সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৪ ভাদ্র, ১৪৩২, ১৫ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭

বিপ্রতীপ সময়ে একজন শুদ্ধ রাজনীতিকের নীরব প্রস্থান মৃণাল কুসুম বড়–য়ার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি : নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও চাকসুর সাহিত্য সম্পাদক মৃণাল কুসুম বড়–য়া অনেক দিন ধরেই আমার বাসায় আসতে চাচ্ছিলেন। বারবার আমাকে ফোন করে বলতেন আজকালের মধ্যে আসবেন। কিন্তু এ জীবনে সে আসা আর হয়ে উঠলো না। তার আগেই চিত্রগুপ্তের খাতায় তাঁর নাম ওঠে যায়। আমার বাসায় আসব আসব করেও তাঁর আসতে না পারার কারণ হচ্ছে তাঁর বাসা আর আমার বাসার দুস্তর দূরত্ব। তিনি থাকতেন আগ্রাবাদে, আমি চন্দনপুরা। প্রথমবার যখন ফোন করেছিলেন, সম্ভবত বছর দুই হবে, তখন তিনি সুস্থই ছিলেন। অন্তত আমাকে তাই বলেছিলেন। পরে তো তিনি অসুস্থ হয়ে যান। সেই কালব্যাধি শেষ পর্যন্ত তাঁর জীবনটাই হরণ করে নিলো।
মৃণাল বড়–য়া হাটহাজারীর একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা মনোজ কুসুম বড়–য়া বামপন্থী রাজনীতি করতেন। তিনি কিছুদিন রশিদ বিল্ডিং-খ্যাত আবদুর রশিদ সওদাগরের পৌত্র ও খান বাহাদুর মিঞা খান সওদাগরে দৌহিত্র এবং ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের শ্বশুর আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী সেলিম ও তাঁর ভাই কাইয়ুম চৌধুরীকে পড়িয়েছিলেন। তিনি লজিং থাকতেন ওদের বাড়িতে।
মনোজ বাবুর কারণেই পরিবারটিতে প্রগতিশীল রাজনীতি ও সংস্কৃতির বাতাবরণ তৈরি হয়েছিলো। মৃণাল প্রগতিশীল হাওয়াতেই বর্ধিত হয়েছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের অনতিকাল পরে ছাত্রলীগ ভেঙে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রপন্থী ছাত্রলীগ গঠন, পরপরই নতুন রাজনৈতিক দল জাসদ সৃষ্টি হওয়ার পর সমাজতন্ত্রই জাতীয় রাজনীতির মুখ্য উপাদান হিসেবে দেখা দেয়। মৃণালের মনের জমি এই রাজনীতির জন্য উন্মুখ হয়ে ছিলো। মৃণাল বড়–য়া ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এবং জাসদ-পন্থী ছাত্রলীগের রাজনীতিতে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জাসদপন্থী ছাত্রলীগের তখন ভীষণ প্রভাব। মৃণাল এই সংগঠনের একজন বিশিষ্ট নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ৭৮-৭৯-৮০ সালের দিকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির অন্যতম নিয়ামক হয়ে উঠেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ঐ সময় ছাত্রলীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন, মৃণাল কুসুম বড়–য়া তাদেরই অন্যতম ছিলেন। অন্ত-সত্তর ও আশির প্রথমভাগের বিশ্ববিদ্যালয় কাঁপানো সেই ছাত্রলীগ নেতারা হলেন-মরহুম আবুল কাশেম, মোস্তাকিমুল হায়দার খান, মজহারুল হক শাহ চৌধুরী, আবদুল মতিন, খোরশেদ আলম, ড. মনজুর উল আমিন চৌধুরী, স.ম. নজরুল ইসলাম, আমিনুর রসুল, বজলী হোসেন, রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী, নজরুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন, রায়হানুল হক চৌধুরী, মিলন মাহমুদ রোখসান ইসলাম রীতা, কানিজ মাহমুদা পাপড়ি, আবুল কালাম আজাদ, জানে আলম, মুজতবা কামাল।
এই সময় আমি তিন বছর জেল খেটে অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই। আমি আলাওল হলের আবাসিক ছাত্র ছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা দিতে গিয়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলাম তখন আমি শাহ আমানত হলে উঠলাম। সেখানে আমি কফিল উদ্দিন চৌধুরীর (পরবর্তীকালে অ্যাডভোকেট এবং চট্টগ্রাম জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর) ৪০৮ নম্বর রুমে থাকতাম। কখনো বা কাশেমের রুমেও থাকতাম। মৃণাল বড়–য়া আমার সান্নিধ্যে আসেন এবং অল্পদিনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন।
শাহ আমানত হলের সম্মুখে ছাত্রনেতা কাশেম একটি চায়ের দোকান দিয়েছিলো। তাঁর ভাইয়েরা সেটা চালাতো। তাঁর দোকানের সামনে সন্ধ্যায় চেয়ার বিছিয়ে আমি রাজনৈতিক ক্লাশ চালু করেছিলাম। কাশেম, মৃণাল কুসুম বড়–য়া, রায়হানুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসেন, আমিনুর রসুল, জানে আলম, অজয়, নাসিরুল হক নবাব, মুজিবুর রহমান স্বপন, আতিক, আশীষ, জাফর, কফিল, ইমাম শরীফ, আসহাবউদ্দিনরা ছিলো সেই ক্লাশের উৎসাহী শ্রোতা। লাজুক রহমান ও তাঁর ভাগিনা হেলাল, মকবুল ভাই (অধ্যাপক মকবুল আহমদ), রায়হান ভাই (রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী), ইমদাদুল হক (বর্তমানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক), সাঈদ ভাই (কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা), শিল্পী আবদুল মান্নান রানা, নুরুল আলম (বর্তমানে ইয়াংওয়ানের পরিচালক), মাহবুব (বর্তমানে কলেজ শিক্ষক) মাঝে মধ্যে আসতেন। আরো অনেক ছাত্র ক্লাশে ভিড় করতো, তাদের নাম ভুলে গেছি বলে আমি দুঃখিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামের অধিবাসী ছিলেন মৃণাল বড়–য়া। তিনি সম্ভবত ভাইবোনদের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন। তাঁর পরবর্তী উদয় কুসুম বড়–য়া, তিনি প্রথমে ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন) করতেন, পরে বিএনপিতে যোগদান করে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন উদয়। ছাত্র ইউনিয়নের ধারায় রাজনীতির চর্চা করলে উদয় অনেক বড় নেতা হতে পারতেন। উদয়ের পরবর্তী তপন; রাজনীতির চেয়ে সংস্কৃতিই তাকে আকৃষ্ট করে বেশি। ফলে তপন আবৃত্তি, নাটক, সঙ্গীত ইত্যাদি নিয়েই মেতে ওঠে। ভালো আবৃত্তি করতো সে, কবিতা লিখতো, উপস্থাপনা করতো, সাংগঠনিক কাজকর্মে বেশ দক্ষ হয়ে উঠেছিলো। বিয়ে করেছিলো শিল্পী ইন্দিরা চৌধুরীকে। ইন্দিরা লেখালেখি, গানবাজনা, আবৃত্তি, উপস্থাপনা এমনকি সাংগঠনিক কাজকর্মেও পটু ছিলো। ইন্দিরা কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে বহুদিন ধরে শয্যাশাযী।
মৃণাল সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সময়ে যেটা প্রবল হয়ে উঠেছিলো সেই আঞ্চলিকতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ছিলো। তিনি শুদ্ধ ও সুস্থ রাজনীতির চর্চা করতেন। বেশ হাসিখুশি, বন্ধুবৎসল, আড্ডাবাজ এবং পরিহাসপ্রিয় ছিলেন। তাঁর কোন শত্রু ছিলো না, তিনি অজাতশত্রু ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রিয় মুখ ছিলেন তিনি। মৃণাল বড়–য়া দার পরিগ্রহ করেন নি। আমরাই তাঁর উত্তরাধিকার বহন করবো।
মৃণাল বড়–য়া এবং তাঁর রাজনৈতিক সতীর্থরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল রাজনীতির ফুল ফুটানোর জন্য যে মানবজমিন আবাদ করেছিলেন, তার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ফুলে ও ফসলে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিলো। আশির চাকসু করায়ত্ত করা সে কারণেই তো সম্ভব হয়েছিলো।
আমার মনের কোণে ভিড় করে একে একে ভেসে উঠছে সেই সময়ের ছাত্রলীগের গর্বিত নেতা-কর্মীদের মুখচ্ছবিÑ মাহবুব আলম (চেম্বার সভাপতি), জানে আলম, মুজতবা কামাল, মোহাম্মদ হোসেন, মোশাররফ হোসেন, আবদুল মতিন, আশীষ চৌধুরী (অধুনা লন্ডন প্রবাসী), অমিয় শংকর বর্মণ, নাসিরুল হক নবাব, অধ্যাপক মনসুর উল আমিন চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, মুজিবুর রহমান স্বপন, ছালে জহুর মোহাম্মদ বাহাদুর, কামাল উদ্দিন, জাফর আলম (বর্তমানে এমপি), অধ্যক্ষ শাহ আলম, অধ্যক্ষ দীননাথ দে, অধ্যাপক ইলিয়াস চৌধুরী, মুশতাক (ব্যাংকার), মুনিরুল ইসলাম লতিফি, অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম লতিফি, অজয় রতন বড়–য়া, অ্যাডভোকেট মুজিবর রহমান খান, অ্যাডভোকেট কফিলউদ্দিন চৌধুরী, ব্যাংকার নূর উল আরশাদ চৌধুরী, মুনির, স.ম. জাকারিয়া, শওকত আলী টিপু, মনজরুল হক চৌধুরী বাবুল, হাসিব খান, অধ্যক্ষ আ.ক.ম. গিয়াসউদ্দিন, রফিক, অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী, নুরুল আফসার, আসহাবউদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন, ফরিদুল আলম, ক্যংজরী, মঙকিউ, মেজবাহউদ্দিন টুলু, আবদুল মাবুদ, দেলোয়ার মোহাম্মদ ফারুক, ফরিদুল ইসলাম সাবু, আখতার হোসেন, মেজবাহউদ্দিন, ওবায়েদ, মেজবাহ উদ্দিন মনু, মোবারক হোসেন, সেলিম কলি, মনেয়ার হোসেন মঞ্জু, আবুল কাশেম, হুমায়ুন কবির, লিটন, আজিজ আহমদ, ফখরুদ্দিন, বাকের হোসেন, আবদুর রাজ্জাক, দিবাকর বড়–য়া, দীপংকর বড়–য়া, অংথিং মং, মং প্রু মং চৌধুরী (শাহজালাল হল), দিল মোহাম্মদ, সাদেক চৌধুরী, শওকত, আবু সুফিয়ান, গোলাম রহমান।
মৃণাল বড়–য়ার প্রয়াণে তাঁর বন্ধু, সহকর্মী, সতীর্থ সবাই শোকার্ত বেদনাহত। শোকসন্তপ্ত হৃদয়েই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ তাঁরা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে একটি স্মরণসভার আয়োজন করেছেন।
আশা করছি মৃণাল কুসুম বড়–য়ার সহাধ্যায়ী, সহকর্মী, সতীর্থ ও রাজনেতিক সাথীরা আজকের শোকসভায় উপস্থিত হয়ে তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আহমদ শরীফ মনীর : রাজনৈতিক তাত্ত্বিক ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট সংগঠক নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

