ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুর কানাইপুরের তেতুলতলা নামক স্থানে বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের পাঁচজনসহ ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। তাদের ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ( ১৬ এপ্রিল) সকাল পৌনে আটটার দিকে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর ঘাতক বাসের চালক ও হেলপার পলাতক।
নিহতরা হলেন— আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের সওরাকান্দা গ্রামের তারা মোল্লার পুত্র রাকিব হোসেন মিলন মোল্লা (৪৫), তার স্ত্রী সুমি বেগম (৩০), শিশু পুত্র রোহান (৬), আরেক শিশুপুত্র আবু সিনান (৩), মা মর্জিনা বেগম (৭০), আলফাডাঙ্গার হিদাডাঙ্গা গ্রামের মৃত আলেক সরদারের স্ত্রী শুকুরুন্নেছা (৯৫), আলফাডাঙ্গা উপজেলার চর সরাইল গ্রামের তবিবুর খান (৫৫), আলফাডাঙ্গার বেজিডাঙ্গা গ্রামের সোনিয়া বেগম (৩৫), জাহানারা বেগম (৪৫), শিশু নুরানী (৮), হিদাডাঙ্গা গ্রামের কোহিনুর বেগম (৬০), বোয়ালমারীর কুমড়াইল গ্রামের ইকবাল শেখ (৩০) ও বোয়ালমারীর শেখর ইউনিয়নের কুমড়াইল গ্রামের সুর্য্য বেগম (৪৫) এবং পিকআপের ড্রাইভার আলফাডাঙ্গার কুসুমদি গ্রামের নজরুল ইসলাম (৪০)।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আলফাডাঙ্গা থেকে সকালে সিয়াম-সিনমুন নামের একটি পিকআপে করে ১৭ জন যাত্রী ফরিদপুরে আসছিলেন। পথিমধ্যে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুর শহরতলীর কানাইপুরের তেতুলতলা নামক এলাকায় ঢাকা থেকে মাগুরাগামী একটি দ্রুতগামী বাস পিকআপটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই ১১ জন নিহত হন। পরে হাসপাতালে নেবার পর মারা যান আরো ৩ জন। নিহতদের মধ্যে ৭ জন নারী, ৪ জন পুরুষ ও ৩ জন শিশু রয়েছে। এসময় ঘাতক বাসটির চালক ও হেলপার অন্য একটি গাড়িতে ওঠে পালিয়ে যায়।
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার সুভাষ বাড়ই জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তারা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার কাজে অংশ নেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনের লাশ এবং কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ উদ্ধার কাজে অংশ নেন। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিতে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি জানান, নিহতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা এবং আহতদের ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি লাশ দাফনের জন্য নগর ২০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।
দুর্ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া হাইওয়ে পুলিশও আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশ সুপার শাহিনূর আলম খান।