ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উড়ন্ত জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে ১৩৭ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে সাকিবের দল। ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৩৬৫ রান তোলে ইংল্যান্ড। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৮.২ ওভারে ২২৭ রানেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা।
৩৬৬ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের হয়ে যথারীতি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই রিস টপলির বলে জনি বেয়ারস্টোর তালুবন্দী হন তামিম। আউট হওয়ার আগে ১ রান করেন তিনি।
এরপর উইকেটে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে রানের খাতা খোলার আগেই টপলির বলে লিভিংস্টোনকে ক্যাচ দেন এ বাঁ-হাতি ব্যাটার। দলের হাল ধরতে বাইশ গজে আসেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। কিন্তু উইকেটে থিতু হওয়ার আগে সাজঘরে ফিরেছেন তিনিও।
এর পরেই উইকেট বিলিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজও। ম্যাচের ৯ম ওভারে ক্রিস ওকসের বলে জস বাটলারের তালুবন্দী হন তিনি।
নিয়মিত বিরতিতে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা। তবে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৬২ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন লিটন। একই সঙ্গে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটিও তুলে নেন টাইগার ওপেনার।
অবশ্য সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে ক্রিস ওকসের বলে বাটলারের তালুবন্দী হন লিটন। আউট হওয়ার আগে ৭৬ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার।
পরে হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নেন অভিজ্ঞ মুশফিক। ম্যাচের ৩০তম ওভারের তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটে নিজের ৪৭তম ফিফটি করেন মুশি। অবশ্য ফিফটির ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। আউট হওয়ার আগে ৫১ রান করেন তিনি।
ব্যাট হাতে আশা জাগিয়ে ইংলিশ বোলারদের বিপক্ষে লড়াই করছিলেন হৃদয়। কিন্তু তিনিও আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন। লিভিংস্টোনের বলে বাটলারের তালুবন্দী হন তিনি। এর আগে দুই বাউন্ডারিতে ৩৯ রান করেন হৃদয়।
এর পরেই রশিদের বলে বোল্ড হন শেখ মাহেদী। তার বিদায়ে ম্যাচ থেকে রীতিমতো ছিটকে যায় বাংলাদেশ। শেষ মুহূর্তে তাসকিন ও শরিফুলের ছোট্ট ক্যামিওতে টাইগারদের ইনিংস থামে ২২৭ রানে।
এদিন ইংলিশদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেছেন রিস টপলি। এছাড়া দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন ক্রিস ওকস।
এর আগে, টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সাকিব। কিন্তু তার এ সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল তা প্রথম পাওয়ার প্লেতেই টের পায় বাংলাদেশ। দলীয় ১১৫ রানের সময় বেয়ারেস্টোকে বোল্ড করেন সাকিব। তার আগে বেয়ারেস্টো ৫৯ বলে ৮ চারের সাহায্যে ৫২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। এটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ১৬তম হাফ সেঞ্চুরি।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মালান-জো রুটের সঙ্গে ১৫১ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ২৬৬ রানে মালানকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন শেখ মেহেদী। তার আগে অবশ্য তিনি ১০৭ বলে ৫ ছয় ও ১৬ চারে ১৪০ রানের ঝলমলে ইনিংস উপহার দেন। এটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি এবং ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।
এরপর দ্রুতই ফিরে যান অধিনায়ক বাটলার। তিনি শরিফুলের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। দলীয় ৩০৮ রানে রুটকে ফেরান শরিফুল। তার আগে রুট ৬৮ বলে ১ ছয় ও ৮ চারের সাহায্যে ৮২ রান সংগ্রহ করেন। এরপর দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে ইংলিশরা। শেষ দিকে টাইগার বোলাররা তাদের দাপট দেখাতে শুরু করলে ৩৬৪ রানে আটকে যায় ইংলিশরা। বাংলাদেশের হয়ে শেখ মেহেদী ৪টি, শরিফুল ৩টি, তাসকিন ও সাকিব একটি করে উইকেট লাভ করেন।