#বদর_প্রান্তরের_অবস্থানঃ বদর একটি গ্রামের নাম। ইয়ালীল উপত্যকা ও আকানকাল উপত্যকার ঠিক মাঝখানে গ্রামটি অবস্থিত। গ্রামটি বৃত্তের মত গোলাকার না হলেও দেখতে অনেকটা ডিমের মত। গ্রামটি লম্বায় প্রায় সাড়ে ৫ মাইল এবং পাশে চার মাইল মদীনার দক্ষিণ পশ্চিম কোনে ৮০ মাইল দূরে বদর অবস্থিত। মক্কা থেকে এ দূরত্ব ২৫০ মাইল। বদরের পশ্চিমে মাত্র মাইল দশেক দূরেই লোহিত সাগর।
#বদর_যুদ্ধের_সময়কালঃ ২য় হিজরীর ১৭ ই রমজান শুক্রবার সকাল বেলা বদর প্রান্তরে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
#সামরিক_সরঞ্জাম_ও_সৈন্য_সংখ্যাঃ মুসলিম বাহিনীতে সৈনিক সংখ্যা ছিল ৩১৪ জন। এর মধ্যে মুহাজির ছিলেন ৮৩জন এবং আনসারদের মধ্যে আওস গোত্রের ছিলেন ৬১জন ও খাজরাজ গোত্রের ছিলেন ১৭০জন। মুসলিমদের সাথে ৭০টি উট ও দুইটি ঘোড়া ছিল। অপরদিকে কাফিরদের সৈন্য সংখ্যা ছিল ১০০০, এই বাহিনীতে অসংখ্য উট, ১০০ ঘোড়া ও ৬০০ লৌহবর্ম ছিল।
#বদর_যুদ্ধের_সূত্রপাতঃ কুরাইশ নেতারা ইহুদীদের সাথে গোপণে আঁতাত করলো। অতঃপর মুহাজিরগণের নিকটে হুমকি পাঠালো এই মর্মে যে, ‘মক্কা থেকে তোমরা নিরাপদে ইয়াছরিবে পালিয়ে যেতে পেরেছ বলে অহংকারে ফেটে পড়ো না। ওখানে গিয়েই আমরা তোমাদের ধ্বংস করে দেবার ক্ষমতা রাখি’। তাদের এই হুমকি কেবল ফাঁকা বুলি ছিল না। বরং তারা হর-হামেশা তৎপর ছিল মুহাজিরগণের সর্বনাশ করার জন্য। রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে, তিনি রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারতেন না। এরপর ১ম হিজরীর রমজান মাস থেকে কুরায়েশদের হামলা প্রতিরোধে মদিনার বাইরে নিয়মিত সশস্ত্র টহল অভিযান সমূহ প্রেরিত হতে থাকে। যা একবছর অব্যাহত থাকে। একদিন
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এঁর নিকট খবর এলো কুরাইশদের ত্রিশ সদস্য বিশিষ্ট একটি কাফেলা আবু সুফিয়ান বিন হারবের নেতৃত্বে সিরিয়া থেকে বিপুল সামরিক সরঞ্জাম ও বাণিজ্যিক সম্ভার নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। কেউ কেউ বলেন, তাদের সংখ্যা ছিল ৪০ জন এবং তাদের মধ্যে ছিল মাখজামা বিন নওফল বিন উহাইব বিন আব্দ মানাফ বিন যাহরা এবং আমর বিন আস। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ঐ কাফেলাকে অনুসরণ করার জন্য মুসলমানদের পাঠালেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে বললেন, ‘এটা কুরাইশদের কাফেলা। এতে প্রচুর ধন-সম্পদ রয়েছে। তোমরা ওদিকে চলে যাও। হয়তো আল্লাহ ঐসব সম্পদ তোমাদের হস্তগত করে দিবেন।’ একথা বলার উদ্দেশ্য যেহেতু সম্পদগুলো যদি মক্কায় পৌঁছে তারা সেগুলো ব্যবহার করবে মদিনা আক্রমণের জন্য। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের নির্দেশ পেয়ে মুসলিম বাহিনী ঐ কাফিলাকে ধরার জন্য বের হয়ে পড়লেন। ঐদিকে আবু সুফিয়ানও মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন বিষয়টি আঁচ করতে পেরে দামদাম ইবনে আমর গিফারীকে তৎক্ষণাৎ মজুরীর বিনিময়ে মক্কা পাঠিয়ে দিল এবং তার মাধ্যমে খবর দিল যে, যেন কুরাইশরা তাদের ধন-সম্পদ নিরাপদে নিয়ে আসার জন্য কিছু অস্ত্র সজ্জিত লোক পাঠিয়ে দেয়, যেহেতু তারা মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। দামদাম মক্কার মরুভূমিতে এসে তার উটের উপর বসেই চিৎকার করে বলছে, “হে কুরাইশগণ, মহাবিপদ! মহাবিপদ! তোমাদের ধন সম্পদ আবু সুফিয়ানের কাছে। মুহাম্মদ তার সহচরদেরকে ঐ সম্পদের পেছেন লেলিয়ে দিয়েছে। মনে হয় তোমরা তা আর রক্ষা করতে পারবে না। সাহায্য করতে অগ্রসর হও! সাহায্য করতে অগ্রসর হও!” এমন পরিস্থতিতে মক্কার কাফিররা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করে নিল।
#চুড়ান্ত_যুদ্ধঃ মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের সঙ্গে নিয়ে অভিযানে বেরিয়ে পড়লেন। তখন রমজান মাসের কয়েকটা দিন অতিবাহিত হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আমর ইবনে উম্মে মাকতুমকে নামাজ পড়ানোর দায়িত্বে নিয়োজিত করলেন। আর আবু লুবাবাকে রাওহা থেকে ফিরিয়ে এনে মদীনার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে নিয়োজিত করলেন। পথিমধ্যেই তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) জানতে পারলেন যে, কুরাইশরা তাদের বাণিজ্য কাফেলাকে রক্ষা করার জন্য সদলবলে মক্কা থেকে যাত্রা করেছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বদর প্রান্তরের কাছাকাছি গিয়ে তাঁবু স্থাপন করলেন। যুদ্ধ শুরুর পূর্ব মুহুর্তে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম কাফিরদের নিহত হওয়ার স্থান সমূহ নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। এতদপ্রসঙ্গে নিম্নোক্ত হাদিসটি উল্লেখযোগ্যঃ-
হযরত আনস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, (হুজুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বদর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে কাফির বাহিনীর নিহতদের মৃত্যূর স্থান চিহ্নিত করেছিলেন), রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ইহা অমুক কাফির নিহত হওয়ার স্থান’। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম স্বীয় নুরানী হস্ত মোবারক ঐ স্থান সমূহে রাখলেন এবং বললেন, ‘এই স্থান অমুক কাফির নিহত হওয়ার স্থান’। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, অতঃপর যেখানে তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম হাত মোবারক রেখে ছিলেন, উহা থেকে বিন্দু মাত্র হেরফের হয়নি এবং প্রত্যেক কাফির সেই সমস্ত স্থান সমূহে নিহত হয়। (মুসলিম, আবু দাউদ, আস-সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী)
যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে কুরাইশদের আসওয়াদ ইবনে আবদুল আসাদ মাখজুমি এগিয়ে এসে মুসলিমদের পানির জলাধার দখল করে নেবে না হয় এজন্য জীবন দেবে বলে ঘোষণা দেয়। এরপর হযরত হামজা ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) অগ্রসর হয়ে তার সাথে লড়াই করেন। লড়াইয়ে আসওয়াদের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আহত অবস্থা আসওয়াদ চৌবাচ্চার দিকে এগিয়ে যায় এবং প্রতিজ্ঞা রক্ষার জন্য চৌবাচ্চার সীমানার ভেতর ঢুকে পড়ে। এরপর হযরত হামজা (রাঃ) তাকে হত্যা করেন। এটি ছিল বদরের প্রথম মৃত্যু। এরপর ময়দানে অবতীর্ণ হলো উতবা বিন রবীআ। তার ভাই শাইবা ও ছেলে তার সঙ্গে এলো। তারা সামনে গিয়ে হুংকার দিয়ে দ্বন্দ্ব যুদ্ধের আহবান জানালো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম তাদের মুকাবিলায় হযরত উবাইদা বিন হারেস (রাঃ), হযরত হামযা (রাঃ) ও হযরত আলী (রাঃ) কে পাঠালেন। মুসলিম বাহিনীর সর্বকনিষ্ট মুজাহিদ হযরত উবাইদা বিন হারিস (রাঃ) রাবীআ’র বিরুদ্ধে, হযরত হামযা (রাঃ) শাইবার বিরুদ্ধে এবং হযরত আলী (রাঃ) ওয়ালীদ বিন উতবার বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হল। হযরত হামযা (রাঃ) ও হযরত আলী (রাঃ) এর আঘাতে শাইবা ও ওয়ালীদ নিহত হলো। অপরদিকে উবাইদা বিন হারেস (রাঃ) রাবীআ’র বিরুদ্ধে আহত হলে হযরত হামযা (রাঃ) ও হযরত আলী (রাঃ) এগিয়ে গিয়ে তাকে খতম করে দিলো এবং আহত হযরত উবাইদা বিন হারিস (রাঃ) কে শিবিরে নিয়ে আসলেন। এরপর সম্মিলিত যুদ্ধ শুরু হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে এই দোয়া করতে লাগলেন, ‘হে আল্লাহ, এই মুষ্টিমেয় মুসলমান যদি আজ ধবংস হয়ে যায় তাহলে আপনার ইবাদত করার জন্য কেউ থাকবেনা।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এক সময় নিজ মঞ্চের ভেতরে কিছুক্ষণের জন্য তন্দ্রাভিভূত হয়ে পড়লেন। অতঃপর জাগ্রত হয়ে বললে, ‘হে আবু বকর, সুসংবাদ শোনো। আল্লাহর সাহায্য এসে গেছে। এই দেখোনা জিবরীল একটি ঘোড়ার লাগাম ধরে হাঁকিয়ে আসছেন। তাঁর পোশাকের ভাঁজে ভাঁজে ধূলোর আস্তরণ জমে গেছে।’ পরক্ষণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে রণাঙ্গনে গেলেন এবং মুজাহিদগণকে এই বলে যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করলেন, ‘সেই মহান সত্তার শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, আজ যে ব্যক্তি কাফিরদের সাথে ধৈর্য ও নিষ্ঠা সহকারে যুদ্ধ করবে এবং শুধু সামনের দিকে এগুতে থাকবে, কোন অবস্থায় পিছু হটবে না, আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করবেন।’ অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এক মুষ্টি ধুলি হাতে নিয়ে কুরাইশদের দিকে এগিয়ে গেলেন। অতঃপর এই বলে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিলেন, ‘ওদের মুখ বিকৃত হয়ে যাক।’ অতঃপর সাহাবীদের নির্দেশ দিলেন, ‘জোর হামলা চালাও।’ অল্পক্ষণের মধ্যেই কুরাইশদের চরম পরাজয় ঘটলো। কুরাইশদের বড় বড় নেতাদের অনেকেই নিহত ও বন্দী হলো।
ফলাফলঃ বদর যুদ্ধে মক্কার কাফিরগণ শোচনীয় পরাজয় বরণ করে। তাদের ৭০ জন নিহত ও ৭০ জন বন্দী হয়। বন্দীদের থেকে যে মুক্তিপণ আদায় করা হয় তার পরিমাণ ছিল বন্দী প্রতি একহাজার দিরহাম। তবে বিত্তহীন ব্যক্তিকে অনুকম্পা দেখানো হয় এবং বিনা পণে মুক্তি দেয়া হয়।
মুহাজির ছয় জনঃ
১। হযরত উবাইদা বিন আল-হারিস বিন আল-মুত্তালিব বিন আব্দ মুনাফ (রাঃ)
২। হযরত উমাইর বিন আবি ওয়াক্কাস (রাঃ); হযরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) এর ভাই; তাঁর বয়স মাত্র ষোল বছর হয়েছিল।
৩। হযরত যুশ্ শিমালাইন বিন আব্দ আমর বিন নাদলাতুল খাদায়ি (রাঃ); যিনি বনি যাহরা গোত্রের মিত্র।
৪। হযরত আক্বিল বিন আল-বুকাইর আল-লাইছি (রাঃ); তিনি বনি আদি বিন কা’ব গোত্রের মিত্র ছিলেন।
৫। হযরত মাহজা’ (রাঃ); তিনি হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ) এর দাস ছিলেন।
৬। হযরত সাফওয়ান বিন বায়দা (রাঃ); তিনি বনি হারিস বিন ফিহর গোত্রের লোক।
আনসার আট জনঃ
৭। হযরত সা’দ বিন হাইছামা বিন আমর বিন আউফ (রাঃ); তিনি আউস গোত্রের লোক।
৮। হযরত মুবাশ্শির বিন আব্দুল মানজির বিন যুবাইর (রাঃ); তিনি আউস গোত্রের লোক।
৯। হযরত ইয়াযিদ বিন আল-হারিস; তিনি ফাসহাম বিন আল-হারিস বিন আল-খাযরাজের ছেলে এবং বনি হারিস বিন খাযরাজ গোত্রের লোক।
১০। হযরত উমাইর বি আল-হুম্মাম (রাঃ); তিনি বনি সালমা গোত্রের লোক।
১১। হযরত রাফি’ বিন আল-মুয়াল্লা (রাঃ); তিনি বনি হুবাইব বিন আব্দ হারেসা গোত্রের লোক।
১২। হযরত হারেসা বিন সুরাক্বা (রাঃ); তিনি বনি নাজ্জার গোত্রের লোক।
১৩। হযরত আউফ বিন হারিস (রাঃ)।
১৪। হযরত মুয়াওজ বিন হারিস (রাঃ)।
হযরত রিফায়া বিন রাফে’ (রাঃ); যিনি বদরী সাহাবী ছিলেন, তিনি বর্ণনা করেন, হযরত জিবরাঈল (আঃ) নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এঁর পবিত্র দরবারে উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি বদরী সাহাবীদের কি হিসেবে গণ্য করেন? তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘সমস্ত মুসলমানদের মধ্যে তাঁরা উত্তম’। তখন হযরত জিবরাঈল (আঃ) বললেন, ‘অনুরূপভাবে যে সমস্ত ফেরেশতা বদর যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, তাঁরাও সমস্ত ফেরেশতাদের মধ্যে উত্তম।’ (বুখারী শরীফ, ২য় খন্ড, পৃঃ-৫৬৯)
গ্রন্থ সূত্রঃ
১। ইবনে হিশাম, সীরাতে ইবনে হিশাম, অনুবাদঃ আকরাম ফারুক, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা, প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারী ২০১২।
২। আল-ইমাম আবি মুহাম্মদ আলী বিন আহমদ বিন সাঈদ বিন হাযম আল-আন্দুলুসি, জাওয়ামেউস্ সিরাতিন নাব্বিয়া, দারুল কুতুবুল আলমিয়া, বৈরুত, লেবানন, প্রকাশকালঃ ২০০৩।
© দারুল ইরফান রিসার্চ ইনস্টিটিউট