জন্মনিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সনদ প্রাপ্তিতে ভোগান্তি দূরীকরণের অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উক্ত সনদ প্রাপ্তিতে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি দূরীকরণে সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সুজন বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশে ২০২৪ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করার যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন যুগে প্রবেশ করবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত এসব সনদ গ্রহণে হয়রানি এবং দুর্নীতিমুক্ত করা না যায় ততক্ষণ জনগন এর সুফল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবেন।
তিনি বলেন, সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, নতুন পাসপোর্ট তৈরী, বিবাহ নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জমি রেজিস্ট্রেশন প্রভৃতি কাজে জন্মনিবন্ধন সনদসহ বিভিন্ন সনদের প্রয়োজন হয়। এছাড়া জায়গা জমি ভাগবাটোয়ারা, নামজারি এবং বেচা কেনার ক্ষেত্রে ওয়ারিশ সনদের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে এসব সনদ গ্রহণ করতে গিয়ে প্রায়ই ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
বিশেষ করে জন্মনিবন্ধন সনদ গ্রহণে খুব বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। দিনের পর দিন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়েও জন্মনিবন্ধন সনদ না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সার্ভার ডাউন বলে জন্মনিবন্ধন সনদ দেয়া বন্ধ রাখা হয়। এতে করে চরম ভোগান্তর শিকার হচ্ছেন সাধারন নাগরিকগণ। আবার এসব সমস্যার সমাধানও করতে পারছেন না কেউ। ফলত জন্মনিবন্ধন সনদপ্রাপ্তি নিয়ে এক প্রকার অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভোগী জনসাধারণ এ থেকে পরিত্রাণের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছে না এর সমাধান কি? এ পরিস্থিতিতে এমন কোনো মানুষকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে যাকে তার সন্তানের জন্য জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। আর সাধারণ মানুষের এসব ভোগান্তিকে পুঁজি করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে একশ্রেণীর দালাল চক্র। ঝামেলা ছাড়াই জন্মনিবন্ধন সনদ পাওয়া যাবে এমন প্রলোভনে এ চক্রটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এর ফলে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন স্লোগানটি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে জন্মনিবন্ধন সনদের জন্য এরকম ভোগান্তি কারো কাম্য নয়। এ থেকে সহসা মুক্তি পাওয়া একান্ত জরুরি বলেও মত প্রকাশ করেন চসিক সাবেক প্রশাসক সুজন।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিভাগে নানারকম ভাতা প্রদানের মধ্য দিয়ে সমাজের অনগ্রসর মানুষকে সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে সনদপ্রাপ্তি যদি জটিলতার সৃষ্টি করে তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জন্মনিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সনদ প্রাপ্তিতে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের ঐকান্তিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। সুজন এসব সনদপ্রাপ্তি সহজীকরণে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা বলেন এবং মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সুজন এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানান। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সুজনকে উক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।