মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫, ১৭ আষাঢ়, ১৪৩২, ৫ মহর্‌রম, ১৪৪৭

দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের ক্যান্টনমেন্ট বরকল, শাহজাহান ইসলামাবাদী জিওসি

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

মুক্তিযুদ্ধের এক কিংবদন্তী শাহজাহান ইসলামাবাদী। দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের তিনিই ছিলেন প্রধান নায়ক। কিংবা এভাবেও বলা যায়, তাঁকে কেন্দ্র করেই দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধ গড়ে উঠেছিল। তাঁর প্রধান কৃতিত্ব হচ্ছে তিনি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ন্যায় ভারতে না গিয়ে দেশের অভ্যন্তরে থেকেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। চট্টগ্রামে মৌলভী সৈয়দ ও সুলতান-উল-কবির চৌধুরীও দেশে থেকেই মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। তবে তারা দু’জনই প্রথম দিকে ভারতে গিয়েছিলেন, তবে বেশিদিনের জন্য নয়। শাহজাহান ইসলামাবাদী একবারের জন্যও ভারতে যাননি।
পটিয়া, আনোয়ারা ও বাঁশখালী এই তিন থানা জুড়েই ছিল শাহজাহান ইসলামাবাদীর মুক্তিযুদ্ধের বিস্তৃতি। বোয়ালখালীতেও দু’একটা অপারেশন করেন। তাঁর একটি গ্রæপের অধীনে অনেক গ্রæপ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তাঁর গ্রæপে যতজন মুক্তিযোদ্ধা ছিল, নিয়মিত বাহিনী হলে হয়ত তাদেরকে নিয়ে একটি ব্যাটালিয়ন গঠন করা যেত। ব্যাটালিয়নের অধীনে অন্তত দুই থেকে ছয়টি কোম্পানি থাকে। সাধারণত ৫০০-১৫০০ সৈন্য নিয়ে সামরিক বাহিনীতে একটি ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়। শাহজাহান ইসলামাবাদীর গ্রæপে পাঁচ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ছিলো। নিয়মিত বাহিনী হলে তাঁর গ্রæপকে অনায়াশে একটি ব্যাটেলিয়ান হিসেবে গণ্য করা যেত। তাঁর র‌্যাংক হতো লেফটেন্যান্ট কর্নেল। কিন্তু গেরিলা বাহিনী হওয়ায় সেগুলি আর হয়নি। মুক্তিযুদ্ধকালে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে যদি একটি যুদ্ধ এলাকা বা সেক্টর হিসেবে গণ্য করা হতো, তাহলে বরকল হতো তার হেডকোয়ার্টার, যাকে সামরিক পরিভাষায় বলতে পারি ক্যান্টনমেন্ট। শাহজাহান ইসলামাবাদী হতেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের মুক্তিবাহিনীর জিওসি।
শাহজাহান ইসলামাবাদী আওয়ামী লীগ করতেন না। কিন্তু দেশকে ভালোবাসতেন। মনে প্রাণে চাইতেন পাকিস্তানের গোলামীর জিঞ্জির ছিন্ন করে বাংলাদেশ স্বাধীন হোক। তাঁর বিখ্যাত পিতা মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী তাঁর স্বদেশপ্রেমের উৎস। মওলানা ইসলামাবাদী আজীবন মাতৃভ‚মির স্বাধীনতা, স্বদেশ ও স্বজাতির মুক্তির স্বপ্ন লালন করে বৃদ্ধ বয়সে কারানিগ্রহ ভোগ করেছিলেন। তাঁকে লাহোর জেলে মাথা নিচে পা ওপরের দিকে ছাদের সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে আজাদ হিন্দ ফৌজের সাথে তাঁর সম্পর্ক এবং নেতাজী সুভাষ বসুর হদিস জানতে চেয়েছিলো। বুড়ো হাড়ে টনটনে ব্যথা সহ্য করেও বুডোর কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা সম্ভব হয়নি। তাঁরই তো সন্তান শাহজাহান ইসলমাবাদী, বহুত না হো তো থোড়া ত হবেনই। হয়েছিলেন কিছু পিতৃবৎ শাহজাহান ইসলামাবাদী। আমি লক্ষ্য করেছি মওলানা ইসলামাবাদীর দৈহিক বৈশিষ্ট্যটিও এই পুত্রটি আত্মসাৎ করেছিলেন। তাঁর একমাত্র কন্যার একমাত্র পুত্র ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ আল হারুনের দেহ সৌষ্ঠবেও তাঁর নানার শরীরের আশ্চর্য মিল লক্ষ্য করে আমি অবাক হয়ে ভাবি কী করে এটা সম্ভব হলো। হারুন ভাইও তাঁর নানার ন্যায় একহারা শীর্ণ দীঘল দেহের অধিকারী। তবে নানার ঈগল চঞ্চু নাকটি বোধ হয় পাননি।
