বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ২ মাঘ, ১৪৩১, ১৫ রজব, ১৪৪৬

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন বাঙালির পুণ্যদিন

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

জাতীয় শিশু-কিশোর দিবস। এদেশে যে হারে একটি বড় দলের প্রধান নেত্রীর ভুয়া জন্মদিন পালন করা হয়েছে, তাতে জন্মদিনের কথা বলতে ভয় লাগে। জাতির জনকের জন্মদিন সবকিছুর উর্ধ্বে অনেক বড় একটি দিন। কিন্তু জাতির জনকের শাহাদাত দিবসকে উপহাস করার জন্য কোন দলের দায়িত্বশীল নেত্রী মিথ্যা জন্মদিন পালন করতে পারেন এটা শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব।
তো বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধুই, তাঁকে তাঁর স্থান থেকে সরানো কোন বিএনপি বা খালেদা জিয়ার পক্ষে সম্ভব নয়। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তারা বঙ্গবন্ধুর নামই মুঝে ফেলতে চেয়েছিলো বাংলাদেশ থেকে। যেখানে যত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বা অনুষঙ্গ তারা পেয়েছে, উপড়ে ফেলেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর স্থান তো বাঙালির হৃদয়ে, প্রতিটি বাঙালির হৃদয় জুড়ে বঙ্গবন্ধুর নিত্য জীবন্ত উপস্থিতি। বাঙালির রক্তে, অস্থি মজ্জায়, বাংলাদেশের প্রকৃতি, মাঠ-ঘাট, সবুজ শ্যামল প্রান্তর, ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল মানচিত্র ব্যাপে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান- অধিষ্ঠান। সুতরাং এই বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলা অসম্ভব এক অপপ্রয়াস। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অবিভাজ্য, অবিচ্ছেদ্য সত্তা। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, বঙ্গবন্ধুও ততদিন বেঁচে থাকবেন।
আজকের এই দিন বাঙালির জন্য পুত পবিত্র একটি পুণ্যদিন। কারণ বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। বাংলাদেশ না হলে বাঙালি জাতি পরিচিতি পেত না। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক পরিচয়ে বাঙালি আজ যে বিশ্বে মাথা উঁচু করে ঘুরে বেড়ায়, সেটা বঙ্গবন্ধুর কারণেই সম্ভব হয়েছে। বাঙালির বহু বছরের সংগ্রাম বহুদিনের সংগ্রাম বিশ শতকে এসে বঙ্গবন্ধুর মধ্যে পরিপূর্ণতা, সফলতা খুঁজে পেয়েছে। একমাত্র বঙ্গবন্ধুই বাঙালি জাতিসত্তার জাগরণ ঘটিয়ে বাঙালিকে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। একারণে বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। একারণে প্রতিটি বাঙালিই বঙ্গবন্ধুর কাছে ঋণী। এই ঋণ অপরিশোধ্য।
১৭ মার্চ বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক মহিমাম-িত অনন্য একটি দিন-কারণ এদিন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবির্ভাবে ধন্য হয়েছিলো বাংলাদেশ। আমাদের মধ্যে যাঁরা এদিনটি দেখার সৌভাগ্যের অধিকারী হবেন, তাঁরা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম বলে বিবেচিত হবেন। আমরা হয়তো সেই ভাগ্যবান বাঙালি, যে আমাদের জীবনকালে সেই জ্যোতির্ময় মহাপুরুষের জন্মধন্য দিবসটি প্রত্যক্ষ করতে পারবো। আর একশো বছর পর আবার দিনটিরই দেখা পাবে বাঙালি জাতির অনাগত প্রজন্ম-ততদিনে আমাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা তিরোহিত হয়ে যাবে।
সুতরাং জাতির জনকের জন্মশতবর্ষের এই মাহেন্দ্রক্ষণটি আমাদের জীবনে যে অপার আনন্দ ও খুশির বার্তা নিয়ে এসেছে, তাকে বুকে ধারণ করে আসুন আমরা আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠি। যতটা জাঁকজমক ও বর্ণিল আনুষ্ঠানিকতায় সম্ভব, চলুন আমরা এই মহান দিবসটি উদযাপন করি-ব্যক্তিজীবনে ও জাতীয় জীবনে।
চট্টগ্রাম প্রান্তীয় জেলা হলেও আমাদের এই প্রিয় জেলাটির সঙ্গেই বঙ্গবন্ধু গভীর আবেগময় হ্যার্দিক সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। সে আজকের কথা নয়, ১৯৪৩ সালে চট্টগ্রামের জননেতা এমএ আজিজ ও জহুর আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায় বঙ্গবন্ধুর। অতঃপর চট্টগ্রামের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর যে আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়, শুধু পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতেই তার পরিসমাপ্তি ঘটে। বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম থেকেই নিয়েছেন। বস্তুত চট্টগ্রামের হাত ধরেই বঙ্গবন্ধু’র রাজনীতি ও নেতৃত্বের ক্রমবিকাশ ঘটে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন সাধারণ মানুষের জন্মদিন নয়। সাধারণ মানুষের জন্মদিনও ঘটা করে পালন করা হয়। কেক কাটা হয়, বেলুন উড়ানো হয়, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও খানাপিনা হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনও যদিন তাদের অনুরূপ অনুষ্ঠানসর্বস্ব হয়, তাহলে তা’ আলাদা কোনো তাৎপর্য বহন করে না। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান সূচিতে নিশ্চয়ই সুচিন্তিত পরিকল্পনা ও সৃজনশীলতার ছাপ থাকতে হবে। শততম জন্মদিন হলে তো কথাই নেই।
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন নয়। আগামী বছরই তিনি শতবর্ষে পদার্পণ করবেন। জাতির জনক বলেই আমরা এক বছর পূর্ব থেকে অনুষ্ঠান শুরু করেছি। আগামী বছর হবে মূল অনুষ্ঠান পরেয় বছরও আমরা অনুষ্ঠান করবো। আজ জামালখানে আওয়ামী লীগ নেতাকমীরা যদি দলে দলে এসে জামালখান লোকারণ্য করে তুলতে পারেন, তাহলে তারা বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত অনুসারীর পরিচয় দেবেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মা তাতে শান্তি পাবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

জয় বাংলা

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত গতকাল এক রায়ে বলেছে, ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান নয়। ইতিপূর্বে হাইকোর্ট ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান বলে রায় দিয়েছিলেন। আপিল বিভাগ সেই

বিস্তারিত »

সাংবাদিক মাহবুব উল আলমের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, প্রগতিশীল চিন্তাবিদ, বাম রাজনীতির নীরব সমর্থক ও সংগঠক, মাইজভাণ্ডারী দর্শন ও মওলানা ভাসানীর একনিষ্ঠ অনুসারী এবং সাহিত্যিক মোহাম্মদ মাহবুব উল আলম হাটহাজারী

বিস্তারিত »

আতাউর রহমান খান কায়সার

আতাউর রহমান খান কায়সার চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৪০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আনোয়ারার জমিদার এয়ার আলী খান বঙ্গীয় আইন পরিষদ

বিস্তারিত »

বাংলাদেশে আবার পাকিস্তানের জিগির

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী শেখ হাসিনার যুগপৎ পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের পর দেশ পরিচালনার জন্য একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কথা উঠতে না উঠতেই প্রধান

বিস্তারিত »

এস আলমের সমর্থনে চট্টগ্রামের মানুষ রাস্তায় নামতে পারে

সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়েছে, চট্টগ্রামের এস আলম শিল্পগোষ্ঠী। এস আলমের স্বত্ত¡াধিকারী সাইফুল আলম মাসুদ, তাঁর স্ত্রী এবং শিল্পগোষ্ঠীর পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত তাঁর ভাইদের ব্যাংক

বিস্তারিত »

ব্যবসায়ী শিল্পোদ্যোক্তারা আতঙ্কিত

দেশের বৃহৎ কর্পোরেট শিল্পগোষ্ঠীগুলি সরকারের হয়রানির ভয়ে কুঁকড়ে আছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাদেরকে নিয়ে যে টানা হ্যাঁচড়া শুরু করেছে, তার কোনো থামাথামি

বিস্তারিত »

কক্সবাজার রেললাইন, বঙ্গবন্ধু টানেল, পদ্মা সেতু অনেক প্রধানমন্ত্রীর কাজ এক প্রধানমন্ত্রী করে ফেলছেন :

কেউ কি ভেবেছিলো কক্সবাজারে ট্রেন যাবে ? কেউ কি ভেবেছিলো কর্ণফুলী নদীর তলদেশে সুড়ঙ্গ হবে এবং সেই সুড়ঙ্গ পথই কর্ণফুলীর পানি পাড়ি দিয়ে এপার ওপার

বিস্তারিত »

আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযোদ্ধা এজাহার মিয়া প্রথম বঙ্গবন্ধুর কবর জেয়ারত করেন

পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল সদস্য এবং নিকট আত্মীয়স্বজনকে পৈশাচিক উপায়ে হত্যা করার পর দেশে চরম ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ

বিস্তারিত »

বঙ্গবন্ধুর কবর প্রথম জেয়ারত করেন মুক্তিযোদ্ধা এজাহার মিয়া

পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল সদস্য এবং নিকট আত্মীয়স্বজনকে পৈশাচিক উপায়ে হত্যা করার পর দেশে চরম ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ

বিস্তারিত »