ভারতে অনুষ্ঠিত আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৮তম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান। সেখানে ৬২ রানের জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৬৭ রানের সংগ্রহ দাড় করায় প্যাট কামিন্সের দল। লক্ষ্য তাড়ায় ৪৫.২ ওভারে ৩০৫ রান সংগ্রহ করতেই সবকটি উইকেট হারায় পাকিস্তান।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ৩৬৮ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামেন পাকিস্তানের আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল-হক। শুরু থেকে অজি বোলারদের দেখে-শুনে খেলে দলীয় ৮.৩ ওভারে প্যাট কামিন্স বলে আবদুল্লাহ শফিক সিঙ্গেল নিয়ে নিলে দলীয় অর্ধশত রান পার করে পাকিস্তান।
এই দুইজনের শতরানের জুটিতে এগিয়ে চলছে পাকিস্তান। দলীয় ১৭.১ ওভারের গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বলে সিঙ্গেল রান নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি পূর্ণ করেন শফিক। এতে তিনি খরচ করেন ৫২ বল।
উইকেট না পড়ায় বোলিংয়ে স্টয়নিসকে আনেন অজি অধিনায়ক। দলীয় ২১.১ ওভারে মার্কাস স্টয়নিসের বল খেলতে গিয়ে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন শফিক। তাতে ভেঙে যায় ১২৭ বলে ১৩৪ রানের জুটি। যাওয়ার আগে তিনি করেন ৬১ বলে ৬৪ রান। এরপর মাঠে নামেন অধিনায়ক বাবর আজম।
শফিক আউট হওয়ার কিছুক্ষণ পরে আবারো স্টয়নিসের শিকার হয়েছেন পিচে থাকা ইমাম-উল-হক। দলীয় ২৩.৪ ওভারে মার্কাস স্টয়নিসের বলে মিচেল স্টার্কের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ইমাম-উল-হক। তিনি খেলেন ৭১ বলে ৭০ রানের ইনিংস। এরপর মাঠে নামেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
দলীয় ২৬.২ ওভারে ভুল করে বসেন অধিনায়ক বাবর আজম। ওই ওভারে এডাম জাম্পার বলে প্যাট কামিন্সের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান বাবর আজম। যাওয়ার আগে তিনি করেন ১৪ বলে ১৮ রান। বাবর আউট হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আউট হয়েছেন সৌদ শাকিল। দলীয় ৩৪.২ ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে মার্কাস স্টয়নিসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরের পথে হেঁটে গেছেন সৌদ শাকিল। যাওয়ার আগে তিনি খেলেন ৩১ বলে ৩০ রান। এরপর মাঠে নেমে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন ইফতেখার।
দলীয় ৩৮.৫ ওভারে এডাম জাম্পার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরের পথে হাঁটেন ইফতেখার আহমেদ। তিনি করেন ২০ বলে ২৬ রান। এরপর মাঠে নামা মোহাম্মদ নাওয়াজ (১৪), উসামা মীর (০), হাসান আলি(৮) ও শাহিন শাহ আফ্রিদি (১০) রান করেন। আর শূন্য রানে অপরাজিত থাকেন হারিস রউফ। ফলে অজি বোলারদের তোপে ৪৫.২ ওভারে সব কয়টি উইকেট হারিয়ে ৩০৫ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।
অজিদের হয়ে এদিন চার উইকেট নেন এডাম জাম্পা। দুটি করে উইকেট নেন প্যাট কামিন্স ও মার্কাস স্টয়নিস। একটি করে উইকেট নেন জশ হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্ক।
এর আগে টস হেরে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। এদিন শুরু থেকে দেখে-শুনে খেলতে থাকেন তারা। এই দুইজনের দুইশত রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে চলে অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ৩০.৪ ওভারে মোহাম্মদ নাওয়াজের বলে সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ডেভিড ওয়ার্নার। এতে তিনি খরচ করেন ৮৫ বল।
ডেভিড ওয়ার্নারের সেঞ্চুরির পরেই বলে শতক পূর্ণ করেন মিচেল মার্শ। দলীয় ৩০.৫ ওভারে মোহাম্মদ নাওয়াজের বলে চার মেরে এই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এতে তিনি খরচ করেন ১০১ বল। অজি এই দুই ব্যাটারে সেঞ্চুরি পর আক্রমনাত্মক খেলতে থাকেন। তাতে দুইজনে মিলেন গড়েন ২২০ রানের পার্টনারশিপ।
উইকেট না পড়ায় শাহিন শাহ আফ্রিদিকে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন পাক অধিনায়ক। এনেই দলীয় ৩৬তম ওভারে মিচেল মার্শকে আউট করেন তিনি। ওই ওভারের (৩৫.৫) শাহিন শাহ আফ্রিদির পঞ্চম বলে উসামা মীরের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হেঁটেছেন মিচেল মার্শ। তাতে ভেঙে যায় ২০৩ বলে ২৫৯ রানের পার্টনারশিপ। এরপর মাঠে নামেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
নেমেই প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে চেয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। তাতে ঘটে ভুল। দলীয় ৩৫.৬ ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে বাবর আজমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হেঁটেছেন অজি এই ব্যাটার। এরপর মাঠে নামা স্টিভেন স্মিথও দুই অংকের সংখ্যা পার করতে পারেননি। দলীয় ৩৮.১ উসামা মীরের বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হেঁটেছেন স্মিথ। যাওয়ার আগে তিনি খেলেন ৯ বলে ৭ রান।
দলীয় ৪০.৬ ওভারে উসামা মীরের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত দেড়শত পূর্ণ করে ওয়ার্নার। এতে তিনি খরচ করেন ১১৭ বল। দেড়শত রানের পর বেশিক্ষণ ক্রিজে থিতু হতে পারেননি ওয়ার্নার। দলীয় ৪২.২ ওভারে হারিস রউফের বলে সাদাব খানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যালিভিয়নের পথে ফিরেন ডেভিড ওয়ার্নার। তার আগে তিনি করেন ১২৪ বলে ১৬৩ রান।
এরপর মাঠে নামা জশ ইংলিস খেলেন ৯ বলে ১৩ রানের ইনিংস। শেষ দিকে প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্কও দুই অংকের সংখ্যা পার করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারের খেলা শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৭ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া।
এ দিন পাকিস্তানের হয়ে একাই পাঁচ উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। এতে তিনি খরচ করেন ৫৪ রান। তিনটি উইকেট নেন হারিস রউফ এবং একটি উইকেট নিয়েছেন উসামা মীর।