শাহজাহান ইসলমাবাদীর বড় কোয়ালিফিকেশন হচ্ছে তিনি ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর পুত্র। যদিও তাঁর নিজের যোগ্যতাও কম ছিলো না।
মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, ডা. অন্নদাচরণ খাস্তগীর, শেখ-এ-চাটগাম কাজেম আলী মাস্টার, যাত্রা মোহন সেন, দেশপ্রিয় জে এম সেনগুপ্ত, শরচ্চন্দ্র দাশ, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ, নবীন চন্দ্র সেন, কৃপাশরণ মহাস্থবির, ড, বেণীমাধব বড়–য়া, নূর আহমদ চেয়ারম্যান, কমরেড মুজফফর আহমদÑএঁরা আমাদের প্রাতঃস্মরণীয় মহাপুরুষ। মওলানা ইসলামাবাদী একটি ব্যতিক্রমী চরিত্র, তাঁর জাত আলাদা। এ ধরনের সুপারম্যান গÐায় গÐায় জন্মায় না। জাতি ভাগ্যবান হলে এরকম দু’একজন মহাপুরুষ জন্মায়। বাংলাদেশ অবশ্যই ভাগ্যবান। মওলানা ইসলামাবাদী জন্মেছিলেন এ দেশে। মওলানা ইসমাইল হোসেন সিরাজী, মওলানা আকরম খাঁ তাঁর সগোত্র হতে পারেন।
মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী বিধাতার এক অপূর্ব সৃষ্টি। এমন বহুমুখী প্রতিভা বিধাতার সৃষ্টিতে খুব কমই দেখতে পাই। রাজনীতি, সাহিত্য, সাংবাদিকতা, সমাজসেবা, সংগঠন, ধর্ম-এমন বিচিত্র পথে তাঁর প্রতিভা বিকশিত হয়েছে যে, আমাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানে তার কোন পরিমাপ করে উঠতে পারি না। মওলানা ইসলামাবাদী রাজনীতি করতেন, তাঁর রাজনীতির উত্তরাধিকার হয়তো কিছুটা পেয়েছিলেন তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র শামসুজ্জামান ইসলামাবাদী, যাঁর নামে বরকলে একটি স্কুল আছে। তিনি লেখক, সাংবাদিক ও পিতার অনুসারী ছিলেন। তিনি অকাল প্রয়াত। মওলানা ইসলামাবাদী ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিপুরুষ, আজাদ হিন্দ ফৌজের সদস্য-যোদ্ধা ছিলেন; মওলানা ইসলামাবাদীর এই গুণের উত্তরাধিকার বর্তেছে শাহজাহান ইসলামাবাদীর ওপর। মওলানা ইসলামাবাদী সাংবাদিক ছিলেন, তাঁর সাংবাদিক প্রতিভা নিয়ে জন্মেছিলেন তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র বদরুল আজাদ ইসলামাবাদী (বিএ) আজাদ ইসলামাবাদী।
মওলানা ইসলামাবাদী সশস্ত্র যুদ্ধ করে ব্রিটিশের কাছ থেকে স্বাধীনতা উদ্ধার করতে চেয়েছিলেন। তাঁর পুত্র শাহজাহান ইসলামাবাদীও বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। শাহজাহান ইসলামাবাদী মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিলেন, যদিও তাঁর পিতা বিজয়ী হতে পারেননি। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে শাহজাহান ইসলামাবাদী চিটাগাং চেম্বারে কাজ করতেন। প্রধান হিসাব রক্ষক ছিলেন তিনি চেম্বারের।
