তহসিল অফিসের কতিপয় দালাল এবং দুর্নীতিবাজ চক্রের কারণে জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উক্ত অভিমত প্রকাশ করেন তিনি।
সুজন বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় নির্ঝঞ্ঝাটভাবে ভূমি সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। নতুন নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ভূমি সেবা সহজতর করার লক্ষ্যে কাজ করছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমিমন্ত্রী বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
এতোসব উদ্যোগের পরেও অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে যে, তহসিল অফিসের এক শ্রেণীর দালাল এবং দুর্নীতিবাজ চক্রের কারণে জনগণ সরকার কর্তৃক গৃহীত সেসব সুযোগ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে যে, অংশনামা কিংবা গোলাভাগের মামলার কারণে খতিয়ান সম্পন্ন করা হয়নি। সেক্ষেত্রে ভূমি অফিসে খাজনা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। এসব অজুহাতকে কেন্দ্র করে আবার মোটা অংকের উৎকোচ দাবি করা হচ্ছে।
খাজনা পরিশোধ করতে না পারার ফলে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে ভূমির মালিকরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। এছাড়া নিয়মমাফিক কাজ করতে গেলেও প্রতি পদে পদে হেনস্তা হতে হয় ভূমির মালিককে। ফলত এক সময় বাধ্য হয়ে দালাল কিংবা দুর্নীতিবাজ চক্রের দারস্থ হতে হয়। নিয়মমাফিকভাবে একটি নামজারি দাখিল করা হলে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়, পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে বকশিশের বিনিময়ে নামজারি সমাধান করতে হয়। নামজারি ও খাজনা ডিজিটাল হলেও ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ করা যায়নি বলে অভিযোগ ভূমি মালিকদের।
নগরীর বিভিন্ন ভূমি অফিসে বিভিন্নভাবে জনগণকে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব অফিসে খাজনা আদায়, নামজারি, জমির শ্রেণী পরিবর্তনসহ বিভিন্ন সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলা, জটিলতা ও দুর্নীতিপরায়ণ মানসিকতার কারণে জনসম্পৃক্ত এই খাতটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে অভিমত সচেতন মহলের।
তাছাড়া বছরের পর বছর একই স্থানে চাকরির সুবাদে তাদেরকে ঘিরে একটি শক্তিশালী দুর্নীতিবাজ চক্র গড়ে উঠেছে।বিভিন্ন ভূমি অফিসের এসব দুর্নীতিবাজ চক্রের কারণে জনগণ এক প্রকার অসহায় হয়ে পড়েছে। এতে করে সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। সরকারের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে বাঁধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব দুর্নীতিবাজ দুষ্টু চক্র।
অন্যদিকে দুর্নীতি করে এসব চক্রের রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে। সরকারকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার এসব দুষ্টু চক্রকে খুঁজে বের করতে হবে বলেও মত প্রকাশ করেন নগর আওয়ামী লীগের এই সহ-সভাপতি। তিনি জনগণকে এসব দুর্নীতিবাজ চক্র থেকে সতর্ক থাকার আহবান জানান।
এসব দুর্নীতিবাজ চক্রের খবর প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন, দুদক এবং নাগরিক উদ্যোগকে জানানোর অনুরোধ জানান তিনি। নাগরিক উদ্যোগ এসব দুর্নীতিবাজদের নাম ও ছবি প্রকাশ করে এদেরকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন বলে জানান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।