ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে যে শুধু আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা নয়। সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মালামাল পুড়ে যাওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব মাঠ এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ব্যাপক হারে পড়বে। বিশেষ করে ওষুধশিল্পের প্রচুর পরিমাণ কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এসব দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জীবনরক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করতো।
আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) কার্গো ভিলেজের সামনে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলছিলেন আমদানিকারক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মকর্তারা।
ইআরএল নামের ঢাকার গুলশানের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক কামাল। তিনি জানান, সাত বছর ধরে তারা চীন থেকে জুতা, ব্যাগ আমদানি করেন। গত বৃহস্পতিবার তাদের প্রায় ৮০ লাখ টাকার মালামাল আসে। কিন্তু শুক্র ও শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে চালান বের করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে শনিবার দুপুরে কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে।
কামাল বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা বিমানবন্দরে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর জানতে পারি আমাদের সব মালামাল পুড়ে গেছে। এখন কী করবো বুঝতে পারছি না। ইন্সুরেন্সে কতটা কাভার করবে তা বুঝতে পারছি না।’
বিমানবন্দরের আট নম্বর ফটকের সামনে কথা হয় চট্টগ্রামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মহসিন আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা চীন থেকে লিফটের বিভিন্ন পার্টস আমদানি করে পাইকারি দামে বিভিন্ন এজেন্টের কাছে বিক্রি করি। এ মালামালের জন্য অনেক এজেন্ট অগ্রিম টাকা দিয়েছেন। এখন আগুনে সব পুড়ে যাওয়ার পর সবাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিন্তু তাদের কিছু বলতে পারছি না।’
কার্গো ভিলেজে যখন আগুন লাগে তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দায়িত্বরত এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আজ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে আলাপকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই দিন মুহূর্তেই আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার স্টেশন থাকার পরও তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এ আগুনের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিভিন্ন সিঅ্যান্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্ট ও ক্ষুদ্র আমদানিকারকরা।’
এই কর্মকর্তা জানান, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কোটি কোটি টাকার পোশাক পণ্য, ওষুধশিল্পের কাঁচামাল ও আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের বহু শিপমেন্ট পুড়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।