শাহজাহান ইসলামাবাদী সক্রিয় রাজনীতি না করলেও রাজনীতির উৎসাহী পর্যবেক্ষক এবং রাজনৈতিক বই-পুস্তক, বিশেষ করে বিভিন্ন দেশের বিপ্লবের ইতিহাস, মার্কসবাদী লিটারেচারের নিবিড় পাঠক ছিলেন। প্রখ্যাত বামপন্থী নেতা অধ্যাপক আসহাবউদ্দীন আহমদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিলো তাঁর। বহু সময় বরুমচড়ায় শঙ্খের চরে একটি খামার বাড়িতে অধ্যাপক আসহাবউদ্দীন শাহজাহান ইসলামাবাদী, আনোয়ারার শামসুল আলম মাস্টার এবং সমমনা আরো দু’একজনকে নিয়ে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং তাঁদের করণীয় নিয়ে আলোচনা করতেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে ৬ দফা দেয়ার পর অধ্যাপক আসহাবউদ্দীন তাকে নিয়ে ব্যাঙ্গ করলেও ৬ দফার মধ্য দিয়ে যে পাকিস্তানের রাজনীতি মোড় পরিবর্তন করতে যাচ্ছে, সেটা শাহজাহান ইসলামাবাদীর দৃষ্টি এড়াতে পারেনি। তিনি কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছেন। এই সূত্রে তিনি দেশে রাজনৈতিক অগ্রগতির খোঁজখবর পেতেন এবং নিজেকে আপডেট করে রাখতেন।
৭১-এর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করলে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। শাহজাহান ইসলামাবাদী শহরেই ছিলেন। ইপিআর-এর কোয়ার্টার মাস্টার ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম (পরে মেজর ও বীর উত্তম) শহরে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেন। শাহজাহান ইসলামাবাদী প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেন। ৩০/৩১ মার্চ প্রতিরোধ ভেঙে পড়তে থাকলে সবাই গ্রামের দিকে চলে যেতে থাকেন। শাহজাহান ইসলামাবাদী বুঝতে পেরেছিলেন, ইপিআর, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ছাত্র-জনতার প্রাথমিক প্রতিরোধ আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রে সুসজ্জিত সুশিক্ষিত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সাঁড়াশী আক্রমণের মুখে টিকতে পারবে না। তখন গ্রামে গিয়ে নতুন করে প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে হবে। সেজন্য শাহজাহান ইসলমাবাদী প্রস্তুত হয়েই ছিলেন। শহরের প্রতিরোধ প্রায় ভেঙে পড়লে তিনি দুটি অস্ত্র নিয়ে আড়ালিয়ার চরে (বাইনজুরি) তাঁর পিতামহ মতিউল্লাহ পÐিতের গ্রামীণ ভদ্রাসন বাটীতে চলে গেলেন। শুধু বাড়ি নয়, এটি বিপ্লবতীর্থ। মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ও তাঁর সন্তানদের আঁতুরঘর।
শাহজাহান ইসলামাবাদী গ্রামে গিয়ে যাঁদেরকে চোখ বুঝে নির্ভর করা যায়, তেমন বিশ্বস্ত, লোকদের একজন দু’জন করে ডেকে ডেকে তাঁর যুদ্ধ পরিকল্পনার কথা জানাতে শুরু করেন। তিনি বলেন, শহরের প্রতিরোধ ভেঙে পড়েছে, এখন গ্রাম থেকেই নতুন করে যুদ্ধ আরম্ভ করতে হবে।
প্রথমে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. গোলাম মাওলার সাথে পরামর্শ করেন। এরপর নিজ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ও ছাত্তার, পাশের গ্রামের ফেরদৌস ইসলাম খান, আহমদুর রহমান ও আবুল বশরসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে তোলেন একটি সক্রিয় গ্রæপ। পিতা মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী প্রতিষ্ঠিত শামসুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেন।
শুরু করেন অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ। এর অল্প কিছুদের মধ্যে শাহজাহান ইসলামাবাদীর গ্রæপে এসে যোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরিদুল আলম (মুক্তিযুদ্ধে শহীদ), ফরিদুল আলম, মঞ্জুর, আলমগীর, গউছ মোহাম্মদ মালেক, মোজাহের, হাবিবুর রহমান, ছবুর, সোলাইমান, কালামসহ আরও অনেকে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এই গ্রæপে প্রায় ৪ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা যোগ দেন।
