ভারতে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের পর্দা উঠছে আজ। অপেক্ষায় দশ ভেন্যু। উত্তরে ধর্মশালা, দক্ষিণে চেন্নাই। পূর্বে কলকাতা থেকে পশ্চিমের আহমেদাবাদ তৈরি। ৪৮ ম্যাচ, ৪৬ দিন, দশ দেশ ট্রফি মাত্র একটা। দীর্ঘ এক যুগ পর এ আয়োজনের সুযোগ পাওয়ায় ভারতজুড়ে বইছে অন্যরকম এক উন্মাদনা। দেশটি এর আগে সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১১ সালে। সেবার ঘরের মাঠে শিরোপা জিতেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। এবার মোড়ল দেশটির ব্যাটন রোহিত শর্মার কাঁধে। ক্রিকেটপাগল জাতি হিসেবে বিশ্বকাপ জ্বরে কাঁপছে গোটা ভারত। যার শুরুটা হচ্ছে শেষ বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের লড়াই দিয়ে। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায়।
প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ মঞ্চে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতি। সেখান থেকে সেরা চার দল খেলবে সেমিফাইনালে। রিজার্ভ ডে থাকছে শুধু নক আউট পর্বে। বিশ্বকাপের রঙ হারিয়েছে বাছাই পর্বে, দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজর বিদায়ে। নেই নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলা জিম্বাবুয়েও। বাছাই পর্বের চমক নেদারল্যান্ডস।
হট ফেভারিট ভারত ও ইংল্যান্ড, কিন্তু স্পটলাইট থাকবে অস্ট্রেলিয়ার ওপর। হ্যাটট্রিক শিরোপাসহ ৫ বারের বিশ্বসেরা যে অজিরা। অবশ্য ঘরের মাঠের সুবিধা আর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে হট ফেভারিট ভারত। সাবেক ক্রিকেটার থেকে বিশেষজ্ঞরা তৃতীয় ট্রফি দেখছেন স্বাগতিকদের ঘরে।
১৪২ কোটি মানুষের দেশ ভারত, সঙ্গে দর্শকপ্রিয়তার তুঙ্গে বলেই যেকোনও বারের তুলনায় আগ্রহ, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ বাড়িয়েছে এবারের আসরে। সে তুলনায় অবশ্য বাড়েনি প্রাইজমানি। আগের আসরের সমান ১০ মিলিয়ন ডলার এবারও। টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ১১০ কোটি। যেখানে চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৪০ কোটির বেশি। রানার্সআপ পাবে এর অর্ধেক।
বিশ্বকাপ ডামাডোলে সমালোচনাও কম নয়। যেখানে আসর শুরুর এক বছর আগেই চূড়ান্ত সূচি ঘোষণা করে আয়োজকরা সেখানে ভারত প্রকাশ করেছে মাত্র ১০০ দিন আগে।
একাধিকবার সূচি বদলেও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে আয়োজক বিসিসিআই। ৭ বছর পর ভারতে পা রেখেছে পাকিস্তান। সেখানেও ভিসা জটিলতা এড়াতে পারেনি। যে কারণে ম্যান ইন গ্রীনদের প্রস্তুতিতেও ছিলে ঘাটতি। অসন্তোষ ছিলে অনলাইন টিকিট বিক্রির প্রক্রিয়া নিয়ে। বিশ্বকাপজুড়ে ভ্রমণ ক্লান্তি নিয়েও আলাদা করে ভাবতে হচ্ছে দলগুলোর কোচিং স্টাফদের।
ফাইনাল আর চির বৈরিতার ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের ভেন্যুও এক আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। পাকিস্তান শেষ চারে টিকে থাকলে ফিরতে হবে কলকাতায়। ভারতের ক্ষেত্রে ভেন্যু হবে মুম্বাই। আর দুই দল সেমিতে মুখোমুখি হলে দেখা হবে সিটি অব জয়ে। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স সাক্ষী হবে সেই ম্যাচের।
সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের গতিপথ নির্ধারণ হতে পারে এবারের বিশ্বকাপে।