শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫, ২৬ বৈশাখ, ১৪৩২, ১০ জিলকদ, ১৪৪৬

পাকিস্তান আমলের ন্যায় আমলা-প্রধান রাজনীতি ও সংসদ, ছাত্রনেতারা ব্রাত্য

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

রাজনীতিটা রাজনীতিবিদদের হাত থেকে চলে যাচ্ছে। পাকিস্তান আমলে পাঞ্জাবি সামরিক-বেসামরিক আমলা নিয়ন্ত্রিত একটি অশুভ চক্রই পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রভুত্ব করতো। পর্দার আড়ালে বসে তারাই ক্ষমতার কলকাঠি নেড়ে রাজনীতিবিদের নাচাতো। বঙ্গবন্ধু আমলা-নিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা কাঠামো পাল্টে সেখানে রাজনীতিবিদদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। সেটা সম্ভব না হওয়ায় পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতার পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি। ’৭১-এ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে আমলাতন্ত্রের উপর রাজনীতিবিদদের হেজিমনি প্রতিষ্ঠিত হয়। ৭২ থেকে ৭৫-এর ১৪ আগস্ট পর্যন্ত রাজনীতিবিদরাই দেশ শাসন করেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন।
কিন্তু বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতের পর রাজনীতিতে অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটে যায়। তাতে রাজনীতির ওপর রাজনীতিবিদের নিয়ন্ত্রণ আবার আলগা হয়ে যেতে থাকে। ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক-বেসামরিক আমলারা রাজনৈতিক দলে নাম লিখিয়ে দলীয় টিকিট বাগিয়ে সংসদ নির্বাচনে অবতীর্ণ হয় এবং বিজয়ী হয়ে সংসদেও উপবেশন করতে থাকে। জিয়ার বিএনপি এবং এরশাদের জাতীয় পার্টিতে প্রথমে এই প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং পরে আওয়ামী লীগও এই পরিস্থিতির কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। যারা সংগ্রাম করে, অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার এবং জেল-জুুলুম সহ্য করে রাজনীতিতে জীবনটা কাটিয়ে দিয়েছেন, যেসব ছাত্রনেতা ছাত্ররাজনীতি শেষে জাতীয় রাজনীতিতে এসেছিলেন, রাজনীতির কক্ষপথ আবর্তনে তারা পিছিয়ে পড়েন এবং সংসদীয় রাজনীতির প্রতিযোগিতায় অর্থ ও পেশীশক্তির কাছে হেরে যান।
সিক্সটিজ, সেভেনটিজ ও আশির দশকের ছাত্রনেতা, যাঁরা এখন নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন, দুঃখজনক হলেও সত্য তাঁদের কোনো মূল্যায়ন হচ্ছে না। প্রৌঢ়ত্বের দিকে হেলে পড়েছে যাঁদের জীবন-সূর্য, তাঁরা দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। ছাত্রজীবন থেকে যাঁরা রাজনীতি করে আসছেন; ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান থেকে আশি-নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচারি এরশাদ ও নব্য স্বৈরাচার খালেদা জিয়ার আমলে যাঁরা রক্তাক্ত আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নিজেরাও পুলিশ ও প্রতিপক্ষের আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন, দলের মনোনয়ন ঘোষণার সময় তাঁদের নাম বিবেচনায় আসে না, এটাই তাঁদের চরম দুর্ভাগ্য।
স্বাধীনতার পর থেকে গত পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেসব ছাত্রনেতা রাজনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবিষ্ট হয়ে সেখানেও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন, তাঁরা হচ্ছেনÑ নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহতাবউদ্দিন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা-উত্তরকালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং বর্তমানে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মেয়র এবং নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ও বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছিরউদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পটিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম। কিন্তু এঁরা কেউ সংসদীয় রাজনীতির কল্কে পান নি।
তাঁরা ছাড়া উত্তর জেলার রাঙ্গুনিয়ায় ছাদেক চৌধুরী ছিলেন, তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন, কিন্তু জিততে পারেন নি। দক্ষিণ জেলার সাতকানিয়ায় মীর্জা কছির, পটিয়ায় এডভোকেট জসিম উদ্দিন খাঁন ও শামসুদ্দিন আহমদ ছিলেন কিন্তু তারা মনোনয়ন পাননি। সন্দ্বীপের রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ির আনোয়ারুল আজিম, হাটহাজারীর মোহাম্মদ ইদ্রিস ও হাজি কামাল সিনিয়র নেতা, কিন্তু কখনো সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। পটিয়ার শামসুদ্দিন, জসিম উদ্দিন খাঁন ও মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ছাড়াও এম এ জাফর, কাজী আবু তৈয়ব, এ কে এম আবদুল মতিন চৌধুরী, আ. ক. ম শামসুজ্জামান প্রমুখের সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু তাঁদের সাক্ষাৎ নেতা ইউসুফ ভাইয়ের পর বোয়ালখালী থেকে এসে মোছলেম উদ্দিন, তারপর শামসুল হক চৌধুরী এসে তিন তিনবার এমপি হয়ে যাবার পর পটিয়ার সংসদীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ কি হতে পারে তা আল্লাহই ভালো জানেন। শামসুল হক চৌধুরী পটিয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছেন, কাজেই তাঁর আবারও প্রার্থী না হওয়ার কোন কারণ নেই। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেনারেল ওয়াদুদের নাম শোনা যাচ্ছে। তিনি যোগ্য প্রার্থী। আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পটিয়া সদরের সন্তান বদিউল আলমও যোগ্য প্রার্থী; চট্টগ্রামে ছাত্র রাজনীতিতে কৃতিত্ব প্রদর্শনের পর ঢাকা গিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও তার যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন।
বঙ্গবন্ধুর আফসোস ছিলো এম এ আজিজের পরিবার থেকে তাঁর সন্তানদের মধ্যে কেউ আওয়ামী লীগ করলো না। বড় ছেলে অধ্যাপক নুরদ্দিন জাহেদ মঞ্জু, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে প্রথমে কিছুদিন বঙ্গবন্ধুর বাসায় ছিলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা ছেড়ে জাসদে যোগদান করলে তখন সবাই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। আরেক ছেলে শামসুদ্দিন খালেদ সেলিম করলো ওয়ার্কার্স পার্টি, কিন্তু তাঁর বড়জন সাইফুদ্দিন খালেদ বাহারকে দেখা যাচ্ছে তিনি আওয়ামী লীগ করছেন। বাহারকে আ জ ম নাছির নগর আওয়ামী লীগ কার্যকরী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে বুকে টেনে নিয়েছেন। বাহার মনোনয়ন প্রত্যাশী, ব্যক্তিগত যোগ্যতা ছাড়াও তিনি এম এ আজিজের পুত্র এটা তার জন্য একটি প্লাস পয়েন্ট।
১৯৭৪ সালের ১ জুলাই তাঁর পিতা জহুর আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পরও একবার উপ-নির্বাচনে প্রার্থী পদের জন্য মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর নাম উঠেছিলো এবং তাঁর নমিনেশন যখন প্রায় নিশ্চিত ছিলো, তখনই তাঁকে দুর্বল আখ্যা দিয়ে জানে আলম দোভাষকে মনোনয়ন দেয়া হয়। মাহতাব কিন্তু এখনো রাজনীতিতে তাঁর প্রবল উপস্থিতি দিয়ে সক্রিয় আছেন। তাঁর একটা অসুখ হয়েছিলো এটা ঠিক, কিন্তু এখন তো তিনি পুরোপুরি ফিট।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর থেকে ছয় বছর ধরে আ.জ.ম নাছিরকে সঙ্গে নিয়ে মাহতাব নগর আওয়ামী লীগকে পরিচালনা করছেন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। দিনরাত মিটিং-মিছিল করতে তাঁর কোন অসুবিধা হয় না। জহুর আহমদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত বন্ধু ও ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। ৭১-এর ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে তা দেশে-বিদেশে প্রচারের জন্য চট্টগ্রামে জহুর আহমদ চৌধুরীর কাছেই পাঠিয়ে ছিলেন বঙ্গবন্ধু।
মাহতাব একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ষাটের দশকের ছাত্রনেতা এবং বিশিষ্ট সমাজকর্মী। মোছলেম উদ্দিন আহমদ, ফিরোজ, শফর আলীদের সঙ্গে তিনি ছাত্র রাজনীতি করতেন। বঙ্গবন্ধুর আহবানে ৭১-এর ২৬ মার্চ স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালির সশস্ত্র যুদ্ধ আরম্ভ হলে মাহতাব মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁর বড় ভাই সাইফুদ্দিন খালেদ ১৩ এপ্রিল রাউজান পাহাড়তলীতে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। স্বাধীনতার পর মাহতাব রাজনীতির পাশাপাশি সমাজসেবায় ব্রতী হয়ে চট্টগ্রাম পৌরসভায় কমিশনার নির্বাচিত হন।
আ.জ.ম নাছির একজন ইড়ষফ, উধংযরহম, উধৎরহম এবং উুহধসরপ খবধফবৎ। তিনি শহরের একটি প্রাচীন অভিজাত পরিবারের সন্তান। তাঁর প্রপিতামহ মুহাম্মদ হোসেন বুড়া মাদ্রাসার মোহাদ্দেস এবং ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজের প্রফেসর ছিলেন। তাঁর পিতামহ জামে মসজিদের হাফেজ ছিলেন। নাছির ছোটবেলা থেকে রাজনীতি শুরু করে আজ অব্দি রাজনীতির মাঠে, খেলার মাঠে, সামাজিক মজলিশে দাপটের সাথে বিচরণ করছেন। চট্টগ্রাম শহরে যখন এক সময় জামাত-শিবিরের দাপটে প্রগতিশীল রাজনীতি করা দুঃসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিলো, তখন আ.জ.ম নাছির ছাত্রলীগের রাজনীতিকে তাঁর সাহসী নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।