ডা. গোলাম মাওলা ছিলেন শাহজাহান ইসলামাবাদীর খুব বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ছিলেন শাহজাহান গ্রæপের প্রশিক্ষক ও চিকিৎসক। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র চালনা, অচল অস্ত্র সচল করা এবং গেরিলা যুদ্ধের কৌশল শেখাতেন। অসুস্থ, আহত, গুলিবিদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাসহ গ্রামের মানুষদের চিকিৎসা করতেন। শাহজাহান ইসলামাবাদীর মা-ও ছিলেন একজন মহীয়সী নারী। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মাতৃস্নেহে বুকে টেনে নিয়েছেন। অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিয়ে সুস্থ করেছেন, রান্না করে খাইয়েছেন, পরণের ভেজা কাপড়ও পাল্টে দিয়েছেন।
শাহজাহান ইসলামাবাদী গ্রæপের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন ফেরদৌস ইসলাম খান। প্রথমবার তাঁর নেতৃত্বে পটিয়া থানা অপারেশন হয়েছিল। এরপর রাজাকার ও পাকিস্তানি সৈন্যরা থানা পুনরায় দখল করে নিলে শাহজাহান ইসলামাবাদীর নেতৃত্বে একটি অপারেশনের মাধ্যমে পটিয়া থানা মুক্ত করা হয় ।
কানাইমাদারীর হাবিলদার আবু ইসলাম তাঁর গ্রæপ নিয়ে আলাদাভাবে থাকলেও তিনি শাহজাহান ইসলামাবাদীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বা তাঁকে জানিয়ে অপারেশন করতেন। শাহজাহান ইসলামাবাদীর পরিকল্পিত অপারেশনেও প্রয়োজন হলে অংশগ্রহণ করতেন। জুন-জুলাইর দিকে ভারতে থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামে অপারেশনের দায়িত্ব নিয়ে বিএলএফ-এর প্রথম গ্রæপ পটিয়া পৌঁছলে সেটিও শাহজাহান ইসলামাবাদীর গ্রæপে যোগ দেয়। এই গ্রæপের কমান্ডার ছিলেন, শহীদ নূরুল আনোয়ার, ডেপুটি কমান্ডার শহীদ ইদ্রিস আনোয়ারী, অজিত, নাসিরুদ্দিন চৌধুরী (সাংবাদিক ও লেখক) ও রণজিৎ।
সাত্তার, মোতালেব এবং সম্ভবত শাহ আলম নামে বরকল এলাকার তিনজন মুক্তিযোদ্ধা ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসার পথে পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিলেন। তবে কিছুদিন পরে তারা ছাড়া পান এবং তারাও এসে শাহজাহান ইসলামাবাদীর গ্রæপে যোগ দেন।
বরকল এলাকার লোককবি রুহুল আমিন শাহজাহান ইসলামাবাদীর যুদ্ধকালীন তৎপরতা খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাঁর দৃষ্টিতে শাহজাহান ইসলামাবাদী ছিলেন স্বল্পভাষী, চিন্তাশীল এবং বুদ্ধিমান ব্যক্তি। তিনি তাঁর বিশ্বস্ত কয়েকজনকে নিয়ে একটি গোপন গোয়েন্দা গ্রæপ তৈরি করেছিলেন। যাঁদের পরিচয় তিনি, তাঁর ছোট ভাই বদরুল আলম আজাদ ইসলামাবাদী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. গোলাম মাওলা ছাড়া আর কেউ-ই জানতেন না। তাঁরা ছিলেন সাধারণ মানুষ। এই গ্রæপের কাজ ছিল এলাকার মানুষের গতিবিধি, মুক্তিযোদ্ধাদের গতিবিধি এবং কর্মকাÐের উপর নজর রাখা। তাঁরা প্রতিদিন শাহজাহান ইসলামাবাদীকে আপডেট করতেন। শাহজাহান ইসলামাবাদী সে অনুযায়ী পরিকল্পনা সাজাতেন। বদরুল আলম আজাদ ইসলামাবাদী ছিলেন শাহজাহান ইসলামাবাদীর ছোট শাহজাহান ইসলামাবাদী নিজ গ্রামে অপরিচিত হয়েও যে মুক্তিযুদ্ধের ঘাঁটি করতে পেরেছিলেন, সেটা ভাই বিএ আজাদ ইসলামাবাদীর কারণেই সম্ভব হয়েছিলো। শাহজাহান ইসলামাবাদীকে গ্রামের মানুষ চিনতেন না। কারণ, তিনি শহরে থাকতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি গ্রামে আসেন।
বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট মহি আলম চৌধুরীও এসে শাহজাহান ইসলমাবাদাীর গ্রæপে যোগ দেন। তিনি বরিশালের উলানিয়া গ্রামের মানুষ। ছুটিতে থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন। তিনি প্রথমে ভারতে যান। সেখান থেকে তাঁকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানার পাঁচটি গ্রæপের প্রধান কমান্ডার নিযুক্ত করে দেশের অভ্যন্তরে পাঠানো হয়। তিনি বরকল এসে শাহজাহান ইসলামাবাদীর সঙ্গে দেখা করেন। শাহজাহান ইসলামাবাদী তাঁকে তাঁর গ্রæপের অপারেশন কমান্ডার নিযুক্ত করেন। তাঁর অধীনস্থ গ্রæপ কমান্ডার মহসিন খানও তাঁর গ্রæপ নিয়ে শাহজাহান ইসলামাবাদী গ্রæপের সঙ্গে বিভিন্ন অপারেশন অংশ নিতে থাকেন। এভাবে বরকল, বরমা, কেশুয়া, বাইনুজরী গ্রাম নিয়ে বরকল রাস্তার দু’পাশের বিস্তীর্ণ এলাকা মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়। শাহজাহান ইসলামাবাদীর নেতৃত্বে এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রায় অধিকাংশ অপারেশনে অংশগ্রহণ করতেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে যুদ্ধাহতদের চিকিৎসার জন্য আনা হতো, আবার প্রশিক্ষণের জন্যও আসতেন। এছাড়া বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেক মুক্তিযোদ্ধা, কমান্ডার, গ্রæপ কমান্ডার, এরিয়া কমান্ডার অপারেশনের আগে ও পরে শাহজাহান ইসলামাবাদীর কাছে নির্দেশনা ও পরামর্শ নিতে আসতেন, থাকতেন, আবার চলেও যেতেন।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের এমনি আরেকটা মুক্তাঞ্চল ছিলো পশ্চিম পটিয়ায়। জিরি ফকিরা মসজিদ থেকে সাঁইদাইর, বুধপুরা বাজার হয়ে দ্বারক পেরেপরা, পিঙ্গলা পর্যন্ত বিশাল মুক্ত এলাকা ছিল সেটি।
আনোয়ারা থানা অপারেশন
বঙ্গোপসাগর উপক‚ল থেকে ১০ কিমি উত্তর-পূর্বদিকে এবং কর্ণফুলি নদীর মোহনা থেকে ৮ কিমি পূর্বদিকে আনোয়ারা থানার অবস্থান। থানা কমপ্লেক্স থেকে ৪ কিমি দক্ষিণ শংখ নদী, ৫ কি. মি. পূর্বদিকে চাঁনখালি খাল। থানা কমপ্লেক্সের তিনশত গজ উত্তর দিকে ছিল সার্কেল অফিসারের (সিও) অফিস। থানা কমপ্লেক্স বরকল আনোয়ারা সড়কের ঠিক পাশেই অবস্থিত। এই থানা থেকে ৬ কি.মি পশ্চিম দিকে ছিল মেরিন একাডেমি, যেখানে পাক নেভির একদল সদস্য অবস্থান করত। তিন গ্রæপে মিলে মোট ৪০/৫০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। ভোর পাঁচটায় কমান্ডারের নির্দেশে অপারেশন শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়। শাহজাহান ইসলামীবাদী ও সার্জেন্ট মহি আলমের নেতৃত্বে এই অপারেশনের পরিকল্পনা করা হয়। রাত ১২ টার দিকে বরকল শেল্টার থেকে কমান্ডার সার্জেন্ট আলমের নেতৃত্ব পায়ে হেঁটে ১০/১২ জনের একটি দল আনোয়ারা বারখানইস্থ কমান্ডার আবদুল লতিফের বাড়িতে অস্থায়ী শেল্টারে অবস্থান নেয়। ১০/১২ জনের আরেকটি দল আনোয়ারা থানার কোয়ার্টার মাইল পূর্বপাশে মুক্তিযোদ্ধা স্বপনের বাড়িতে অবস্থান নেয়। আনোয়ারা কেলিশহর থেকে ১০/১২ জনের আরেকটি গেরিলা গ্রæপ পূর্বের পরিকল্পনা যোগাযোগের ভিত্তিতে সোনা মিয়ার বাড়িতে মিলিত