চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে শেখ রাসেল শিশু পার্ক। সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন স্থানীয় উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে নির্মিত এই পার্ক উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ নোমান আল-মাহমুদ ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম।
উদ্বোধনকালে নোমান আল মাহমুদ এমপি, বলেন, পাঠদানের মধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে যেসব চর্চার প্রয়োজন তা নিশ্চিত করতে হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কিন্তু এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুধু শিক্ষার্থীদের পাঠদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। শারীরিক ও মানসিক বিকাশ তথা সৃজনশীল কার্যক্রমের কোনো সুযোগ নেই। দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেই নিজস্ব কোনো খেলার মাঠ। বিশেষ করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠের অভাব চোখে পড়ার মতো। সুস্থ, সুন্দর ও আনন্দময় জীবনের জন্য খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। এর জন্য প্রয়োজন ভালো পরিবেশ। বালক, কিশোর ও তরুণদের খেলাধুলা চর্চার প্রতি ভালোবাসার কোনো কমতি নেই। তারা খেলাধুলা করতে চায়, অংশ নিতে চায়। কিন্তু তাদের সুযোগ নেই।
এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, শিশুদের মানসিক বিকাশে বিনোদনের বিকল্প নেই, বিনোদনের সুযোগ পেলে শিশুরা বিপথগামী হবে না। মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ থেকে বিরত থাকবে। এই শেখ রাসেল শিশু বিনোদন পার্ক হতে পারে সারা দেশের মডেল।
তিনি আরও বলেন, ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার পরিসর। এটা ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর। মাঠের অভাবে শিশুদের সুষ্ঠু মানসিক বিকাশ হচ্ছে না। শহরে-মফস্বলে গড়ে উঠছে বিভিন্ন কিশোর গ্যাং। তারা মাদক, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। মাঠ না থাকার কারণে সিংহভাগ শিশু-কিশোর বড় হচ্ছে চার দেয়ালে, সেলফোনের স্ক্রিনে আবদ্ধ থেকে। এতে যেমন তাদের পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ হচ্ছে না, তেমনি অল্প বয়সেই চোখের সমস্যা, স্থূলতাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিটি শিশুকে দিনে অন্তত ১ ঘণ্টা বাইরে খেলাধুলা করার পরামর্শ দিচ্ছে। জাতিসংঘের শিশু সনদে বলা হয়েছে, শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ রক্ষা ও সৃষ্টি করা, জাতীয় শিশুনীতি ও শিক্ষানীতিতেও শিশুর বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে| অথচ বাস্তবে সুযোগ সৃষ্টি তো হচ্ছেই না। যেটুকু সুযোগ আছে, তাও রক্ষা করা যাচ্ছে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য বোরহান উদ্দিন মো. এমরান, ভাইস- চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সেলিম, পৌর মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর, ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ, রাজনীতিবীদ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।