ইরানে দুই নারীসহ অন্তত ৭ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। সোমবার (২০ মে) আরও এক যুবকের ফাঁসি কার্যকর করার কথা রয়েছে। শনিবার (১৮ মে) এই ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে উরমিয়া কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে ৫৩ বছর বয়সী পারভীন মুসাভির। তিনি দুই সন্তানের মা।
নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস বলেছে, মাদক সংক্রান্ত মামলায় তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। একই অভিযোগে একই কারাগারে ৫ জন পুরুষের ফাঁসিও কার্যকর হয়।
অন্যদিকে ইরানের পূর্বাঞ্চলে নিশাপুরে ফাতেমে আদুল্লাহি নামে ২৭ বছর বয়সী এক যুবতীকে তার স্বামীকে হত্যার অভিযোগে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এই নারী তার এক কাজিনকে বিয়ে করেছিলেন।
ইরান হিউম্যান রাইটস বলেছে, এ নিয়ে এ বছর ইরানে কমপক্ষে ২২৩ জনের ফাঁসি কার্যকর হলো। তার মধ্যে শুধু মে মাসে ফাঁসি হয়েছে কমপক্ষে ৫০ জনের। এপ্রিলে পারসিয়ান নতুন বছর এবং রমজানের ছুটি থেকে এই প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তখন থেকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে ৬ জন নারী সহ ১১৫ জনকে। অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে ইরানে অধিক পরিমাণে নারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
অধিকারকর্মীরা বলছেন, এমন ঘটনায় অভিযুক্তদের বেশির ভাগই জোরপূর্বক বিয়ের শিকার। ২০১৫ সালের পর সবচেয়ে বেশি মানুষের ফাঁসি গত বছর কার্যকর হয়েছে ইরানে। অভিযোগ আছে, ২০২২ সালের শরতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ বৃদ্ধি পাওয়ার পর বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে সর্বোচ্চ সাজা।
ইরান হিউম্যান রাইটসের পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোগাদ্দাম বলেছেন, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা অগ্রহণযোগ্য। যাদেরকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে তারা দরিদ্র ঘরের এবং ইরানের সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ। যথাযথ বিচার করা হয়নি তাদের প্রতি।
ইরান হিউম্যান রাইটস বলেছে, চার বছর ধরে জেলে ছিলেন পারভীন মুসাভি। একটি প্যাকেজে ওষুধ আছে এই কথা বলে তা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে তাকে ১৫ ইউরো দেয়া হয়েছিল। আসলে ওই প্যাকেজে ছিল ৫ কিলোগ্রাম মরফিন।
আমিরি বলেন, এসব মানুষ ইরানে কিলিং মেশিনের শিকারে পরিণত হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে তারা নতুন প্রতিবাদ থামাতে মানুষের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করতে চাইছে।