হয়। রাত ১২টার দিকে অপারেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত শাহজাহান ইসলামাবাদী ও সার্জেন্ট মহি আলম উক্ত দুটি শেল্টারে সবার সাথে যোগাযোগ করেন। রাত একটার মধ্যে সবগুলো দল আনোয়ারা থানার দুই কিলোমিটার পূর্বদিকে একটি গোপন আশ্রয়কেন্দ্রে মিলিত হয়। আক্রমণের সময়ক্ষণ নির্ধারণ করে উপদলগুলোকে স্ব স্ব দায়িত্ব বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সার্জেন্ট মহি আলমের নেতৃত্বে কাজী ইদ্রিস, ফেরদৌস ইসলাম, নুরুল ইসলামসহ প্রায় ১০/১২ জনের কভারিং কাট অব ও হোল্ডিং পার্টি-১ আনোয়ারা প্রাইমারি স্কুলের একশত গজ পূর্বদিকে নির্দিষ্ট স্থান পুকুরপড়ে অবস্থান নেয়। তাঁদের সাথে কিছু রাইফেল ও গ্রেনেড ছিল। শাহজাহান ইসলামাবাদীর নেতৃত্বে আবদুর সবুর, মজিদ, মঞ্জুর আলমসহ আরো প্রায় ১০/১২ কভারিং, কাট অব ও হোল্ডিং পার্টি-২ কিছু রাইফেল ও গ্রেনেডসহ আনোয়ারা থানার পশ্চিম দিকে ১৫০ গজ দূরে আনোয়ারা গ্রামের মধ্যে অবস্থান নেয়। হাবিলদার আবু ইসলামের নেতৃত্বে কাসেম, জব্বার, বিএলএফ গ্রæপের নাসির (সাংবাদিক ও লেখক নাসিরুদ্দিন চৌধুরী), আইয়ুবসহ প্রায় ১৫/২০ জনের এ্যাকশন পার্টি আনোয়ারা থানা দক্ষিণদিকে আনোয়ারা বরকল রাস্তা পাশ থেকে ১০০ গজ পশ্চিম দিকে একটি মন্দিরের পাশে অবস্থান নেয়। রাত ৪টার মধ্যে সবাই পজিশন নেয়ার কাজ সমাপ্ত করে দলনেতার ফায়ারের আদেশের অপেক্ষায় থাকে। পূর্বেই সিদ্ধান্ত হয় যে, ভোর ৫টার সময় দলনেতা সার্জেন্ট আলমের দল থেকে থানা এবং সিও অফিস লক্ষ্য করে ফায়ার ওপেন করা হবে। সাথে সাথে অন্য দুটি গ্রæপও ফায়ার ওপেন করবে। ২২ সেপ্টেম্বর ভোর ৫টায় পরিকল্পনা মোতাবেক দলনেতা আনোয়ারা থানা ও সিও অফিস লক্ষ্য করে ফায়ার শুরু করলে বাকি গ্রæপ দুটো থেকে ফায়ার শুরু হয়। আনোয়ারা থানা ও রাজাকারের অবস্থানগুলো থেকেও এলোপাথাড়ি চারদিকে পাল্টা গুলি হতে থাকে। আনোয়ারা স্কুলে কয়েকজন রাজাকার অবস্থান নিয়েছিল। তারা তাদের অবস্থান থেকে অপারেশন দলের ওপর গুলিবর্ষণ করতে থাকে। তাদের গুলিতে হাবিলদার আবু ইসলাম হাতে গুলিবিদ্ধ হন। তবুও তিনি হামলা বন্ধ করেননি। এভাবে প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট গুলিবিনিময়ের এক ফাঁকে হাবিলদার আবু ইসলাম ও আরো কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা হামাগুড়ি দিয়ে থানার পেছন দিকে পৌঁছে যান। থানায় অবস্থানরত প্রায় ১০ জন পুলিশ (সঠিক সংখ্যা নিয়ে মতভেদ আছে) গেরিলাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। থানার অভ্যন্তরে ইবিআরসির চারজন রিক্রুট-এর সন্ধান পাওয়া যায়। এদের একজন অপারেশনের সময় মারা যায়। পাকবাহিনী তাঁদেরকে ধরে নিয়ে এসেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কাজ করার শর্তে তাদেরকে সাথে নিয়ে নেওয়া হয়। থানার মধ্যে অবস্থানরত যেসকল রাজাকার হাতেনাতে ধরা পড়ে তাদেরকে থানার পাশে পুকুরপারে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই অপারেশনে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে হাবিলদার আবু ইসলামসহ তিনজন গুলিতে আহত হয়। এছাড়া বেশকিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এই অপারেশনের ফলে এই এলাকায় রাজাকারদের উৎপাত কমে যায়। রাজাকাররা এই এলাকা ত্যাগ করে আনোয়ারার পশ্চিম সীমান্তে গহিরায় চলে যায়। ঘটনার পরেরদিন চট্টগ্রাম শহর থেকে এসে বেশ কিছু পাক আর্মি আনোয়ারা থানার আশেপাশে দোকানপাট ও বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে লুটপাট করে চলে যায় ।
শাহজাহান ইসলামাবাদীর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সময় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন :
২. জিরি মাদ্রাসা আক্রমণ: ১৪ আগস্ট এই মাদ্রাসায় অবস্থানরত রাজাকার, মিলিশিয়া ও পাকিস্তানী বাহিনীর উপর আক্রমণের প্ল্যান করা হয় জুলাই মাসে হাবিলাসদ্বীপে বসে। শাহজাহান ইসলামাবাদী সহ আরও কয়েকজনের নেতৃত্বে অপারেশনের পরিকল্পনা চ‚ড়ান্ত হয়। ১৪ আগস্ট রাতে আক্রমণের উদ্দেশ্যে সবাই বুধপুরা হাসপাতালে জড়ো হন। সেখান থেকে দুটো দলে ভাগ হয়ে মাদ্রাসা আক্রমণ করা হয়। এই অপারেশনে তাঁরা সফল হন। বেশ কয়েকজন রাজাকার, পাকিস্তানী বাহিনী ও মিলিশিয়াকে হত্যা ও আটক করা হয় ।
৩. পটিয়া থানা আক্রমণ:পটিয়া থানা আক্রমণ দু’বার হয়েছিল। প্রথমবার শাহজাহান গ্রæপের ডেপুটি কমান্ডার ফেরদৌস খানের নেতৃত্বে। এরপর রাজাকার পাকিস্তানিরা দখল করে নিলে শাহজাহান ইসলামাবাদীর নেতৃত্বে একটি অপারেশনের মাধ্যমে পটিয়া থানা মুক্ত করা হয়। এই অপারেশনে শাহজাহান ইসলামাবাদীর নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করেছিলেন, পটিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস, মাহফুজুর রহমান খান, আবদুর রশিদ, দিলিপ দাস প্রমুখ ।
৪. বরমা রাজাকার ঘাঁটি আক্রমণ: শাহজাহান ইসলামাবাদী ও ইদ্রিস আনোয়ারীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা এই ঘাঁটিটি আক্রমণ করেছিলেন। যদিও রাজাকারদের কৌশলে তাঁরা চারদিক থেকে আটকা পড়ে গিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় তাঁরা দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শক্তি ও সাহস হারাননি। পরবর্তীকালে ইসলামাবাদীর প্রিয় বন্ধু সার্জেন্ট মহি আলম অসম সাহসিকতার সাথে অভিযান চালালে তাঁরা এই ঘেরাও থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু, সেই অপারেশনে সার্জেন্ট মহি আলম পাকিস্তানীদের ছোঁড়া গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ।
শাহজাহান ইসলামাবাদী আনোয়ারার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শামসুল আলম মাস্টারের গ্রæপের সঙ্গেও তাঁদের আমন্ত্রণে সেখানে গিয়ে অন্তত তিনটি অপারেশন করেছেন। এছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের সববৃহৎ অপারেশন আনোয়ারা থানা অপারেশনে তিনি তো ছিলেনই। শাহজাহান ইসলামাবাদী আনোয়ারা থানা অপারেশেনের পরিকল্পনা করেন এবং তিনি নিজে বিভিন্ন গ্রæপের সমন্বয়ে একটি বৃহৎ মুক্তিযোদ্ধা দলকে কমান্ড করে অপারেশনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন।
এরকম আরও ডজনখানেক সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে শাহজাহান গ্রæপ। যা এই লেখার সংক্ষিপ্ত পরিসরে তুলে আনা সম্ভব নয়।
এক সময়ে তিনি পূর্ব পাকিস্তান অ্যাসেম্বলির অনুবাদক ও ঢাকার কয়েকটি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করতেন। পরে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের চিফ অ্যাকাউন্টস অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দেরর ৮ ডিসেম্বর তিনি পরলোকগমন করেন ।

