চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বহুল আলোচিত বিএনপি নেতা, গণ্ডামারা ইউপির বহিঃস্কৃত চেয়ারম্যান লেয়াকত আলীর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাঁশখালী থানার হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) সোহানুর রহমান সোহাগ, বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমেদ।
এ সময় জানানো হয় অভিযানে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৫টি দেশীয় তৈরি এলজি, ২টি কাটা বন্দুক, ১টি দেশীয় বন্দুক, বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রের ৭২ রাউন্ড গুলি, ২৬টি কাতুর্জ, ৫টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি কিরিচ, ৬টি কাঠেরবাটযুক্ত ধারালো রাম দা এবং ৪০টি বিভিন্ন সাইজের গইট্টা (লাঠি) উদ্ধার করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তোফায়েল আহমেদ জানান, ‘লেয়াকত আলীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। সে বিভিন্ন সময় এলাকায় বসে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। এদিকে তাঁর ঢাকা অবস্থান করার গোপন সংবাদ পেয়ে আমরা বিষয়টি ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশকে অবহিত করি। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।’
এর আগে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দীর্ঘদিন থেকে বিচারাধীন ২১ (একুশ) মামলার আসামি আলোচিত বিএনপি নেতা লেয়াকত আলী আত্মগোপনে ছিলেন। একাধিকবার র্যাব পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়।
পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মামলা তদন্তকালে আসামি লেয়াকত আলী ঢাকায় অবস্থান করছে এমন তথ্য পেয়ে গ্রেফতারের জন্য অভিযানের অনুরোধ করলে ডিএমপি ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামিকে রাজধানীর ফকিরাপুল মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এরপর তাকে বাঁশখালী থানায় নিয়ে আসা হয়।
২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টে (কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র) ড্রেজিং করার জন্য নিয়োজিত একটি ঠিকাদারের কোম্পানির সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে লেয়াকত আলীর অনুসারীরা। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের ওপরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে চার পুলিশ সদস্য আহত হন। এঘটনায় পরবর্তীতে লেয়াকত ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশ । এ মামলায় ৯ ফেব্রুয়ারি ভোর বেলায় চট্টগ্রামের সুগন্ধা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে তাকে প্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এর আগে, ২০১৬ সালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজের শুরু থেকে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলেন বিএনপি নেতা লেয়াকত আলী। পরবর্তী এ ঘটনায় প্রাণ হারায় ১৬ জন মানুষ। এরপর থেকে দেশব্যাপী আলোচনায় আসে লেয়াকত আলী। ২০২৩ সালের শুরুর দিকে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে গণ্ডামারা ইউপি চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে।