বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১, ২ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬

বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ভারত

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

বাঙালি জাতির জন্য বঙ্গবন্ধু’র প্রধানতম অবদান স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। এমনকি আমরা যে বাঙালি জাতির কথা বলি, সেই জাতিও তাঁর রাজনীতি ও আন্দোলনের ফলে গড়ে উঠেছিলো। বাঙালি অনেক প্রাচীন জাতি; একটি জাতিসত্তা হিসেবে সুগঠিত ও বিকাশের সমস্ত উপাদান প্রচ্ছন্ন ছিলো তার জীবনে। কিন্তু এসব উপাদানকে সংহত করে বাঙালিকে একটি জাতি হিসেবে নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ বঙ্গবন্ধুই নিয়েছিলেন। তাঁর ঐতিহাসিক ৬ দফার মধ্যেই নিহিত ছিলো সেই মন্ত্রগুপ্তি; ১৯৬৬ সালে এই কর্মসূচি দেয়ার পর থেকেই বাঙালি জেগে উঠতে থাকে।
বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ষাট দশকের আরম্ভ থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি সেনা কর্মকর্তা ও জওয়ানদের সংগঠিত করে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের সেনানিবাসগুলোতে একযোগে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ কায়েমের একটি ব্যাপক বৈপ্লবিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন, যা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা হয়েছিলো। কিন্তু ৬ দফা ছিলো বাঙালি জাতির জাগর চৈতন্যের উদ্বোধক। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য, চাকরি-বাকরি, শিক্ষা-দীক্ষা, সর্বক্ষেত্রে বাঙালির প্রতি অবহেলা ও বঞ্চনার প্রতিকারের জন্য বঙ্গবন্ধু ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছিলেন, যা’ তাৎক্ষণিকভাবে বাঙালির মর্মে প্রবেশ করে তাকে আত্মসচেতন করে তোলে। ৬ দফায় ছিলো স্বায়ত্তশাসনের কথা; কিন্তু সেই স্বায়ত্তশাসনের দাবিকেও যখন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী অস্বীকার শুধু নয়, দমননীতি অবলম্বন করে জেল-জুমুল-হুলিয়া, বুলেট-বেয়নেটের খোঁচায় খোঁচায় বিদ্ধ করে রাজপথে আন্দোলনরত জনতাকে রক্তাক্ত করে তুললো, তখন বাঙালি স্বাধীনতাকেই আঁকড়ে ধরলো। বাঙালি যে একটি জাতি, যার নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য রয়েছে, সেইটা মানুষের চেতনা ও বোধে সঞ্চারিত হতে থাকলো এবং এই জাতির আবাসভূমি পূর্ব পাকিস্তান বাঙালির একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেই ধারণা জনমানসে দৃঢ়ভাবে গেড়ে বসলো। চট্টগ্রামের জননেতা এমএ আজিজের ভাষায়Ñ‘৬দফা না মানলে এক দফা’- অর্থাৎ স্বাধীনতার দাবিতেই পৌছে গেলো বাঙালি জাতি। তারপর অনেক রক্তাক্ত আন্দোলন, অনেক ইতিহাস হয়ে গেলো। সত্তরে নির্বাচন হলো-এই নবজাগ্রত জাতি আওয়ামী লীগকে বাঙালির প্রতিনিধিত্বকারি একমাত্র বৈধ দল হিসেবে ম্যান্ডেট প্রদান করলো। জনগণের রায় মানতে অস্বীকার করে পাকিস্তানের ফৌজি শাসক ইয়াহিয়া বাঙালি জাতির ওপর গণহত্যা শুরু করলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আকাক্সিক্ষত স্বাধীনতা আসে; হাজার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাঙালি স্বাধীন জাতি হিসেবে স্বীকৃত হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিকারি হলো। এটাই বাঙালি জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠ অবদান। ইতিপূর্বে বাংরাদেশ নামে কোনো রাষ্ট্র ছিলো না। বঙ্গবন্ধুই প্রথম বাঙালিকে জাতি পরিচিতি দিলেন এবং বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করলেন।
বঙ্গবন্ধুর পূর্বে বাঙালির অনেক নেতা ছিলেন; যেমন রামমোহন রায়, বিবেকানন্দ, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ ঘোষ, দেশবন্ধু সি আর দাশ, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক; পাকিস্তান উত্তর বাংলাদেশে (পূর্ব পাকিস্তান) বঙ্গবন্ধু একক বাঙালি নেতা ছিলেন না, তাঁর সিনিয়র এ কে ফজলুল হক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, আবুল মনসুর আহমদ, আতাউর রহমান খান, তাঁর সমসাময়িক অলি আহাদ, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ছিলেন, যাঁদের সঙ্গে তাঁকে নেতৃত্ব ভাগাভাগি করতে হতো; কিন্তু পাকিস্তানের পতনের কালে বঙ্গবন্ধু বাঙালির একক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছেন। ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী তখন গত হলেও বাকি সব নেতা জীবিত ছিলেন, কিন্তু তাঁদের ভাবমূর্তি, জনপ্রিয়তা বঙ্গবন্ধুর ধারে কাছেও ছিলো না। বঙ্গবন্ধুর স্থান তখন এভারেস্টের চূড়ায় উপনীত।
উল্লিখিত নেতৃবৃন্দের কেউই বাঙালি জাতিসত্তা নির্মাণ করেননি, বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেননি। বঙ্গবন্ধু করেছিলেন, সে কারণে তিনি জাতির পিতা এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা।
পাকিস্তানের ইসলামী জাতীয়তার বিপরীতে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদের স্লোগান তুলেছিলেন। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বনি দিয়েছিলেন। পাকিস্তানে প্রাপ্তবয়স্কের সার্বজনীন ভোটাধিকার ছিলো না। বঙ্গবন্ধু মাথাপিছু এক ভোটের অধিকার আদায় করে ’৭০-এর নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন।
এককথায় বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরে তিনি এর সঙ্গে সমাজতন্ত্র যোগ করে চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ঘোষণা করেছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় অবদান হলো সত্তরের নির্বাচিত এমএনএ ও এমপিএ-দেরকে নিয়ে একটি গণপরিষদ গঠন করে সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন এবং ১৯৭২ সালে জাতিকে সেই সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন বঙ্গবন্ধুর আরো দুটি অমর কীর্তি। কিন্তু এসব কিছুকে ছাপিয়েও যেটা বড় হয়ে দেখা দেয়, সেটা হলো তিনি মাত্র তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার সম্পন্ন করেছিলেন।
ইতিপূর্বে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ঘোষণা করেছিলেন ১৯৭২ সালের ৩০ জুন ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন মার্চের মধ্যে তারিখটা এগিয়ে নিয়ে আসতে। বঙ্গবন্ধু-ইন্দিরা শীর্ষ সম্মেলন হলো দিল্লিতে এবং সেই শীর্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু যখন তাঁর ইচ্ছার কথা জানালেন তখন ম্যাডাম গান্ধী বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, ৩১ মার্চ ভারতীয় সৈন্যরা চলে যাবে। এই ঘটনায় বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্ব, রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতার প্রমাণ পাওয়া যায়। অন্য কোন নেতার পক্ষে ভারতকে এই প্রস্তাবে রাজি করানো সম্ভব ছিলো না। দুঃখ হয়, এই বঙ্গবন্ধুকেই ভারতের লেজুড় অপবাদ দিয়ে পঁচাত্তরে স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুদের ষড়যন্ত্রে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সাধারণত কোন দেশের সেনাবাহিনী যখন আরেক দেশে যুদ্ধ করতে গিয়ে বিজয় অর্জন করে, তখন তারা সহজে সে দেশ ছেড়ে যেতে চায় না। বাংলাদেশই একমাত্র ব্যতিক্রম যেখানে বঙ্গবন্ধুর হিমালয়সদৃশ ব্যক্তিত্ব এবং বিচক্ষণতার কারণে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্যরা স্বল্পতম সময়ের মধ্যে তাদের দেশে ফিরে গিয়েছিলো।
এখানে ভারতের সহযোগিতা কথাও বলতে হয়। ষাট দশকের গোড়া থেকে বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীনতার পথ খুঁজছিলেন, তখন তিনি ভারতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এবং ভারত তাঁর পরবর্তী প্রতিটি উদ্যোগে কার্যকর সহেযাগিতা দিয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা ছিলো বিশাল, বাংলাদেশের জন্য ভারতের ত্যাগ ছিলো অপরিসীম।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৯ জানুয়ারি পাকিস্তানের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে আসেন। সেখান থেকে তাঁর দিল্লি অভিমুখী বিমান যাত্রায় বিখ্যাত ভারতীয় কূটনীতিক শশাঙ্ক এস ব্যানার্জী ১৩ ঘণ্টা তাঁর সঙ্গে ছিলেন। সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর একটি পুস্তকে (ভারত, মুজিবুর রহমান, বাঙলাদেশের স্বাধীনতা ও পাকিস্তান) ১৩ ঘণ্টার ভ্রমণ কাহিনী তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন। সেখান থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃত করছি।Ñ
“৯ জানুয়ারি ১৯৭২ সকাল ৬টায় আন্তরিক স্বাগতমের মাধ্যমে শেখ মুজিব লন্ডনে হিথ্রো বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জের ‘এলিয়ক এ্যান্ড ব্রাউন স্যুইট’ এ এসে পৌঁছান। ব্রিটিশ ফরেন এ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের হেড অফ ইন্ডিয়ান ডেস্ক-এর ওধহ ঝঁঃযবৎষধহফ ছাড়া লন্ডন ভারতীয় হাই কমিশনের আপা বি পন্ত এয়ারপোর্টে উপস্থিত ছিলেন। সাদারল্যান্ড অত্যন্ত দ্রুত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথ-এর সাথে শেখ মুজিবের একটি মিটিং এর ব্যবস্থা করে ফেললেন ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটে। মুজিব পরবর্তীতে বলেছিলেন যে মিটিংটি অত্যন্ত কার্যকরী ও প্রতিশ্রুতিশীল ছিল।
আপা বি পন্ত’ও যথাযথভাবে ফোনে ইন্দিরা গান্ধীর সাথে শেখ মুজিবের আলাপ করিয়ে দেন। গান্ধী মুজিব আলোচনা আধ ঘন্টা স্থায়ী হয়। মুজিবের জীবনের স্বপ্ন স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম উপলক্ষে তাকে অভিনন্দন জানানো ছাড়াও ইন্দিরা গান্ধী ঢাকা যাবার পথে মুজিবকে নয়াদিল্লি ঘুরে যাবার আন্তরিক আমন্ত্রণ জানান। মুজিব তাঁর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। মিসেস গান্ধী মুজিবকে আরো জানান যে তিনি তাঁর জন্য এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ভিআইপি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছেন। মুজিবের ফ্লাইটটি যখন প্রস্তুত করা হচ্ছে তখন ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে দ্বিতীয়বার কল করে বলেন তিনি এয়ার ইন্ডিয়া এডওয়ার্ড হীথ-এর সাথে কথা বলে মুজিবের লন্ডন থেকে দিল্লি আসার ব্যবস্থা করেছেন রয়্যাল এয়ারফোর্সের একটি মিলিটার জেট-এ। এই ফ্লাইট বদলের উদ্দেশ্য তিনি গোপনে শেখ মুজিবকে জানান।
মিসেস ইন্দিরা গান্ধী ভীত ছিলেন যে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটটিতে শত্রুপক্ষের কোনো এজেন্ট কোনো নির্বোধ ফাঁদ পাতার চেষ্টা করতে পারে। সাবধানতা অবলম্বনের প্রেক্ষিতে তাঁর সহজাত প্রবৃত্তির ওপর নির্ভর করে তিনি মত পরিবর্তন করলেন এবং এডওয়ার্ড হীথ এর কাছে রয়্যাল এয়ারফোর্সের একটি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করলেন। একটি ভিআইপি জেট যা বাংলাদেশী নেতাকে প্রথমে দিল্লি ও পরবর্তীতে কলকাতায় যাত্রা বিরতি দিয়ে ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। তিনি বাংলাদেশের নেতার উপর তাঁর ইচ্ছামত এই পরিকল্পনা রদবদলের অধিকারও ন্যস্ত করেন।
এটি একটি বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ছিল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অনুরোধের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের সাথে ব্রিটিনের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টা, কারণ তখনও পর্যন্ত এই দুই পক্ষের কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিলো না। প্রোটোকলের শর্ত অনুযায়ী এডওয়ার্ড হীথ এই অনুরোধ গ্রহণ করেন। তাঁর জায়গা থেকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এই সুযোগ চলে যেতে দেননি। যদিও তিনি মিসেস গান্ধীর আসল উদ্দেশ্যে সম্পর্কে অবগত ছিলেন যে তিনি চাইছেন ব্রিটেন বাংলাদেশকে যেন স্বীকৃতি দেয়। সব মিলিয়ে ইন্দিরা গান্ধী ও এডওয়ার্ড হীথ দুজনেরই ইচ্ছে ছিল শেখ মুজিবকে তাঁর ঘর গোছাতে সাহায্য করার এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত নতুন দেশটির প্রশাসন ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চালু করে দেবার।
এখন প্রশ্ন ফ্লাইটে মুজিবের সঙ্গী হবেন কে? মিনিষ্ট্রি অফ এক্সটারনাল এফেয়ার্স এর পলিসি প্ল্যানিং মিনিষ্টার দুর্গা প্রসাদ ধর ইন্টেলিজেন্স চিফ রামনাথ কাও, ফরেন সেক্রেটারি টি এন কাউল এবং ‘র’-এর দ্বিতীয় প্রধান কে শংকরন নায়ার এর সাথে আলাপ করে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন যে রয়্যাল এয়ারফোর্সের ফ্লাইটে মুজিবের সঙ্গী আলাপ করে প্রধানমন্ত্রীকে বলে যে রয়্যাল এয়ারফোর্সের ফ্লাইটে মুজিবের সঙ্গী হিসেবে আমার সফর করা উচিত। কারণ আমি মুজিবকে চিনতাম অনেকদিন ধরে। তাঁর রাজনীতির প্রথম বছরগুলি থেকে এবং আমি এই মুক্তির সংগ্রামে ঢাকা ও লন্ডনের সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে একাত্ম হয়েছিলাম। ইন্দিরা গান্ধী এই বিচক্ষণ প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন এবং ব্যক্তিগতভাবে আমাকে সফর করার অধিকার প্রদান করেন। আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশ আসে যে সফরকালীন সময়ে মুজিবকে আমার কি বলতে হবে। মুজিবের সাথে রয়্যাল এয়ারফোর্সের এর কমেট জেট-এ সফর করার সুযোগ ছিল ১৩ ঘণ্টার যাত্রা, আর পথে দু’বার রিফুয়েলিং এর জন্য থামা। সেটা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মিশনে পরিণত হয়।
আয়ান সাদারল্যান্ড আমাকে মুজিবের ঠিক পাশের আসনটি গ্রহণ করতে বলেন। ভিআইপি ফ্লাইটে টুইন সীট দুটি একটি ওয়ার্কিং ডেস্ক এর পেছনে অবস্থিত ছিল। ডেস্কটি অত্যন্ত উপযোগী ছিল কারণ এর ওপর গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স কাগজপত্র ছড়িয়ে রাখা যেত। বাংলাদেশের নেতা এই ডেস্কটি ব্যবহার করেছিলেন তাঁর ধুমপানের পাইপটি রাখার কাজে। তাঁর প্রিয় তামাক ছিল সুগন্ধী ব্রন্ড ‘ঊৎরহসড়ৎব’। উড্ডয়নের প্রাক্কালে বিমান থেকে নেমে যাবার আগে সাদারল্যান্ড আমার কাছে জানতে চাইলেন যে মুজিবের সাথে ফোটোগ্রাফ তুলতে আমার কোন আপত্তি আছে কি না। আমি তার জবাবে বললাম, ‘না, নিশ্চয়ই আমার কোন আপত্তি নেই’। তিনি আমাকে বললেন ফ্লাইট চলাকালীন সময়ে পাইলট আমার এবং মুজিবের দুইটি ছবি তুলবেন যার কপি দিল্লিতে ল্যান্ড করার আগেই আমাকে দেয়া হবে। তার মধ্যে একটি ফটোগ্রাফ এই বইয়ে প্রকাশিত হল। আমার প্রতি সব রকম খেয়াল রাখার জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানালাম।
বিমান উড্ডয়নের ঠিক আগে একটা মজার ঘটনা ঘটল। আয়ান সাদারল্যান্ড বিমানের দরজায় আমার কাছে এলেন এবং বললেন ‘যাত্রা আনন্দময় হোক’। কোন শব্দ ব্যবহার না করে ইশারায় তিনি আমাকে বললেন অতিথির দিকে খেয়াল রাখতে। আমিও ইশারায় তাঁকে নিশ্চিত করলাম যে তাঁর চিন্তার কোন কারণ নেই। আমি তাঁর সাথে করমর্দন করে তাঁর শুভেচ্ছার জন্য ধন্যবাদ জানালাম।
কিছুক্ষণ হাসি ঠাট্টা ও অরেঞ্জ জুস পানের পর মুজিব বেশ গোপনীয়ভাবে ফিসফিস করে আমাকে একটা বিষয়ে সহযোগিতার জন্য বললেন। তাঁর কথায় কোন দ্বিধা ছিল না। আমি আমার ক্ষমতায় থাকলে করবো বলে তাঁকে জানালাম।
এবার তিনি কথাটা বললেন। তিনি চাইলেন দিল্লি পৌঁছানোর সাথে সাথেই আমি যেন তাঁর একটি ব্যক্তিগত বার্তা মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর কাছে পৌঁছে দেই। রাষ্ট্রপতি ভবনে মিসেস গান্ধীর সাথে তাঁর মিটিং-এ তিনি একটি অনুরোধ করবেন, তার আগেই আামকে বার্তাটি পৌঁছে দিতে হবে।
প্রথম কয়েক সেকেন্ড আমি নার্ভাস ছিলাম। মিশনটি আসলে কি? দিল্লির উৎসবমুখর পরিবেশে আমি কি প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছাতে পারবো? মুজিবের ভাষায় তিনি চাইছিলেন এই ব্যক্তিগত অনুরোধটি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিয়ে আমি যেন কিছু আগাম খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখি যে তিনি সৈন্য ফিরিয়ে আনার সময়সূচি সংক্রান্ত তাঁর সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনা করবেন কি না?
তিনি আমাকে বোঝালেন যে তাঁর অনুরোধের পেছনে আছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথ-এর একটি আকাক্সক্ষা। ভারত যদি ৩১ মার্চ ১৯৭২ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তার সব সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়, যে তারিখটি ইন্দিরা গান্ধী ঘোষিত ৩০ জুন ১৯৭২ এর তিন মাস আগে, তাহলে বাংলাদেশকে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেবার পথ ব্রিটেনের জন্য সুগম হবে। উপরোক্ত অনুরোধের সাথে মুজিব তাঁর নিজের ইচ্ছার কথাই জানালেন। তিনি আসন্ন ইন্দিরা গান্ধী-মুজিবুর রহমান বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন দেখতে চেয়েছিলেন।
দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছানোর পর আমরা যখন সিঁড়ি বেয়ে বিমান থেকে নেমে আসছিলাম তখন আমি দেখলাম সস্ত্রীক ভারতের প্রেসিডেন্ট ভি.ভি. গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, ফরেন মিনিস্টার ডিপি ধর অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে অপেক্ষা করছেন বাংলাদেশের নেতাকে স্বাগতম জানানোর জন্য। আবেগময় কুশল বিনিময়ের পর মুজিবকে ভেন্যুতে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তাঁকে ভারতীয় সামরিক বাহিনী, ভারতীয় নৌবাহিনী ও ভারতীয় বিমান বাহিনীর যৌথ সমন্বয়ে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হবে। রৌদ্রজ্জ্বল শীতের সকালে এসব দেখতে দারুণ লাগছিল।
ডিপি ধরের মনোযোগ অন্য কোথাও ছিল। কমেট জেট এর দোরগোড়ায় থাকতেই তিনি আমাকে একপাশে নিয়ে গেলেন এবং কাজের কথা বলার ভঙ্গিতে জানতে চাইলেন বাংলাদেশের নেতার সাথে আমার কোনরকম আলোচনা হয়েছে কি না।
বাংলাদেশকে ব্রিটেন এর স্বীকৃতির বিষয়টি নয়াদিল্লি এবং ঢাকা দু’দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল। মুজিবের সাথে ফ্লাইটে যে সব কথা হয়েছে আমি সরাসরি সে সব তাঁকে জানালাম। আমি এ রকমটি বলেছিলাম যে “এডওয়ার্ড হীথ মুজিবকে তার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন যে ইন্দিরা গান্ধীর সাথে কথা বলে ৩১ মার্চ ১৯৭২ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করা যায় কি না। তার অর্থ দাঁড়াবে এর আগে প্রস্তাবিত ৩০ জুন ১৯৭২ থেকে তারিখটি প্রায় তিন মাস এগিয়ে আনা। এটি বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ব্রিটেনের স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি ত্বরান্বিত করবে। কিছুক্ষণ পর ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সম্মেলনে মুজিব ঐ বিষয়টি তুলবেন।” আমি বেশ জোর দিয়ে ধরকে জানালাম যে মুজিব প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় সবচেয়ে গুরুত্ব দেবেন এ বিষয়টিতে এবং এই বিষয়টিকে তিনি লিটমাস টেস্ট হিসেবে দেখছেন। এই বিষয়ে ভারতের প্রতিশ্রুতি তাঁর দেশের মানুষের কাছে তাঁর অবস্থানকে নিশ্চিত করবে।
আমি ডিপি ধরকে আরো জানালাম যে বাংলাদেশের নেতা বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানকে নতুন দেশের পরিচালনায় সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি গ্রহণের বিষয়ে রাজি করানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবং এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে যে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হবে এবং তিনি (মুজিব) নিজে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ঐ অনুষ্ঠান ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ অনুষ্ঠিত হবে।
এয়ারপোর্ট থেকে ঘড়ির কাঁটা ধরে রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছানোর পর ডিপি ধর প্রধানমন্ত্রীর সাথে দ্রুত একটি মিটিং এর অনুরোধ করলেন এবং আমার কথার ওপর ভিত্তি করে তাকে রিপোর্ট করলেন যে মুজিব বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের তারিখটি ৩ মাস এগিয়ে ৩০ জুন ১৯৭২ তারিখের বদলে ৩১ মার্চ ১৯৭২ নির্ধারণ করার বিষয়টি সম্মেলনে উত্থাপন করবেন। এই অনুরোধ রক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত নিরাপত্তা বিশ্লেষণ করতে হবে কিন্তু তিনি এই মুহূর্তে একটি জবাব চান।
রাষ্ট্রপতি ভবনে যখন কলকাতার বিখ্যাত সুস্বাদু বাঙালি মিষ্টি নতুন গুড়ের সন্দেশ, মশলাদার সিঙ্গাড়া ও সেরা দার্জিলিং চায়ের মাধ্যমে অতিথি অভ্যর্থনা চলছে, মিসেস গান্ধী তখন ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তাঁর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে বিষয় ভিত্তিক আলোচনা সেরে নিতে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ইন্টেলিজেন্স চিফ রাম নাথ কাও, ফরেন সেক্রেটারি টিএন কাউল, রাজনৈতিক উপদেষ্টা পিএন হাকসার, ডিপি ধর এবং চিফ অফ আর্মি স্টাফ জেনারেল শ্যাম মানেকশ’। প্রধানমন্ত্রী তার জায়গা থেকে সিদ্ধান্ত নিলেন যদি রাষ্ট্রপতি ভবনে তার সাথে সাক্ষাতের সময় মুজিব এই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন তবে তিনি ৩১ মার্চ ১৯৭২ তারিখে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করায় সম্মত হবেন। এর আগে কখনও ভারতের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে এত গুরুত্বের সাথে এত দ্রুত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ন।
সম্মেলনে শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রীর সামনে ৩১ মার্চ ১৯৭২ তারিখের মধ্যে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টি উত্থাপন করেন। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ইন্দিরা গান্ধী-শেখ মুজিবুর রহমান সম্মেলনের পর একটি যৌথ সিদ্ধান্তমালা ইস্যু করা হয় যেখানে নয়াদিল্লিতে শেখ মুজিবের পরামর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা দেয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের প্রতি ভারতের নিঃশর্ত বন্ধুত্বের বিষয়টি প্রমাণ করে। …
ভিআইপি ফ্লাইটে ফিরে আসা যাক। সাইপ্রাসের আক্রোতিরিতে রয়েল এয়ার ফোর্সের কমেট জেটটি জ¦ালানি নেবার পর ফের যাত্রা শুরু করলো ওমানের দিকে। দিল্লি যাবার পথে যেখানে দ্বিতীয়বার জ¦ালানি নেবার কথা ছিল। আমি মুজিবকে বেশ খোশ মেজাজে দেখলাম। তিনি উঠে দাঁড়ালেন এবং ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গান ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গাইতে শুরু করলেন এবং আমাকে তাঁর সাথে অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ করলেন। প্রথমবার ছিল অনেকটা রিহার্সেল এর মতো, তিনি যখন দ্বিতীয়বার গাইতে শুরু করলেন, তখন তা আরো বলিষ্ঠ ও আবেগী মনে হচ্ছিল। আমি এক ঝলকের জন্য তার আবেগে অশ্রুসিক্ত চোখ দেখতে পেলাম। আমি এতদিন তাকে উৎফুল্ল মানুষ হিসেবে জানতাম, কিন্তু এখন আমার কোন সন্দেহ রইল না তার চোখের জল তার সত্যিকারের ভেতরের মানুষটাকে বাইরে এনে দিয়েছে, যে একজন আপসহীন দেশপ্রেমিক। তখনকার দিনের রাজনীতিবিদদের মধ্যে যা খুব অল্প দেখা যেত।
তিনি যখন বসলেন তখন আমাকে বেশ অবাক করে দিলেন। আমার কানে ফিসফিস করে বললেন যে “আমার সোনা বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হওয়া উচিত। তিনি আমার মতামত জানতে চাইলেন। আমি তাকে বললাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যার মানবতার সীমা ছিল না, তাঁর গান ব্যবহার করা, এটি দারুণ একটি চিন্তা যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মৈত্রী সেতু তৈরি করবে। চিরদিনের জন্য এই বাঁধন শক্ত করতে এর চেয়ে বেশি আর কি লাগতে পারে? এরকম ইতিহাসে কখনই হয়নি যে দু’টি দেশের জাতীয় সংগীত একটি মানুষের লেখা। এটাও আসলে মুজিবের উৎফুল্ল আবেগের পরিচায়ক যখন তিনি আমাকে বললেন, যদিও ইতিহাসের কোথাও লিখিত রেকর্ড থাকবে না কিন্তু ব্যক্তিগত জায়গা থেকে আমি যেন জেনে রাখি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত করার সিদ্ধান্ত দুই পুরোনো বন্ধুর নেয়া, ‘আপনি এবং আমি’-রয়েল এয়ার ফোর্সের লন্ডন থেকে ঢাকাগামী ফ্লাইটে। এবার আমার আবেগী হয়ে ওঠার পালা।
আবেগ সরিয়ে রেখে ভাবলে, মুজিব খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন এবং তার উদ্দেশ্য সাধনে কোন সুযোগ নিতে চাচ্ছিলেন না যখন ‘জাতীয় সঙ্গীত কূটনীতি’ বিষয়টি তিনি আমার সাথে ঘটান। তিনি আমাকে উদ্বুদ্ধ করতে চাইছিলেন যাতে আমাকে দেয়া ‘আগাম খোঁড়াখুঁড়ি’র কাজটি ইন্দিরা গান্ধীর সাথে আমি ভালোমত সম্পন্ন করি, যাতে ইন্দিরা গান্ধী ৩১ মার্চ ১৯৭২ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে সম্মত হন। এটি ভারত ও বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল যে বিষয়ে আমি বেশ ভালোমতই অবগত ছিলাম”।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

পিকনিক বাসে  বিদ্যুতায়িত হয়ে ৩ ছাত্রের  মৃত্যু ঘটনায় তদন্ত কমিটি

গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পিকনিক বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট

বিস্তারিত »

বাংলাদেশে আবার পাকিস্তানের জিগির

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী শেখ হাসিনার যুগপৎ পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের পর দেশ পরিচালনার জন্য একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কথা উঠতে না উঠতেই প্রধান

বিস্তারিত »

৫ বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাই চট্টগ্রাম বোয়ালখালীতে

বোয়ালখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো.সাইদুর রহমান জানান, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে টিনশেড মাটির ৫টি বসতঘর পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে বোয়ালখালী

বিস্তারিত »

এস আলমের সমর্থনে চট্টগ্রামের মানুষ রাস্তায় নামতে পারে

সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়েছে, চট্টগ্রামের এস আলম শিল্পগোষ্ঠী। এস আলমের স্বত্ত¡াধিকারী সাইফুল আলম মাসুদ, তাঁর স্ত্রী এবং শিল্পগোষ্ঠীর পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত তাঁর ভাইদের ব্যাংক

বিস্তারিত »

সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া এক যুগ পরে

দীর্ঘ এক যুগ পর সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শারীরিক অবস্থা ঠিক থাকলে আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকাল

বিস্তারিত »

পদত্যাগ তিন বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, কাজী রেজা-উল হক ও এ.কে.এম. জহিরুল হক

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। হাইকোর্টের তিন বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক

বিস্তারিত »

ব্যবসায়ী শিল্পোদ্যোক্তারা আতঙ্কিত

দেশের বৃহৎ কর্পোরেট শিল্পগোষ্ঠীগুলি সরকারের হয়রানির ভয়ে কুঁকড়ে আছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাদেরকে নিয়ে যে টানা হ্যাঁচড়া শুরু করেছে, তার কোনো থামাথামি

বিস্তারিত »

সংবিধানেই আছে বঙ্গবন্ধুই জাতির পিতা

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর আমাদের দেশে কিছুদিন পর পর এমন সব কথা বলার চেষ্টা করা হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য, জাতিপরিচিতি ভুলিয়ে দেওয়ার

বিস্তারিত »