাথে সিলেট এবং বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকায় যাতে করে বিমান চলাচল হয় সেই ব্যবস্থাও নিয়েছি। যশোর থেকে কক্সবাজার, সিলেট থেকে কক্সবাজার এরকম বিভিন্ন জায়গা থেকে যেন এখানে সরাসরি বিমান চলাচলের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যেন পরিকল্পিতভাবে এই পর্যটন শহর, এই পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠে সেই লক্ষ্যেই আমরা এটা একটা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে দিয়ে দিয়েছি। যাতে সঠিকভাবে আমাদের এই সমুদ্র সৈকত ব্যবহার এবং উন্নত হতে পারে সেই ব্যবস্থা নিয়েছি।
মহেশখালীকে সিঙ্গাপুরের আদলে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, মহেশখালীর মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে, সোনাদিয়াতে ইকোপার্ক নির্মাণ করা হবে, টেকনাফ, সাবরংসহ এই কক্সবাজারে ৬টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। দেশি বিদেশী বিনিয়োগ আসবে।
তিনি বলেন, আমাদের যারা ছেলে মেয়ে, যুব সমাজ, তরুন সমাজ তারা নিজেরা নিজের পায়ে দাঁড়াবে, কাজ করবে সেই সুযোগ আমরা সৃষ্টি করেছি। রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ টেনে তাদের যত দ্রুত সম্ভব নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ তাঁর সরকার নিচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা এখানে আশ্রয় নিয়েছে। আমি কক্সবাজারবাসীকে ধন্যবাদ জানাই যে তাদেরকে আপনারা আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টা যত তাড়াতাড়ি তারা নিজের দেশে চলে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। আর ভাসানচরের আরেকটি জায়গা আমরা নির্মাণ করে তাদেরকেও সেখানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি। কিছু কিছু দেশ তাদের নিজের দেশে নিতে চায়। তার সুযোগটাও আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি।
কক্সবাজার তার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবঙ্গ শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত প্রিয় জায়গা ছিল বলেও উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
তিনি বলেন, ‘বাবা যখনই কারাগার থেকে মুক্তি পেতেন আমাদের নিয়ে কক্সবাজার আসতেন। জাতির জনকের সঙ্গে এখানকার অনেক স্মৃতি জড়িত। তাই, কক্সবাজারের মানুষ সব সময় আমাদের হৃদয়ে আছে।’