চট্টগ্রাম শহরে এখন আ.জ.ম নাছিরের যুগ চলছে বললে বোধয় অত্যুক্তি হয় না। আওয়ামী লীগ তো বটেই, মহানগরের সমাজকাঠামাতেও তার অপ্রতিহত প্রভাব। গত দু’তিন মেয়াদ থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচনে আ.জ.ম নাছিরের ব্যাপক প্রভাব অনুভূত হচ্ছে। ফজল করিমের আমলে সমাজকর্মীরাই কমিশনার নির্বাচিত হতেন। এমনকি স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের ভরা জোয়ারের সময়ও সমাজকর্মী ফজল করিমকে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত করতে পারেননি। ব্যারিস্টার সুলতান, মাহমুদুল ইসলাম, মীর নাছির কর্পোরেশনে কর্তৃত্ব করলেও মৌলিক কাঠামো ওয়ার্ড নেতৃত্বে তেমন কোন পরিবর্তন আনতে পারেননি। তাঁরা প্রত্যেকে নিজ নিজ পার্টির দু’চারজন লোককে যে ওয়ার্ড কমিশনার করেননি তা নয়, কিন্তু মৌলিক পরিবর্তন কেউ করতে পারেননি। মহিউদ্দিন চৌধুরীর তিন মেয়াদে বহু ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নির্বাচিত করে এনেছিলেন। কিন্তু তিনিও মৌলিক নেতৃত্বে পরিবতন বলতে যা বুঝায়, ওয়ার্ড কাঠামোতে তা আনতে পারেননি। যেটা নাছির পেরেছেন।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ সালাম অত্যন্ত ভদ্র, নম্র, শান্ত, নিরীহ, নির্বিরোধী মানুষ। তাঁকে অজাতশত্রু বললেও অত্যুক্তি হয় না। ছাত্রজীবন থেকে তাঁকে দেখছি কারো সাতেও পাঁচেও নেই, আত্মনিমগ্ন একজন রাজনৈতিক কর্মী। তিনি এখন উত্তর চট্টগ্রামের বড় নেতা, শাসক দলের প্রধান নেতা। রাজনীতিতে সালাম অনেক উন্নতি করেছেন। তিনি যদি কেন্দ্রে চলে যেতেন তাহলে কেন্দ্রীয় নেতা হতে পারতেন। কিন্তু তিনি চট্টগ্রামের অধিকাংশ নেতা, পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী মত ঘরমুখো মানুষ; চট্টগ্রাম ছেড়ে কোথাও যেতে চান না। ফলে রাজনৈতিক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় অনেক ডেভেলপ করলেও তাঁর নেতৃত্বের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হলো তিনি চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পর্যন্ত হয়েছিলেন, সেখানেই তিনি আটকে আছেন। যদিও সংসদে যেতে পারলে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিভার আরো বিকাশ ঘটতো। আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ রাজনীতি শুরু করায় সালামের কপাল পুড়েছে। যতবারই তিনি মনোনয়নের কাছাকাছি উপনীত হন, ততবারই শেষ মুহূর্তে ব্যারিস্টার আনিস এসে তাঁর মনোনয়ন নস্যাৎ করে দেন।
গিয়াস উদ্দিন অসাধারণ সংগঠক এবং অক্লান্ত কর্মী। মিরসরাইর মানুষের সেবা এবং সুখ-দুঃখে, সুবিধা-অসুবিধায় তাঁদের পাশে থেকে যদি কোন সাহায্য-সহযোগিতা করা যায়, সেজন্য তিনি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেলখানা এবং চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিং-এ চলে যান। মিরসরাইর কোন মানুষ গুরুতর রোগে আক্রান্ত হয়ে কিংবা দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে মেডিকেলে আসলে তিনি তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সাহায্য করতে হাজির থাকেন। মিরসরাইর কোন মানুষ গ্রেফতার হয়ে জেলখানায় আনিত হলে সেটা যদি তিনি জানতে পারেন তাহলে তিনি জেলগেটে গিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ এবং তাদের পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনকে দেখার ব্যবস্থা করে দেন। মিরসরাইর কোন মানুষ মামলা-মোকদ্দমার শিকার হয়ে কোর্ট বিল্ডিং-এ আনিত হলে গিয়াস যদি তা জানাতে পারেন, তিনি কোর্টে গিয়ে তাদের মামলার খোঁজ-খবর নেন এবং উকিল-মুন্সি ধরে তাঁদেরকে আইনী সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করেন।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ভাষা সংগ্রামী আবদুল্লাহ আল হারুনের কন্যা বিদূষী শামীমা হারুন লুবনাও চট্টগ্রামের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকায় অংশ নিচ্ছেন। উচ্চ শিক্ষিত, সংস্কৃতিবান, মার্জিত-অমায়িক, স্নিগ্ধরুচির সদ্বংশীয় অভিজাত নারী। ভালো লেখাপড়া জানেন, লেখালেখিও করেন।
আরেকজনের কথা বলছি-তিনি ছাত্রনেতা ছিলেন না, কিন্তু ফিরিঙ্গীবাজারের দোভাষ পরিবারের উত্তর পুরুষÑ ফুলের ন্যায় সুবাসিত, নির্মল যাঁর চরিত্র; শুভ্র, সুন্দর, অনিন্দ্যকান্তি অবয়ব, প্রশ্নাতীত সততার প্রতিমূর্তি, আদর্শের জন্য প্রয়োজনে বজ্রের ন্যায় কঠোর হতে পারেন, তিনি হচ্ছেন জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন (চেয়ারম্যান, সিডিএ)। তিনি একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ, তাঁদের পরিবার চট্টগ্রামের প্রাচীন ধনী পরিবারগুলোর অন্যতম। তাঁর প্রপিতামহ খান বাহাদুর আবদুল হক দোভাষ উনিশের শেষভাগ ও বিশ শতকের প্রথমার্ধে চট্টগ্রামের অত্যন্ত প্রভাবশালী ও সর্বজনমান্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। পঞ্চাশের দশকে যখন চট্টগ্রামের খুব বেশি মানুষ আজিজ-জহুরের কথায় আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি ঈমান আনেনি, তখনই জানে আলম দোভাষ আওয়ামী লীগে যোগদান করে সাহস ও রাজনৈতিক সচেতনতার পরিচয় দেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরদিন তিনি নিজ বাসায় বঙ্গবন্ধুর জন্য মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমদ : পটিয়ার আওয়ামী রাজনীতির বটবৃক্ষ