 

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

মুক্তিযুদ্ধ যাঁরা শুরু করেছিলেন তাঁরা চলে গেছেন, হারিছই আছেন একা

চট্টগ্রাম শহরে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ করেছিলেন, তাঁরা চলে যাচ্ছেন। সাতজন ছিলেন তাঁরা, পাঁচজন ইতিমধ্যে তাঁদের প্রভুর ডাক পেয়ে এ গ্রহ ছেড়ে চলে গেছেন প্রভুর সন্নিধানে।

বিস্তারিত »

আওয়ামী লীগ, বাঙালি জাতিসত্তার নির্মাণ ও বাংলাদেশ একসূত্রে গাথা

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২৩ বছরের অবিরাম সংগ্রাম এবং অবশেষে ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকেই

বিস্তারিত »

সুলতান কুসুমপুরী ও তাঁর কোম্পানি কমান্ডার হাবিলদার আবু’র মুক্তিযুদ্ধ

মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের ১৩জন এমপি সম্মুখ যুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তারা সেনা কর্মকর্তাদের ন্যায় মুক্তিযুদ্ধে তাদের গ্রæপকে কমান্ড করেন। এই ১৩ জন এমপি

বিস্তারিত »
প্রদ্যোৎ কুমার পাল

৭১-এর দুরন্ত গেরিলা প্রদ্যোৎ কুমার পাল

প্রদ্যোৎ কুমার একজন অসম সাহসী বীরের নাম। মুক্তিযুদ্ধে এই দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধা দক্ষিণ চট্টগ্রামের রণাঙ্গণ মাতিয়ে রেখেছিলেন তাঁর অসীম সাহস ও পরাক্রম দিয়ে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের চারটি

বিস্তারিত »

স্বাধীনতা ও সমাজতন্ত্রের সংগ্রামের অগ্রসৈনিক মিরসরাইর অহিদুল হক

অহিদুল হক মুক্তিযুদ্ধে যে অসাধারণ বীরত্ব, অসীম সাহস ও শৌর্যবীর্যের পরিচয় দেন, তা মিরসরাই থানার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে জাতীয় মুক্তির

বিস্তারিত »
বাংলাদেশে পিএইচপির উদ্যোগে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিখ্যাত প্রোটন ব্রান্ডের গাড়ি তৈরির কারখানা উদ্বোধনের পর মোনাজাত করছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ এবং পিএইচপির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সুফি শিল্পপতি মিজানুর রহমান ।

দার্শনিক শিল্পপতি সুফি মিজানুর রহমান পুরুষোত্তম

বাংলাদেশে পিএইচপির উদ্যোগে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিখ্যাত প্রোটন ব্রান্ডের গাড়ি তৈরির কারখানা উদ্বোধনের পর মোনাজাত করছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ এবং পিএইচপির

বিস্তারিত »

মুক্তিযুদ্ধে দোহাজারীর বীর চতুষ্টয় : খসরু-জাফর-রতন-কামাল

চট্টগ্রামের সভ্যতা মানুষ ও নদীর যুগ্ম-সৃষ্টি। ঐতিহাসিক কাল থেকে চট্টগ্রামে তিনটি বড় নদী পরিদৃষ্ট হয়। সর্ববৃহৎ কর্ণফুলী, অনতিবৃহৎ হালদা ও শঙ্খ নদী। কর্ণফুলী সদর ও

বিস্তারিত »

ষাটের_দশকের_ছাত্রনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সিরাজুল আলম

কাজী সিরাজুল আলম ষাটের দশকের শেষদিকে চট্টগ্রামের একজন বিশিষ্ট ছাত্রনেতা ছিলেন। ৬৯-৭০-এ তিনি ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেন। তাঁর বাড়ি সীতাকুÐে; তিনি সীতাকুÐে ৬৯-এর

বিস্তারিত »

মুক্তিযুদ্ধে_চিকিৎসকদের অবদান ও ডা.শৈবাল কান্তি দাশ

মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসকদের ভ‚মিকা নিরূপণের চেষ্টা করা হয়নি। তবে তাঁরা না হলে মুক্তিযোদ্ধারা, বিশেষ করে গেরিলা যোদ্ধাদের পক্ষে যুদ্ধে সফল হওয়া মুস্কিল ছিল। ইনফ্যান্ট্রি, আর্টিলারি, ক্যাভালরি

বিস্তারিত »