আলু নিয়ে মূল্যবৃদ্ধির সিন্ডিকেট আবার সক্রিয় বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। সোমবার (১৮ মার্চ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, সরকার প্রান্তিক কৃষকদের দোরগোড়ায় ন্যায্যমূল্যে সার, বীজ এবং কৃষি উপকরণ পৌঁছে দেওয়ার কারণে সারাদেশে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আলুর বাম্পার ফলন হলেও সাধারণ ভোক্তা এর সুফল লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে যে পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়েছে তাতে আলুর কোনো ঘাটতি নেই। পাশাপাশি ভারত থেকেও আলু আমদানি করা হচ্ছে। তারপরও কয়েকদিনের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর দাম ৮-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ভরা মৌসুমে আলুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
আলু নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি জনপ্রিয় পণ্য যেটি সব ধরণের তরকারি রান্নায় প্রয়োজন হয়। কিন্তু আলুর বাড়তি দামের কারণে ভোক্তাদেরকে চাহিদার পরিমাণ কমিয়ে কিনতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রামের রেয়াজউদ্দিন বাজারে আগে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৫০ ট্রাক আলু আসতো, এখন সেখানে আসছে ২০ ট্রাক আলু। ইচ্ছে করেই সরবরাহ কমিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর ফলে লাভবান হচ্ছে আলু সিন্ডিকেট। যারা সবসময় কারসাজির মাধ্যমে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করে তারা আবারো সক্রিয় হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ অবস্থায় দেশের সকল হিমাগারগুলোতে আগামী একমাস আলু উত্তোলন বন্ধ রাখার দাবী জানান তিনি। হিমায়িতের নামে বাজারে যাতে আলুর সরবরাহের ঘাটতি সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য সকল সংস্থার প্রতিও আহবান জানান সুজন।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে প্রতি কেজি আলুতে ৮-১০টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আলুর বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে বলেও মনে করেন তিনি। এমনিতেই রমজান মাসে সংসারের খরচ অনেক বেশি। তার ওপর ঊর্ধ্বমুখী আলুর দাম সাধারণ মানুষদের জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘা অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আমরা মনে করি সরকারের নানাবিধ শুভ উদ্যোগকে পিছন থেকে ছুরিকাঘাত করার ষড়যন্ত্র চলছে। সে ষড়যন্ত্র নস্যাত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এখনই করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
সুজন বলেন, রমজানের শুরু থেকেই ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তে শুরু করেছে। সরবরাহ কমিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। অথচ দাম বেশি দিলে সেক্ষেত্রে ঠিকই সংশ্লিষ্ট পণ্যের দেখা মিলে। কিন্তু বাজারে যদি সত্যিকার অর্থে পণ্যের সংকট থাকতো তাহলে বেশি দাম দিলেও পণ্য পাওয়ার কথা নয়। এভাবে দিনের পর দিন ভোক্তাদের ঠকিয়ে অতিরিক্ত দাম আদায় করা হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফালোভী কর্মকাণ্ড এবং মূল্যবৃদ্ধির সিন্ডিকেট যেকোন পণ্যের অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
দেখা যাচ্ছে যে, রমজানকে কেন্দ্র করে অহেতুক ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের খাবারের পাতে ব্রয়লার মুরগি নামক যে আমিষটি এতোদিন ছিল সেটিও সিন্ডিকেটের কারণে ধীরে ধীরে উঠে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
তাই বাজারের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে অতিসত্বর ভারত থেকে সরাসরি ব্রয়লার মুরগি আমদানির সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন খোরশেদ আলম সুজন।