শামসুদ্দিন আহমদ ষাটের দশকের বিশিষ্ট ছাত্রনেতা। তিনি পটিয়ায় রাজনীতি করলেও চট্টগ্রামের সামগ্রিক ছাত্র রাজনীতিতে তাঁর অবদান অস্বীকার করা যায় না। পটিয়া ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের

বিস্তারিত »

রায় সাহেব কামিনী কুমার ঘোষ হত্যাকাণ্ড

আইনবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজহিতৈষী, শহীদ বুদ্ধিজীবী রায় সাহেব কামিনী কুমার ঘোষকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১-এর ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী হত্যা করে। কামিনী কুমার ঘোষ ১ জানুয়ারি ১৮৮৮

বিস্তারিত »

‘কেয়ামতের ফজরেও আ.লীগ রাজনীতি করতে পারবে না’

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির ও সাবেক এমপি শাহাজাহান চৌধুরী বলেছেন, নবী মুহাম্মদ (স.) যেমন মসজিদের ঈমাম, যুদ্ধের ময়দানেও সেরকম সেনাপতি।

বিস্তারিত »

আন্দরকিল্লায় দুটি সড়কে ব্যাটারি রিকশার দৌরাত্ম্য

ব্যাটারি রিকশার দৌরাত্ম্যে নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকার দুইটি সড়কে যানবাহন তো দূরের কথা পথচারীর চলাচলও কঠিন হয়ে উঠে। ভয়াবহ রকমের বিশৃঙ্খল অবস্থায় থাকা ব্যাটারি রিকশাগুলো পথচারীদের

বিস্তারিত »

আজ সৈয়দপুর আসবেন বেবী নাজনীন

সৈয়দপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে শহীদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া-মাহফিলে যোগ দেবেন তিনি। সৈয়দপুর

বিস্তারিত »

চট্টগ্রামের তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচ জনসহ অন্তত ২০ জনকে আটক করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর)

বিস্তারিত »

সরকারের নানা উদ্যোগ: ভাঙেনি সিন্ডিকেট, বাজারে অস্বস্তি

নিত্যপণ্যের দাম কমাতে অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও স্বস্তি ফেরেনি বাজারে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে চাল, আলু, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল ও ডিম আমদানিতে শুল্ক ছাড়, নিত্যপণ্যের বাজার

বিস্তারিত »

চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ডিবিতে সনাতন মঞ্চের নেতারা

আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ডিবি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছেন

বিস্তারিত »

নবম বিসিএস ফোরামের সভাপতি আবুল কালাম, মহাসচিব শীষ হায়দার চৌধুরী নবম বিসিএস ফোরামের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম

বিস্তারিত »