স্বাধীনতা-উত্তর পরবর্তীকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিভক্তি এবং একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব প্রত্যক্ষ করে; সেই দলের নাম জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এটা বোধ হয় কারো অজানা

বিস্তারিত »

জান আলীকে নিয়ে মকবুলের কবিতা : তক দে মিয়া বকশিস দিবা আসলত্তুন হানি

সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের পথিকৃৎ শিল্পপতি এ কে খানের পিতামহ জান আলী খান চৌধুরী ১৮ ও ১৯ একজন দোর্দণ্ড প্রতাপশালী জমিদার ও সমাজপতি ছিলেন। আঠার শতকে

বিস্তারিত »

ভালো মানুষের জন্য খারাপ সময়ে একজন ভালো মানুষের প্রস্থান

জীবন থেকে ছুটি নিলেন মোবারক ভাই। মোবারক ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শোনার পর থেকে আমার মধ্য নানা রকম প্রতিক্রিয়া হয়েছে। তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন এটা সত্য

বিস্তারিত »

বাঁশখালীর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নায়ক সুভাষ আচার্য্য

ভারতে না গিয়ে যাঁরা গ্রামে অবস্থান করে বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে সুভাষ আচার্য্য অন্যতম। তিনি সুলতান উল কবির চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করতেন এবং

বিস্তারিত »

মুক্তিযুদ্ধ যাঁরা শুরু করেছিলেন তাঁরা চলে গেছেন, হারিছই আছেন একা

চট্টগ্রাম শহরে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ করেছিলেন, তাঁরা চলে যাচ্ছেন। সাতজন ছিলেন তাঁরা, পাঁচজন ইতিমধ্যে তাঁদের প্রভুর ডাক পেয়ে এ গ্রহ ছেড়ে চলে গেছেন প্রভুর সন্নিধানে।

বিস্তারিত »

আওয়ামী লীগ, বাঙালি জাতিসত্তার নির্মাণ ও বাংলাদেশ একসূত্রে গাথা

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২৩ বছরের অবিরাম সংগ্রাম এবং অবশেষে ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকেই

বিস্তারিত »

সুলতান কুসুমপুরী ও তাঁর কোম্পানি কমান্ডার হাবিলদার আবু’র মুক্তিযুদ্ধ

মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের ১৩জন এমপি সম্মুখ যুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তারা সেনা কর্মকর্তাদের ন্যায় মুক্তিযুদ্ধে তাদের গ্রæপকে কমান্ড করেন। এই ১৩ জন এমপি

বিস্তারিত »
প্রদ্যোৎ কুমার পাল

৭১-এর দুরন্ত গেরিলা প্রদ্যোৎ কুমার পাল

প্রদ্যোৎ কুমার একজন অসম সাহসী বীরের নাম। মুক্তিযুদ্ধে এই দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধা দক্ষিণ চট্টগ্রামের রণাঙ্গণ মাতিয়ে রেখেছিলেন তাঁর অসীম সাহস ও পরাক্রম দিয়ে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের চারটি

বিস্তারিত »